বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খতমে তারাবির পরও মসজিদে মসজিদে ভিড়। ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল মুসল্লিরা। পাড়ায় মহল্লায় যুবক কিশোরদের রাতজাগা। কোথাও আবার সেহেরি শুরুর আগে নগরবাসীকে জাগাতে ব্যস্ত যুবকেরা। তারা দল বেঁধে কাসিদা গেয়ে ঘুরছেন এ পাড়া থেকে ও পাড়া।
খোলা দোকান পাট, মার্কেট বিপণি কেন্দ্র। পবিত্র মাহে রমজানে রাতেও সরগরম বারো আউলিয়ার পুণ্যভ‚মি চট্টগ্রাম। সাহরি সারতে মানুষের ভিড় হোটেল রেস্তোঁরায়। সিয়াম সাধনার মাসে চারিদিকে এক অন্যরকম আবহ বন্দরনগরীতে।
দিনের মতোই ব্যস্ত রাতের নগরী। বেশিরভাগ মসজিদে খতমে তারাবি শেষ। মার্কেট, বিপণি কেন্দ্রে বাড়ছে মানুষের ভিড়। দিনে প্রখর রোদ আর যানজটে বিড়ম্বনা এড়াতে ইফতারের পর কেনাকাটা সারছেন নগরবাসী। মার্কেট, বিপণি কেন্দ্রগুলোতে আলোর বন্যা। বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো মার্কেট জেগে থাকছে রাতভর। নগরীর পাড়া-মহল্লায় দলবেধে যুবক-কিশোরদের আড্ডা। তারাবির নামাজ শেষে ওই আড্ডায় বসে তারা। আড্ডা চলে সেহেরির আগ পর্যন্ত। রাতে ঘুমিয়ে পড়লে সাহরি খাওয়া মিস হবে এমন আশঙ্কায় রাত জাগেন কিশোর-যুবকেরা।
চট্টগ্রামের যারা আদি বাসিন্দা তাদের বেশিরভাগই রমজানে ঘুমাতে যান সেহেরি ও ফজরের নামাজের পর। এটি অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। গৃহিণীরা রাত জেগে সারেন রান্নাবান্না। দুপুরের পর থেকে ইফতারি আর রাতের খাবার তৈরি হয়। এরপর মাগরিব, এশা ও তারাবির নামাজ। তারাবি শেষে সাহরির খাবার তৈরিতে ব্যস্ত হন তারা। সাহরিতে গরম ভাত আর গরম তরকারি ছাড়া যেন চলেই না। ফলে রাত জাগতে হয় তাদের।
নগরীর হোটেল, রেস্তোঁরাগুলোতেও একই চিত্র। দিনের বেলা বন্ধ থাকে হোটেল, রেস্তোঁরা। হোটেলের রান্নাঘরে দিনভর চলে ইফতারির আয়োজন। আসরের পর হোটেল, রেস্তোঁরার সামনে সাজিয়ে রাখা হয় ইফতার সামগ্রী। একইভাবে হোটেলের টেবিলেও প্লেটে সাজানো থাকে হরেক ইফতার। কেউ বাসায় ইফতার কিনে নিয়ে যান আবার অনেকে হোটেলে বসেই ইফতার সারেন। ইফতারের পর হোটেল, রেস্তোঁরাগুলোতে চলে সেহেরি খাবার রান্নার আয়োজন। ইফতারের পর সরগরম হয় হোটেল, রেস্তোঁরা। চা, কফি থেকে শুরু করে রোজার দিনের বিশেষ খাবার হালিম, ফিরনি, সেমাই খাওয়া হয় সেহেরির আগ পর্যন্ত। মসজিদে তারাবির নামাজ সেরে বাসায় ফেরার আগে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে হোটেলে ঢুকেন অনেকে। হালিম, ফিরনি, সেমাই খেয়ে বাসায় ফেরেন তারা।
মাহে রমজানে নগরবাসী রাত জেগে থাকেন। আর এ কারণে নগরীর অলিগলির চা দোকান থেকে শুরু করে মুদি দোকানও রাতভর খোলা থাকে। নগরীর বাসিন্দাদের একটি অংশ বিশেষ করে যারা মেস বাড়ির বাসিন্দা তারা হোটেলের খাবারের উপর নির্ভরশীল। ইফতারি থেকে শুরু করে সেহেরি পর্যন্ত তারা হোটেল, রেস্তোঁরার খাবারই গ্রহণ করেন। সেহেরির সময় হতেই নগরীতে একযোগে সাইরেন বাজতে থাকে। পাড়া-মহল্লায় চলে কিশোর-যুবকদের সম্মিলিত ইসলামী সঙ্গীত।
কোন কোন এলাকায় মসজিদের মাইক থেকেও নগরবাসীকে সাহরিতে উঠার আহ্বান জানানো হয়। অনেক মসজিদে মাইক থেকে বাজানো হয় ইসলামী সঙ্গীত। এরমধ্যেই যারা ঘুমিয়েছিলেন তারাও জেগে উঠেন। নগরীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সাহরিতে হোটেল, রেস্তোঁরায় ভিড়। নির্ধারিত সময়ের আগেই রোজাদাররা সাহরি সেরে নেন। অভিজাত হোটেল, রেস্তোঁরাতেও সাহরির জন্য বিশেষ আয়োজন রয়েছে। নগরীর তারকা হোটেলগুলোতেও সাহরির আয়োজন রাখা হয়েছে। অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখানে গিয়ে সাহরি সারছেন। এশার নামাজের পর কেনাকাটায় যাচ্ছেন যারা তাদের অনেকে সাহরি পর্যন্ত মার্কেটে ঘুরেন। বাসায় ফেরার আগে হোটেল, রেস্তোঁরায় সেরে নিচ্ছেন সাহরি। ঈদের কেনাকাটা জমে উঠায় মার্কেট, বিপণি কেন্দ্র প্রায় রাতভর খোলা রাখছে। দোকানের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের অনেকে বাসা থেকে আনা খাবার দিয়ে দোকানেই সাহরি সারেন। অনেকে আবার ছোটেন হোটেল, রেস্তোঁরায়। সাহরির ও ফজরের নামাজের পর কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকে নগরীর মার্কেট, বিপণি কেন্দ্র, দোকান-পাট। এরপর শুরু হয় দিনের ব্যস্ততা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।