পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদ-নদী নিথর হয়ে পড়েছে। দাপুটে তর্জন গর্জন নেই। দেখা যায় না তীরে আছড়ে পড়া সেই ঢেউ। পরিণত হয়েছে পুকুর ও খালে। পায়ে হেটে অনেক নদী পার হওয়া যায়। নদপাড়ের মানুষের কানে ভেসে আসে নদ-নদীর কান্না।
এসব কথা দক্ষিণ-পশ্চিমের নদপাড়ের বাসিন্দাদের। ভারতের পানি আগ্রাসনে এ অঞ্চলের নদ-নদীর হৃদপিন্ড পদ্মা এখন স্পন্দনহীন। পদ্মার শাখা-প্রশাখা নদ-নদীর অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে। কুষ্টিয়ার পদ্মা পাড়ের ভেড়ামারার তসলিম উদ্দীন ক্ষোভের সাথে বললেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী গঙ্গার পানি আসে না পদ্মায়। মরণফাঁদ ফারাক্কা আমাদের অপুরণীয় ক্ষতি করেছে। এখন ভারতেও ফারাক্কা বাঁধ ভেঙে ফেলার দাবি উঠছে’।
নড়াইলের চিত্রা পাড়ের নিত্যগোপাল নদ-নদীর কথা তুলতেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বলেন, ‘আরে ভাই নদীর কথা বলবো কী দেখতেই তো পারছেন কাহিল অবস্থা। নদ-নদী শ্যাষ, এখন নদী আর নদী নেই’।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সাইবুর রহমান মোল্যা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, নদ-নদী নাব্যতা হারানোর কারণে সামগ্রিক পরিবেশের উপর বিরাট নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। জীবন-জীবিকায় চরম সঙ্কটাবস্থা বিরাজ করছে। অনেক নদীর তলদেশ পর্যন্ত শুকিয়ে গেছে। নদীকে যেভাবেই হোক বাঁচাতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, মাথাভাঙ্গা, গড়াই, ভৈরব, আপার ভৈরব, কুমার, মধুমতি, ফটকি, বেতাই, চিত্রা, নবগঙ্গা, অভিন্ন ইছামতি ও কোদলাসহ সব নদী কার্যত খালে পরিণত হয়েছে। নদী বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন, ফারাক্কার কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদী ক্রমেই পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। এবারের গ্রীষ্মে সবখানে পানির জন্য হাহাকার রব উঠেছে। নদ-নদীর চেহারা বলে দিচ্ছে কতটা ভয়াবহ।
নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতা ইকবাল কবীর জাহিদ ও অনিল বিশ্বাস জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সব নদ-নদী এখন মৃত্যুযন্ত্রনায় কাঁদছে। নদ-নদীর অস্তিত্ব সঙ্কট পরিবেশের উপর নেমে এসেছে মারাত্মক বিপর্যয়। এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নির্ভরশীল পদ্মার শাখা প্রশাখা এবং অভিন্ন নদ-নদীর উপর।
তারা বলেন, নদ-নদী বাঁচাতে কখনোই জোরদার পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন সেতু পয়েন্টের বেশীরভাগ এলাকা জুড়ে ধু ধু বালুচর। নদী নয়, খালের মতো শীর্ণ পদ্মা দিয়ে কোনরকম পানি প্রবাহ হচ্ছে। শৈলকুপার কুমার নদী, নড়াইলের চিত্রা ও মধুমতি, কালীগঞ্জের চিত্রা, যশোরের কপোতাক্ষ, ভৈরব ও মুক্তেশ্বরীসহ গোটা অঞ্চলের ছোট-বড় নদ-নদীর পানিও দ্রুত কমে যাচ্ছে।
এ অঞ্চলের ১০ জেলার ২২ হাজার ৭৩৭ বর্গকিলোমিটার এলাকার কৃষি, শিল্প, বনজ, মৎস্য সম্পদ ও পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে। ভূপৃষ্টের পানি সঙ্কট চরমে। আবার ভূগর্ভস্থ পানি সঙ্কটও মারাত্মক হয় গ্রীষ্মে। এবারও তার ব্যতয় ঘটেনি। ক্রমাগত মারাত্মক হুমকিতে পড়ছে উর্বর জনপদ। সবুজ ঘেরা প্রান্তর হচ্ছে বিবর্ণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।