Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নীল নদে রক্তধারা নিহত শতাধিক

গৃহযুদ্ধের পথে সুদান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৯, ১২:০৪ এএম


ওমর আল বশির ক্ষমতাচ্যুত হবার পর এ সপ্তাহে সুদানে সবচেয়ে সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে। দেশটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গত কয়েকদিনে ৬০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হবার পর আফ্রিকান ইউনিয়ন সুদানের সদস্যপদ সাময়িকভাবে বাতিল করেছে। ইউনিয়ন বলছে, বেসামরিক নেতৃত্বাধীন একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠন না করা পর্যন্ত সুদানকে ইউনিয়ন থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং এটাই এ সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ। রাজধানী খার্তুমে কয়েকদিন ধরে চলা বিক্ষোভে ৬১ জন নিহত হয়েছে বলে সরকার বলছে, তবে বিক্ষোভকারীদের সাথে সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররা বলছেন নিহতের সংখ্যা শতাধিক।

গত কয়েকদিনে সুদানে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণে ব্যাপক হতাহতের খবর আসতে থাকলেও কর্তৃপক্ষ তেমন কিছু বলেনি। গত বুধবার জানা যায় যে নিহতের সংখ্যা শতাধিক এবং খার্তুম শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নীলনদ থেকে বহু লাশ তোলা হচ্ছে। রয়টার্স ও আল জাজিরার রিপোর্টে বলা হয়েছে রাজধানীর রাস্তায় রাস্তায় শুরু হয়েছে সেনা-জনতার সংঘর্ষ প্রতি মুহ‚র্তে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। সুদানের কেন্দ্রীয় চিকিৎসক কমিটি ইতিমধ্যেই ১০৮ জনের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছে। তাদের দাবি, নীল নদের পানিতে আরও লাশ ভাসতে দেখা গেছে। তবে আরএসএফ বাহিনীর নেতা ও ক্ষমতাসীন ট্রানজিশনাল মিলিটারি কাউন্সিলের (টিএমসি) চেয়ারম্যান লে. জেনারেল মহম্মদ হামদান এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি ওই দমননীতিকে সমর্থন করে বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দুর্বৃত্ত এবং মাদক ব্যবসায়ীরা ঢুকে পড়েছে এবং তারা বিশৃঙ্খলা সহ্য করবেন না।

এসএফ নামের আধাসামরিক বাহিনীর লোকেরা, যাদের আগে জাঞ্জাওয়িদ মিলিশিয়া বলা হতো, প্রায় জনশূন্য রাজধানীর রাস্তাগুলোতে টহল দিচ্ছে এবং বেসামরিক লোকজনকে আক্রমণ করছে। সুদানের সামরিক কাউন্সিল বিক্ষোভকারীদের প্রতি আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন কিন্তু বিরোধীদলীয় কর্মীরা তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলছে, কর্তৃপক্ষ যেরকম সহিংস উপায়ে বিক্ষোভকারীদের দমন করার পথ নিয়েছে তাতে তারা এই সামরিক কাউন্সিলকে আর বিশ্বাস করতে পারছে না।
শহরের বাসিন্দারা বলেছেন, তারা আতঙ্কিত অবস্থায় রাজধানীতে বাস করছেন। হাসপাতালগুলোর ডাক্তার ও নার্সরাও ভয়ে কাজ করতে আসছেন না। এরই মধ্যে আফ্রিকান ইউনিয়ন বলেছে, যতদিন বেসামরিক নেতৃত্বাধীন একটি অন্তবর্তী প্রশাসন গঠন না করা হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত সুদানকে ইউনিয়ন থেকে সাসপেন্ড করাসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন অবিলম্বে হত্যাকান্ডগুলোর তদন্তেরও দাবি জানিয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে বিক্ষোভ এবং সেনা-অভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির ক্ষমতাচ্যুত হবার পর জেনারেল আবদুল ফাত্তাহ আল-বুরহান হচ্ছেন দ্বিতীয় সামরিক প্রশাসক। তার সাথে এর আগে বিক্ষোভকারীদের এক সমঝোতা হয়েছিল যে তিন বছরের একটি অন্তর্র্বর্তী সময় পার হবার পর সুদানে নির্বাচন হবে। কিন্তু পরে জেনারেল বুরহান সে চুক্তি ভেঙে দিয়ে বলেন যে ৯ মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে। একে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহ ধরেই সুদানের পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠেছিল। সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ