নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ম্যাচের আগে কোচের কণ্ঠে হতাশা, ‘গত সাত বছরে সেমিফাইনাল জয়ের বিশ্ব রেকর্ডধারী হলাম আমি- এ নিয়ে আমি একটা বইও লিখতে পারি, কিন্তু সেই বই কেউ পড়বে না।’
লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গুন ক্লপের এই হতাশা পরশু ম্যাচ শেষে রূপ নিয়েছে উচ্ছ্বাসের তীব্রমধুর বেদনায়। টটেনহাম হটস্পারকে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছে লিভারপুল। ১৪ বছর পর আবার ইউরোপা সেরার মুকুট উঠেছে ‘রেড ডেভিল’ খ্যাত দলটির মাথায়।
শনিবার রাতে মাদ্রিদের ওয়ান্দা মোত্রাপলিতানোয় শিরোপার লড়াইয়ে মাউরিসিও পচেত্তিনোর দলকে ২-০ গোলে হারায় ক্লপের লিভারপুল। প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দ্রুততম গোল করের দলকে এগিয়ে নেন মোহাম্মাদ সালাহ। আর শেষ দিকে ব্যবধান বাড়ান তরুণ স্ট্রাইকার ডিভক ওরিগি। ইউরোপিয়ান শীর্ষ প্রতিযোগিতায় এটি তাদের ষষ্ঠ শিরোপা। ২০০৪-০৫ আসরে আগের শিরোপাটি জিতেছিল তারা। প্রতিযোগিতায় তাদের চেয়ে বেশি শিরোপা কেবল এসি মিলান (৭) ও রিয়াল মাদ্রিদের (১৩)। গত মৌসুমে ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে শিরোপাবঞ্চিত হতে হয়েছিল প্রিমিয়ার লিগের দলটিকে।
কোচিং ক্যারিয়ারে টানা ছয়টি ফাইনাল হারের পর শিরোপার স্বাদ পেলেন ক্লপ। ২০১২ সালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ঘরোয়া ডাবল জেতার পর এই প্রথম কোনো শিরোপা জিতলেন তিনি। লিভারপুলের হয়ে প্রথম শিরোপা জেতা ক্লপ ম্যাচ শেষে বলেন, ‘পেশাদার ক্যারিয়ারে এটা আমাদের সেরা রাত।’ বাস্তববাদী এই কোচ নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এভাবে, ‘আজকের রাতটা সত্যিই অনেক আবেগঘন, তবে আমি যেমনটা ভাবছি বাইরে তার চেয়ে শান্ত আছি। শিরোপা ছুঁয়ে দেখাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়; এটা ছেলেদের হাতে উঠেছে, দর্শক সারিতে কিছু উচ্ছ্বাসিত মুখ চেয়ে আছে- এগুলো দেখতেই আমি ভালোবাসি। আগামীকাল কিছু নিয়ে লিভারপুলে গিয়ে উদযাপন করাটা হবে বিশাল কিছু এবং আমি এর অপেক্ষায় আছি।’ এর আগে দুইবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল এই জার্মানকে। তৃতীয়বারের প্রচেষ্টা সফল হওয়া নিজেও অনেকটা দ্বায়মুক্ত, ‘মনে হচ্ছে নিজেকে দায়মুক্তি দিতে পেরেছি, দায়মুক্তিটা আমার পরিবারের জন্যেও। গত ছয়বার আমরা বিশ্রামে গিয়েছি কেবল সিলভার মেডেল নিয়ে, এটা স্বস্তি এনে দেয় না।’
নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলল টটেনহাম। দলীয় কোচ ঘোষণা দিয়েছিলেন ফাইনাল জিতলে তিনি নতুন কোনো চ্যালেঞ্চ নেবেন। তা না হওয়ায় আর্জেন্টাইন কোচ লন্ডনের দলেই থাকছেন বলা যায়। ম্যাচ শেষে লিভারপুলকে অভিনন্দন জানিয়ে হতাশা ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাখলেন পচেত্তিনো, ‘এটা বেদনাদায়ক। এরপরও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। অবশ্যই এটা কঠিন তবে কয়েক ঘণ্টা পর আমাদের মনে পরিবর্তন আনতে হবে এবং ইতিবাচক থাকতে হবে।’
ইনজুরি কাটিয়ে এদিন শুরুর একাদশে ফেরেন লিভারপুল ফরোয়ার্ড ফিরমিনো ও টটেনহাম স্ট্রাইকার হ্যারি কেন। পরে কেনের বদলি নামেন সেমিফাইনালের নায়ক লুকাস মৌরা। এই প্রথম প্রতিযোগিতার ফাইনালে রেফারিকে কোনো কার্ড বের করতে হয়নি।
ম্যাচের ২৬ সেকেন্ডের মাথায় পেনাল্টি পায় লিভারপুল। ডি বক্সের মধ্য থেকে সাদিও মানের উঁচু করে বাড়ানো বল মুসা সিসোকোর হাতে লাগলে পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। বল স্পার্স মিডফিল্ডারের বুক স্পর্শ করে হাতে লাগলেও রেফারি ভিএআরের সহায়তা নেননি। তা থেকে ১ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের মাথায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে দ্বিতীয় দ্রুততম গোলটি করেন সালাহ। ২০০৫ সালে লিভারপুলের বিপক্ষে এসি মিলানের হয়ে ৫১ সেকেন্ডের মাথায় গোল করেছিলেন পাওলো মালদিনি। একই সাথে প্রথম মিশরীয় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে গোল করার কীর্তি গড়েন সালাহ। প্রতিযোগিতায় চলতি আসরে এটি তার পঞ্চম গোল। ১২ গোল নিয়ে আসরের সর্বোচ্চ গোলদ্বাতা লিওনেল মেসি।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলা ছিল গতিহীন। শেষ দিকে মরিয়া হয়ে ওঠে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলা টটেনহাম। এসময় সন হিউন মিন, লুকাস মৌরা ও ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনকে গোলবঞ্চিত করেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক অলিসন। তার সামনে ভার্গিল ফন ডিক তো ছিলেনই।
৮৭তম মিনিটে ডি বক্সের বাম প্রান্তে সতীর্থের বাড়ানো বল পেয়ে কোনাকুনি শটে ব্যবধান বাড়ান বদলি নামা বেলজিয়ান তরুণ ফরোয়ার্ড ওরিগি। গ্যালারিতে তখন লিভারপুলের শিরোপা জয়ের আনন্দ আর ডাগআউটে ক্লপের চোখেমুখে স্বপ্নপূরণের উচ্ছ্বাস।
শেষ ১০ বারের বিজয়ী
মৌসুম চ্যাম্পিয়ন
২০১৮-১৯ লিভারপুল
২০১৭-১৮ রিয়াল মাদ্রিদ
২০১৬-১৭ রিয়াল মাদ্রিদ
২০১৫-১৬ রিয়াল মাদ্রিদ
২০১৪-১৫ বার্সেলোনা
২০১৩-১৪ রিয়াল মাদ্রিদ
২০১২-১৩ বায়ার্ন মিউনিখ
২০১১-১২ চেলসি
২০১০-১১ বার্সেলোনা
২০০৯-১০ ইন্টার মিলান
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।