Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কচুশাক বিক্রেতা মন্ত্রী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

একসময় দুমুঠো ভাতের জোগান দিতে তিনি জঙ্গল থেকে কচু এবং ঢেঁকি শাক তুলে আনতেন। সেই শাক বাজারে বিক্রি করে যে দুচার পয়সা পেতেন সেটা দিয়েই জীবন নির্বাহ হতো পরিবারের। সবাইকে চমক দেখিয়ে এবার নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়েছে তার। নাম রামেশ্বর তেলি।

রামেশ্বর আসামের ডিব্রুগড়ের বাসিন্দা। গত বৃহস্পতিবার ভারতে মোদি সরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। শপথের পরপরই রামেশ্বর তেলির শৈশবের নিদারুণ কষ্টের দিনগুলোর স্মৃতি উঠে এসেছে ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে। তার বাবা ছিলেন চা শ্রমিক। ডিব্রুগড়ের চা বাগানেই দরমার ঘরে ভাই, দুই বোন নিয়ে মোট ৬ জনের পরিবার ছিল তার। বাবার সামান্য বেতনে দুই বেলা ঠিকমতো খাবারও জুটত না তাদের।

রামেশ্বরের বয়স যখন মাত্র ১২ বছর, তখন থেকেই সংসারের খরচ যোগাতে উপার্জন শুরু করেন। তার চেয়ে দুই বছরের ছোট ভাই গুণেশ্বরকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ির আশেপাশের জঙ্গল চষে বেড়াতেন। সঙ্গে করে কচু আর ঢেঁকি শাক নিয়ে ফিরতেন। সেগুলোই বিক্রি করে রুটি কেনার পয়সা জোগাড় করতেন তারা।
বাবার মৃত্যুর পর তাদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। সংসার চালানোর জন্য বাড়ির কাছেই একটি পানের দোকান দিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে যা উপার্জন হতো তাতে সংসার চলতো। একটু একটু করে সেই টাকা জমিয়ে দুই বোনের বিয়েও। কলেজে পড়ার সময় রামেশ্বর আসামের চা জনগোষ্ঠী ছাত্র সংস্থায় (আটসা) যোগ দেন। আটসা নেতা তেলির জনপ্রিয়তা ও নেতাসুলভ গুণ নজরে পড়ে বিজেপি নেতাদের।

২০০১ সালে দুলিয়াজান থেকে বিজেপির বিধায়ক হন রামেশ্বর। ২০০৬ সালেও বিধায়ক হন। তবে ২০১১ সালে হেরে যান। কিন্তু ২০১৪ সালে লোকসভার নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয় লাভ করেন তিনি। কংগ্রেসের পাঁচ বারের সংসদ সদস্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পবনসিংহ ঘাটোয়ারকে এক লাখ ৮৫ হাজার ভোটে হারিয়ে দেশ জুড়েই তাক লাগিয়ে দেন তিনি।

এবারের লোকসভা নির্বাচনে পবনসিংহই ফের তার প্রতিপক্ষ ছিলেন। ২০১৪ থেকে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে তাকে তিন লাখ ৬৪ হাজার ৫৬৬ ভোটে হারিয়েছেন রামেশ্বর। যা আসামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধান। বিপুল জনভোট ও রামেশ্বরের জনপ্রিয়তার জন্যই তাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করেন মোদি। সূত্র : ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ