Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কলাপাড়ায় আওয়ামি লীগের অভ্যন্তরীন কোন্দলে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজনৈতিক মাঠ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০১৯, ৭:৪১ পিএম | আপডেট : ৮:২৩ পিএম, ৯ জুন, ২০১৯

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ক্রমশ: উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মাঠ। সংঘর্ষ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক ইউনিয়নের হ্যান্ডলিং অফিস সহ মোটর সাইকেল ভাঙচুর, সশস্ত্র¿ মোটরসাইকেল মহড়া এবং শো-ডাউন মিছিলে ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের মাঝে। রবিবার দুপুর ১২ টার দিকে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ পৌরশহরের নতুন বাজার এলাকায় স্থানীয় সাংসদ মো.মহিববুর রহমান মহিবের পক্ষে একটি মিছিল বের করে তাঁর পক্ষে স্লোগান দেয়। এদিকে যে কোন সময় ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকায় শহর জুড়ে বিরাজ করছে থম থমে অবস্থা। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা গেছে, রবিবার বেলা ১১ টার দিকে শেখ কামাল সেতুর তলদেশে হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়ন, কলাপাড়া পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তারেকুজ্জামন তারেকের অফিস সহ দেলোয়ার খানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হামলা ও ভাংচুর করা হয়। এসময় মোটর সাইকেল ভাঙচুর চালায়। এছাড়া মহিপুর থানা যুবলীগ ও ইউনিয়ন যুবলীগ অফিসের সাইবোড, ফেস্টুন ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে। এদিকে শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে পৌরশহরের কলেজ রোড এলাকায় ছাত্রলীগ সভাপতি পদ প্রত্যাশী আসাদুজ্জামান শুভ (২৮) নামের এক ছাত্রলীগ নেতা গুরুতর জখম হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা যায়, ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে সংসদ সদস্য মো. মহিবুর রহমান মহিব, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম রাকিবুল আহসান ও পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদারের অনুসারীরা বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, সজীব ওয়াজেদ জয়’র ছবির সাথে নিজেদের ও তাদের পছন্দের নেতার ছবি ব্যবহার করে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থান গুলোতে ডিজিটাল ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, বিলবোর্ড, ফেস্টুন প্রদর্শন করে। ওইসব ডিজিটাল ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, বিলবোর্ড, ফেস্টুন কেটে-ছিড়ে নষ্ট করে ফেলে। এ ঘটনায় শনিবার কলাপাড়া থানায় দুটি পৃথক লিখিত অভিযোগ করেছে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস.এম রাকিবুল আহসান ও পৌর মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার।
কলাপাড়া পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি ও মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় একমকি থানার সামনে রাস্তায় গত ৬ জুন দিবাগত রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও ছবির সম্বলিত দিয়ে ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে ফেস্টুন, বিলবোর্ড রাতে আধারে একদল সন্ত্রাসী গ্রুপ ছিলে ফেলে এবং নষ্ট করে ফেলে। এ ঘটনায় কলাপাড়া থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম রাকিবুল আহসান বলেন, ’গত ৬ জুন দিবাগত রাতে জাতির পিতা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয় ও আমার ছবি সংবলিত ঈদ শুভেচ্ছা যুক্ত শতাধিক ডিজিটাল ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড উৎপাটন এবং ধারালো চাকু দিয়ে কাটা ছেড়া করে নষ্ট করা হয়েছে।’
রাকিবুল আহসান আরও বলেন, ’জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর জনৈক ব্যক্তির মাধ্যমে দলের মধ্যে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, টোকাইদের অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে। যারা দেলোয়ার খানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মোটর সাইকেল, চাকামইয়া ব্রীজ এলাকার একটি দোকান ঘর সহ হ্যান্ডলিং শ্রমিকলীগ অফিস ভাঙচুর করেছে। এসকল অনুপ্রবেশকারীদের কারণে দলের মধ্যে ঐক্য ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট হওয়া সহ আইন শৃঙ্খলার আরও অবনতি হতে পারে। ’
এমবি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি জিয়াউর রহমান বলেন, ’এমপি মহোদয়ের ছবি যুক্ত ঈদ শুভেচ্ছার ফেস্টুন, বিলবোর্ড, ব্যানার কে বা কারা ছিড়ে নষ্ট করেছে। এজন্য থানায় জিডি করা হয়েছে।’ এর প্রতিবাদে কলাপাড়া সাধারণ মানুষ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
কলাপাড়া থানার ওসি মো.মনিরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে এসব ঘটনার আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ