পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শিল্প স্থাপনের নামে মেঘনা নদীর দখলের মহোৎসব চলছে কয়েক বছরে ধরে। নদী দখলের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে ইনকিলাবে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিআইডবিøটিএ নদী দখলমুক্ত করার অভিযানে নামে। টানা ৬দিন উচ্ছেদ করে মেঘনার তীরে গড়ে ওঠা বসুন্ধরা গ্রæপ, আমান গ্রæপ, আল মোস্তফা গ্রæপ, হোলসিম সিমেন্ট, ইউনিক গ্রæপ, মোনায়েম গ্রæপ, মদিনা সিমেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের অবৈধ দখল করা স্থাপনা। ব্যাতিক্রম শুধু মেঘনা গ্রæপ। ওই প্রতিষ্ঠানটি সোনারগাঁও উপজেলার আষাড়ীয়ার চর এলাকায় মেনীখালী নদীর প্রায় ২ কিলোমিটার নদী ভরাট করে দখল করে নেয়। অথচ রহস্যজনক কারণে মেঘনা গ্রæপের অবৈধ স্থাপনায় হাত দেখা হয়নি। এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলেছেন মেঘনা গ্রæপের অবৈধ দখলকে বিআইডবিøটিএ বৈধতা দেয়ার রহস্য কি? আর সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআইডবিøটিএর কি মেঘনা নদীকে কোনো ব্যাক্তিমালিকানাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দখলে বৈধতা দেয়ার অধিকার রয়েছে? নাকি পর্দার আড়ালে লেনদেনের মতো মহৎ (!) কিছু ঘটে গেছে?
অভিযানগুলো সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হলেও বিতর্কিত করেছে মেঘনা গ্রæপের উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে। ৬ দিন ব্যাপী উচ্ছেদ অভিযানে অদৃশ্য কারনে মেঘনা গ্রæপকে বাচিঁয়ে দিয়েছে বিআডবিøটিএ। সে মেঘনা নদী দখলকারীদের উচ্ছেদে গত ১৯ মে অভিযান শুরু করে ৬ দিনব্যাপী অভিযান চালিয়েছে বিআডবিøওটিএ। গত বুধবার অভিযান শেষ করেছে বিআডবিøটিএ। ৬ দিন ব্যাপী অভিযানের নদী তীরবর্তী শিল্প প্রতিষ্ঠানের দখলকরা নদীর জমিতে ৪র্থ তলা বিল্ডিং, জেটি, বাউন্ডারী ওয়ালসহ বড় বড় স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানে ভরাটকৃত বালু কয়েক কোটি টাকা নিলামে বিক্রির সাথে সাথে উদ্ধার করেছে প্রভাবশালীদের দখলে রাখা নদী তীরবর্তী জমি। প্রভাবশালীরা বিভিন্ন কৌশলে উচ্ছেদ অভিযানকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেও সফল হতে পারে নি। তবে, উচ্ছেদ অভিযানকে যথেষ্ঠ বিতর্কিত করেছে মেঘনা গ্রæপের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে। স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, বিআইবিøওটিএ বিশেষ সুবিধা পেয়ে মেঘনা গ্রæপ উচ্ছেদে অভিযান চালায়নি। সোনারগাঁও উপজেলার আনন্দবাজার এলাকায় মেঘনা নদীর ৭শ’ ফুট গভীরে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মান করে নদী দখল করা হলেও অভিযান পরিচালনা হয়নি। মেঘনা নদী দখলের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ রয়েছে মেঘনা গ্রæপের বিরুদ্ধে। মেঘনা গ্রæপ উপজেলার আষাড়ীয়ার চর এলাকায় মেনীখালী নদীর প্রায় ২ কিলোমিটার নদী ভরাট করলেও এখানেও অভিযান পরিচালনা হয়নি। রহস্যজনক কারনে অভিযানে বাঁচিয়ে দিয়েছে মেঘনা গ্রæপকে। মেঘনার তীরে গড়ে ওঠা বসুন্ধরা গ্রæপ, আমান গ্রæপ, আল মোস্তফা গ্রæপ, হোলসিম সিমেন্ট, ইউনিক গ্রæপ, মোনায়েম গ্রæপ, মদিনা সিমেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের উচ্ছেদ অভিযানগুলো সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হলেও বিতর্কিত করেছে মেঘনা গ্রæপের উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে। ৬ দিন ব্যাপী উচ্ছেদ অভিযানে অদৃশ্য কারনে মেঘনা গ্রæপকে বাচিঁয়ে দিয়েছে বিআডবিøটিএ। সোনারগাঁয়ে মেঘনা নদী ও এর শাখা নদী দখলে শীর্ষে অবস্থান করা মেঘনা গ্রæপের নদী দখলের বিরুদ্ধে কার্যত কোন উচ্ছেদে না গিয়ে বিআইডবিøওটিএ নিজেদের অভিযানকে অনেকটাই বিতর্কিত করেছে বলে মনে করে স্থানীয় এলাকাবাসী। তবে, উচ্ছেদ অভিযানে মেঘনা গ্রæপ ছাড়া কোন প্রভাবশালীরা বিভিন্ন কৌশলে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে এবং তদবির করে সফল হতে পারে নি।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, মেঘনা নদী দখলমুক্ত করার অভিযানে সোনারগাঁবাসী বেজায় খুশি। তবে তাদের দাবি, নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দেয়া হোক এবং নদীকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে দূষন মুক্ত করা হোক। এছাড়াও, পুনরায় যাতে নদী দখল না হয় বিআইডবিøটিএ কে সেদিকে দৃষ্টি দেয়ার দাবিও জানায় এলাকাবাসি।
জানা গেছে, গত ১৯ মে সোনারগাঁয়ের মেঘনা নদীর তীরবর্তী ‘দখল’ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে বিআইডবিøওটিএ। কোথাও স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে আবার কোথাও দখলকারীদের দু’একদিনের মধ্যে নিজেদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার সময়সীমা বেঁধে দেয় বিআইডবিøওটিএ। দেশের প্রভাবশালী কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিজেদের জমির পাশের মেঘনা নদী, নদীর তীরবর্তী খাস ভূমি, সরকারি খাল এবং ফোরশোর ল্যান্ডভুক্ত ভূমিতে বালু ভরাট করে প্রাচীর দিয়ে দখল করায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম অসন্তোষ ছিল দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। দৈনিক ইনকিলাবে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নদী দখলমুক্ত করার অভিযান শুরু করে।
এ নিয়ে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত ১৯ মে অভিযান শুরু করে ছয়দিন অভিযান চালায় বিআইডবিøওটিএ। তবে, গত বৃহস্পতিবার অভিযান পরিচালনা করে চার দিন বিরতির পর গত মঙ্গলবার ও বুধবার অভিযান পরিচালনা করে অভিযান শেষ করে বিআইডবিøওটিএ। মেঘনা গ্রæপের নদী দখল নিয়ে গত ১ মার্চ দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় “সোনারগাঁওয়ে মেঘনা গ্রæপের নদী দখল” শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সংবাদটি প্রকাশের পরই সোনারগাঁয়ের সাধারন জনগন, পরিবেশবাদী ও বিভিন্ন সংগঠন থেকে মেঘনা গ্রæপের নদী উচ্ছেদের দাবি উঠে। কিন্তু বিআডবিøওটিএ ব্যাপক প্রশংসিত অভিযান পরিচালনা করলেও মেঘনা গ্রæপের বিরুদ্ধে অভিযান না পরিচালনা করে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়।
জানা গেছে, খর স্রোতা বহমান মেঘনা নদী ব্যাপকভাবে দখল করেছে মেঘনা গ্রæপ। সোনারগাঁও উপজেলার বিভিন্ন মৌজায় এবং বিভিন্ন এলাকায় মেঘনা গ্রæপের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্যাপকভাবে নদী দখল করে। অভিযোগ রয়েছে, নদী দখলের পাশাপাশি ভুয়া দলিলে সাধারণ মানুষের জমিও দখল করে নেয় মেঘনা গ্রæপ। উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী বিভিন্ন পয়েন্ট চর রমজান সোনাউল্লাহ, আষাড়িয়ার চর, চর লাউয়াদী, পূর্ব দামোদরদী, নরসুলদী ও নয়াপাড়া মৌজায় মেঘনা নদী দখল করে মেঘনা গ্রæপ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। মেঘনা নদীর কোনো কোনো অংশে পাঁচশ ফুট আবার কোনো অংশে সাতশ’ ফুট নদী দখল করেছে মেঘনা গ্রæপ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মেঘনা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে নদী, ঘরবাড়ি, খাস সম্পত্তি, শাখা নদী, সরকারি খাল সবই সমান তালে দখল করেছে মেঘনা গ্রæপ। উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের আনন্দবাজার সংলগ্ন পূর্ব দামোদরদী, নরসুলদী ও নয়াপাড়া মৌজার মেঘনা নদীর প্রায় ৫০ একর জমি দখল করে নিয়েছে মেঘনা গ্রæপ। নদীগর্ভের প্রায় ৭০০ ফুট দখলে নিয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। মেঘনা গ্রæপের দখলের কারণে নদীর গতিপথ অনেকটা বদলে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আনন্দ বাজারে মেঘনা গ্রæপের বর্জ্যরে কারণে মেঘনা নদীর পানি প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে। যার জন্য ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে নদীর পানি। ফলে বসনদরদী, দামোদরদী, খামারগাঁও, মামলুতপুর, টেঙ্গারচর, খংসারদী, দামোদরদী ও মোবারকপুর এলাকার লোকজন রান্নাবান্না ও গৃহস্থালি কাজে পানির সঙ্কটে পড়েছেন। নদীর পানি দূষিত হওয়ায় সোনারগাঁও এলাকায় মাছের প্রজনন ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গায়ের জোরে মানুষের বসতবাড়ি ও খাসজমি এবং সরকারি খালও দখল করছে মেঘনা গ্রæপ।
এদিকে, সোনারগাঁয়ের মেঘনা লঞ্চ ঘাট, ঝাউচর, প্রতাপের চর ও কাদিরগঞ্জ এলাকায় মেঘনা গ্রæপ বিশাল পরিমান নদী দখল করেছে এবং বর্তমানেও নদী দখল করে যাচ্ছে। উপজেলার গঙ্গানগর এলাকায় পাওয়ার প্লান্ট এলাকায়ও বিশাল পরিমান নদী দখল করেছে মেঘনা গ্রুপ। আষাড়িয়ার চর এলাকায় মেঘনা নদী ও মেনী খালী নদীর প্রায় ২ কিলোমিটার নদী ও নদী তীরবর্তী জমি বালু দিয়ে ভরাট করে দখলে নিয়েছে মেঘনা গ্রæপ। বর্তমানে বুঝার উপায় নেয় এখানে কোন সময় বহমান নদী ছিলো।
জানা গেছে, নদী ও সরকারি খাস সম্পত্তি দখলের প্রতিবাদে বছর খানেক আগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি, কয়েকবছর আগে মেঘনা নদীর সাতশ’ ফুট দখল ও নদী তীরবর্তী জমি বেআইনিভাবে ভরাট ও ভূমি উন্নয়ন কাজ করার অভিযোগে মেঘনা গ্রæপকে জরিমানাও করেছিলো পরিবেশ অধিদফতর। সে সময় পরিবেশ নষ্টের অভিযোগে ৩০ লাখ টাকা জরিমানার পাশাপাশি নদী থেকে অবৈধভাবে ভরাট করা বালি অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়ে। পরিবেশ অধিদফতরের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযানটি পরিচালনা করে। কিন্তু অভিযানের পরও নদী দখল ও ভরাট কাজ অব্যাহত রাখে মেঘনা গ্রæপ। অথচ এর বিপরীতে স্থানীয় ভূমি অফিস নোটিশ দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে।
বাংলাদেশ নদী বাচাও আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি কবি জামান ভূইয়া বলেন, বিআডবিøওটিএ এর উচ্ছেদ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছি। তবে, বিআইডবিøওটিএ নদী উচ্ছেদে নদী দখলের শীর্ষে থাকা মেঘনা গ্রæপের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে উচ্ছেদ করেনি বিআডবিøওটিএ। আমি দ্রæত সময়ের মধ্য মেঘনা গ্রæপের নদী দখলের উচ্ছেদ চাই। মেঘনা গ্রæপকে বাঁচিয়ে বিআইডবিøটিএ পুরো উচ্ছেদ অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
নারায়নগঞ্জ বিআডবিøটিএ এর উপ-পরিচালক মো. শহিদুল্লাহ বলেন, আমরা মেঘনা গ্রæপে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। মেঘনা গ্রæপের প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের জেটি ভেংঙ্গে দিয়েছি। বিআইবিøটিএ নদী উদ্ধারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ঈদের পরে পুনরায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। তখন নদী দখলকারী সবাইকে উচ্ছেদের আওতায় আনা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।