মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কাজ করার সময় তাদের মধ্যে রোমান্স শুরু হয়। নারীটি তার বান্ধবীদের সাথে বাইরে কফি খেতে যাওয়ার জন্য পুরুষটিকে আমন্ত্রণ জানান। পুরুষটি তাকে লাঞ্চে নিয়ে যান। তারপর ডিনার এবং নয়া দিল্লির লোধি পার্কে হাঁটাহাঁটি। তারপর ১৮ মাস ধরে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক চলে।
কিন্তু গোল বাধে গত বছর। পুরুষটি অর্থাৎ পবন গুপ্তর বয়স ২৪ পূর্ণ হওয়ার পর তার বাবা-মা তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দেন। তারা তাকে পরিচয় করিয়ে দেন এক নারীর সাথে। সে নারীকে পছন্দ হয় তার। তখন পবন তার মেয়ে বন্ধুর সাথে সম্পর্ক বন্ধ করে দেন এই বলে যে, তিনি তার বাবা-মার মনে কষ্ট দিতে পারবেন না। পবন বলেন, আমি মেয়েটিকে পছন্দ করতাম, কিন্তু তার সাথে বাকি জীবন কাটাতে চাইনি। আমি সব সময় তাকে বলেছি যে, আমি বাবা-মার একমাত্র ছেলে, আমাকে তাদের পছন্দ মতই চলতে হবে।
মার্চে গুপ্ত যখন বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন জইন নামের নারীটি দিল্লি পুলিশের কাছে যান। তিনি তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। জইন বলেন, শুধুমাত্র বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়ার কারণেই তিনি পবনের সাথে মিশেছেন। যেহেতু তিনি তাকে বিয়ে করেননি তাই মিথ্যা কথা বলে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের যে সম্মতি নিয়েছেন তা যৌন ধর্ষণ।
গুপ্তের কথা যে, এমনকি আমি যদি তাকে মিথ্যা কথাও বলে থাকি এবং তাকে বলি যে আমি তাকে বিয়ে করব, তবুও তা যৌন ধর্ষণ হয় না। তার প্রশ্ন, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দু’জনের সম্মতিক্রমে দৈহিক সম্পর্ক কি ধর্ষণ হতে পারে?
এ বছরের জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে কোনো সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলে এবং যে কোনো কারণেই হোক পুরুষ যদি নারীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে, সেক্ষেত্রে সম্মতি ক্রমে যৌন সম্পর্ক ধর্ষণ বলে গণ্য হবে না। বিচারকরা বলেন, দুইয়ের মধ্যে সুস্পষ্ট ভেদরেখা টানতে হবে। কিন্তু রায়টি গুপ্তের সাহায্যে আসেনি। তার জীবন ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে জইন ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন এ কথা শোনার এক সপ্তাহ পর তার মা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কয়েকদিন পর তিনি মারা যান। তার ফিয়াঁসে তার সাথে বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন। তিনি চাকরি হারিয়েছে। জইন সব সময় মামলার শুনানিতে উপস্থিত না হওয়ায় মামলা দীর্ঘায়িত হচ্ছে।
ভারতে অদ্ভুত কিছু চলছে। নারীরা অধিক শিক্ষিত ও আত্মবিশ্বাসী হচ্ছেন। অন্যদিকে বিবাহ পূর্ব যৌন মিলন বাড়ছে। স্টেআংকল নামের একটি হোটেল চেইন কোথাও গিয়ে দৈহিক মিলনে লিপ্ত হতে চায় এমন যুগলদের এক বা দু ঘন্টার জন্য রুম ভাড়া দেয়। এর পাশাপাশি বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগের সংখ্যা বাড়ছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য মতে, ২০১৬ সালে ভারতে মোট ৩৮ হাজার ৯৪৭টি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় এক চতুর্থাংশ ১০ হাজার ৬৮টি মামলায় মহিলারা বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন।
আইনজীবী বিনয় শর্মা বলেন, যখন কোনো সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় তখন যে নারীরা সম্মতিসূচক যৌন সম্পর্ক করেছিলেন তারা প্রতিশোধ নেয়ার জন্য পুরুষটির ক্ষতি করতে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের মিথ্যা মামলা করেন। অথবা তারা টাকা আদায় করতে মামলা করেন। বলেন যে তারা যা চাইছে তা দিয়ে দিলে মামলা প্রত্যাহার করা হবে।
অনেক মামলায়ই দেখা যায়, বাবা-মা অবিবাহিত মেয়ের যৌন সম্পর্কের লজ্জা চাপা দিতে ধর্ষণের মিথ্যা মামলা করেছেন। ২০১৫ সালে সাংবাদিক রুকমিনি শ্রীনিবাসন ‘হিন্দু’ পত্রিকায় কাজ করার সময় যে গবেষণা করেন তাতে দেখা যায় যে বাবা-মা যখন তাদের অবিবাহিত মেয়েকে যৌন সম্পর্কে জড়িত দেখতে পান তখন পরিবারের সুনাম নষ্ট হওয়ার ভয় তাদের চেপে ধরে এবং অনেকেই ধর্ষণের বানোয়াট অভিযোগে মামলা করেন। তাদের যুক্তি হচ্ছে, কোনো মেয়ে ধর্ষিতা হয়েছে এটা বললে লোকে মনে করবে যে সে যৌন কর্মে জড়িত। শ্রীনিবাসন মুম্বাইয়ে এ ধরনের যে সব চার্জশিট পরীক্ষা করেছেন তাতে একই প্যাটার্ন লক্ষ করা গেছে। সব সময় ঘটনা একই রকমঃ ভিকটিমকে একটি চলন্ত গাড়িতে তুলে নেয়া হয়, তাকে অচেতন করার জন্য ঘুমের ওষুধ মেশানো পানীয় খাওয়ানো হয়, তারপর ধর্ষণ করা হয়। ঘুমের ওষুধ মেশানো পানীয় খাওয়ানোর ঘটনার পুনরাবৃত্তি গুরুত্বপূর্ণ। শ্রীনিবাসন বলেন, এ অভিযোগ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মেয়েটির সুনাম রক্ষার্থে এটা দেখানো দরকার যে তার সম্মতি ছিল না।
পুরষ অধিকার গ্রুপ ও কিছু আইনজীবী মনে করেন যে সম্মতিক্রমে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পর নারীদের এই মিথ্যা অভিযোগের কারণে ধর্ষণের প্রকৃত গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে। আরো সমস্যা হল কোনো পুরুষ যদি বিয়ের প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে সেজন্য তাকে ধর্ষণের মামলায় ফেলা, কারণ ভারতীয় দন্ডবিধিতে বিয়ের প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করা বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তির একমাত্র সান্ত¡না এই যে মিথ্যা অভিযোগের বহু মামলাই আদালতের বাইরে ছুড়ে ফেলা হয়। উদাহরণ স্বরূপ জানুয়ারিতে মহারাষ্ট্রের এক সরকারী হাসপাতালের নার্সের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা বলা যায়। বিধবা ঐ নার্স এক ডাক্তারের প্রেমে পড়েন। কয়েক বছর তারা এক সাথে থাকার পর ডাক্তার নার্সকে ছেড়ে এক নারীকে বিয়ে করেন। বিচারক বলেন, ঐ ডাক্তারের সাথে কয়েক বছর থাকার সময় নার্স কোনো ধর্ষণের অভিযোগ করেননি। তারা উল্লেখ করেন, এমন হতে পারে যে ডাক্তার পরিস্থিতির কারণে তা উপেক্ষা করতে বা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি, তিনি তাকে বিয়ে করতে সক্ষম ছিলেন না। কারণ যাই হোক, এটা ধর্ষণ নয়। ডাক্তার মুক্তি পান।
ব্যাঙ্গালোরের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বিবেক দেবেশ^র একটি পুরুষ অধিকার গ্রুপ পরিচালনা করেন। তার বিশ্বাস যেসব বাবা-মা ভিকটিমের পরিচয় প্রকাশ পাবে না এ বিশ্বাসে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় উৎসাহিত হন। পরিণতিতে কোনো সামাজিক বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না। তিনি বলেন, আমি মনে করি বিচার শেষ ও রায় না হওয়া পর্যন্ত পুরুষ ভিক্টিমের নামও গোপন রাখা উচিত ও প্রকাশ পাওয়া উচিত নয়। এটা নিরাপরাধ মানুষের জীবনে বিরাট যন্ত্রণার কারণ হয়। তাকে অনেক মূল্য দিতে হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।