Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিদেশি সন্দেহে গ্রেফতার ভারতীয় সাবেক সেনার জামিন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

জামিন পেলেন অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনাসদস্য মোহাম্মদ সানাউল্লাহর। গতকাল শুক্রবার আসামের গৌহাটি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তার জামিন মঞ্জুর করেছেন। আজ (শনিবার) তিনি গোয়ালপাড়া জেলের বিদেশি বন্দীশালা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। প্রসঙ্গত, তিন দশক ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি করার পর আসামের বর্ডার পুলিশে সাব ইন্সপেক্টর পদে নিযুক্ত মোহাম্মদ সানাউল্লাহকে ২৮ মে বিদেশি বলে শনাক্ত করেন ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বিচারক। তারপর থেকেই তিনি জেলবন্দী।
টানা ৩০ বছর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছেন সানাউল্লাহ। ছিলেন কারগিল যুদ্ধে। মণিপুরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানেও যুক্ত ছিলেন তিনি। সাম্মানিক ক্যাপ্টেন পদে উন্নীতও হন নিজের কর্মদক্ষতায়। ভারতের প্রেসিডেন্ট পদকপ্রাপ্ত এই সেনাসদস্য অবসরের পর কর্মরত ছিলেন আসামের বর্ডার পুলিশে। কিন্তু ২০০৮ সালে তাকেই বলা হয় ‘বিদেশি’। চলতি বছরের ২৮ মে বিদেশি ট্রাইব্যুনালও তাকে ‘বিদেশি’ বলে শনাক্ত করে পাঠিয়ে দেন গোয়ালপাড়া বন্দীশালায়। বন্দিদশায় খোয়ান নিজের সরকারি চাকরিও।
এ ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় ওঠে গোটা ভারতে। সানাউল্লাহর বিরুদ্ধে সেই সময় বিদেশি বলে অভিযোগ করেছিলেন আসামের বর্ডার পুলিশের এসআই চন্দ্রমল দাস। তাকেও গ্রেপ্তার করার দাবি তুলেছেন রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। তার ছেলে তথা সদ্য নির্বাচিত লোকসভার কংগ্রেসি সদস্য গৌরব গগৈ ভারতের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে চিঠি দিয়ে অবিলম্বে সানাউল্লাহর মুক্তির দাবি তোলেন। গৌরবের অভিযোগ, আসামের ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নামের পাশে বিদেশি তকমা লাগিয়ে দেয়ার চক্রান্ত চলছে। এনআরসি ও বিদেশি ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়াও।
পাশাপাশি শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া। গৌহাটি হাইকোর্টে বিচারপতি মনোজিত ভূইঞা ও বিচারপতি প্রশান্ত কুমার ডেকার ডিভিশন বেঞ্চে এদিন বিষয়টি উত্থাপন করেন দুই সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইন্দিরা জয়সিং ও হাফিজ চৌধুরি। আদালত তাদের আবেদনের ভিত্তিতে গতকাল জামিন মঞ্জুর করেন। তবে রায়ের কপি হাতে না আসায় এদিন সানাউল্লাহর মুক্তির আশা নেই। আজই মুক্তি পাবেন তিনি।’ সেই সঙ্গে তিনি জানান, সানাউল্লাহর গ্রেফতারের বিষয়ে আদালত আসাম সরকারের পাশাপাশি ভারত সরকার ও এনআরসি কর্তাদের কাছেও নোটিশ জারি করেছেন।
সানাউল্লাহ জামিন পেলেও আসাম রাজ্য নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতির উপদেষ্টা হাফিজ চৌধুরীর মতে, আসামে বহু সংখ্যালঘু ব্যক্তি সরকারি নীতির কারণে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ না করতে পেরে বন্দিদশা ভোগ করছেন। ভারতীয় হয়েও উপযুক্ত নথিপত্রের অভাবে তাদের জীবনে সর্বনাশ ঘনিয়ে আসছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
প্রসঙ্গত, আসামে ৩ কোটি ২৯ লাখ আবেদনকারীর মধ্যে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জনের নাম বাদ পড়েছে এনআরসির খসড়া তালিকায়। বর্তমানে সংযোজন প্রক্রিয়া চলছে। চ‚ড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে ৩১ জুলাই। সূত্র : ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ