Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়া যাত্রা

২২ রোহিঙ্গা উদ্ধার, দালালসহ আটক ৭২

জাকের উল্লাহ চকোরী ও মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান : | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

দালালের প্রলোভনে পড়ে উন্নত জীবনের আশায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিচ্ছে উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা যেন থামছেই না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে মানবপাচারকারী চক্র ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর সামরিক অভিযান শুরু করলে প্রাণের ভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বর্তমানে সব মিলিয়ে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফে ৩৪টি ক্যাম্পে মানবেতর জীবনযাপন করছে। রোহিঙ্গাদের এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা। এ কারণে গত কয়েক মাসে হঠাৎ করে সাগর পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গাদেরকে মালয়েশিয়া পাচারের চেষ্টা বেড়েছে।
গত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতিকালে টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন থেকে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে ১৭ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। এদের মধ্যে ৭ জন নারী এবং ১০ জন পুরুষ। এ সময় ৫ জন পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের কমান্ডার ফয়েজুল ইসলাম মন্ডল।
তিনি আরো জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাড়ি দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে সেন্টমার্টিন ছেড়াদিয়া সৈকত এলাকায় আনা হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ১৭ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার এবং পাঁচজন পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গারা নয়াপাড়া, লেদা ও জাদিমোরা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা এবং পাচারকারীরা কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী, রামু ও উখিয়ার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, উদ্ধার করা রোহিঙ্গাদের স্ব স্ব শিবিরে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। পাঁচজন পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা করে কক্সবাজার আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে, কক্সবাজারের পেকুয়ায় সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাবার পথে শিশু ও নারীসহ ৬৭ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিমদাদ মিয়ার ঘাট থেকে তাদের আটক করে পেকুয়া থানার এসআই সুমন সরকারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে ২৩ জন পুরুষ, ২৯ জন নারী ও ১৫ জন শিশু রয়েছে। তাদের পেকুয়া থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে বেশ কয়েকটি হাইয়েস মাইক্রোবাস রোহিঙ্গাদের নিয়ে উজানটিয়ায় যায়। পরে তাদের ইঞ্জিন চালিত বোটে তুলে দিয়ে দালালরা পালিয়ে যায়। তাদের বহনকারী বোটটি কুতুবদিয়া চ্যানেলের করিমদাদ মিয়া ঘাট এলাকায় পৌঁছে। এতো লোক সমাগম দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেয়। পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন ভ‚ঁইয়া বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শিশু-নারীসহ ৬৭ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। তারা সবাই সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাচ্ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তারা সবাই উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। এই পাচারের সাথে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আটক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মালয়েশিয়া যাত্রা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ