Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোমাঞ্চ জিতে টিকে থাকল আবাহনী

এএফসি কাপ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ মে, ২০১৯, ১১:৫৬ পিএম

এএফসি কাপের রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে ভারতের ক্লাব চেন্নাইন এফসিকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে টিকে থাকল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। আর এই জয়ে এএফসি কাপে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় পর্বে খেলার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা।

বুধবার রাতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরতি লেগের ম্যাচটি ৩-২ গোলে জেতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নরা। এই জয়ে চার ম্যাচে আবাহনীর পয়েন্ট ৭। সমান ম্যাচে একই পয়েন্ট পেয়ে আবাহনীর ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে চেন্নাইন।

স্বপ্ন ছিল নিজেদের মাঠে চেন্নাইন এফসিকে হারিয়ে এএফসি কাপের দ্বিতীয় পর্বের পথে এগিয়ে যাওয়া। সেটাই করে দেখালেন বেলফোর্ট, মাসিহ ও মামুনুলরা। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল আহমেদাবাদে নিজেদের হোম ম্যাচে চেন্নাইন ১-০ গোলের জয় তুলে নিয়েছিল। তবে গোলটি হয়েছিল আত্মঘাতি।

ঘরের মাঠে চেন্নাইনকে কোন ছাড় দিবে না আবাহনী- এ কথা ম্যাচের আগের দিনই বলেছিলেন আবাহনী কোচ ফাবিও লেমস। তিনি স্বপ্ন দেখছেন তার দল প্রথমবারের মতো এএফসি কাপের দ্বিতীয় পর্বে খেলার সুযোগ করে নিচ্ছে। কোচের স্বপ্নপূরণে ফুটবলাররা ম্যাচে নিজেদের উজার করে দিয়ে ঠিকই জয় তুলে নিলেন।

বুধবারের ম্যাচে আবাহনীর গুরুত্বপূর্ণ দু’ফুটবলার তপু বর্মণ ও আতিকুর রহমান ফাহাদ ছিলেন না। ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশাও খেলতে পারেননি। তবে মাঠে আবাহনীকে দেখে বুঝার উপায় ছিল না দলটি চোট আক্রান্ত। পুরো মাঠ জুড়ে খেলেছেন মামুনুল-জীবনরা। আক্রমণের দিক দিয়েও এগিয়ে ছিলেন তারা। কিন্তু গোল মিসের মহড়াই দিয়েছে বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। বারবার আক্রমন করেও গোলের দেখা পাননি জীবন। দলকে গোল এনে দিতে পারেননি নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড সানডে সিজোবা-ও। কিন্তু সেই অভাব দূর করে দিয়েছেন বাকিরা।

এদিন ম্যাচের শুরুটা ছিল ম্যাড় ম্যাড়ে। তবে সময় যতই গড়িয়েছে আবাহনীর খেলার তেজও বেড়েছে। প্রতিপক্ষের রক্ষণদূর্গে বারবার আছড়ে পড়েছে আবাহনী ফরোয়ার্ডদের দূর্দান্ত শটগুলো। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টো প্রথম গোল পায় চেন্নাইন। ম্যাচের ৮ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে কর্ণার কিক নেন ইসাক ভানমালসাওয়া। জটলা সৃষ্টি হয় আবাহনীর গোল সীমানায়। উড়ে আসা বল ঠেকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সবাই। সেই ফাকে শট করে গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেলকে বোকা বানিয়ে গোল করেন ভিনিথ (১-০)।

কিন্তু বিধাতা যেন ম্যাচের সব আকর্ষণ লুকিয়ে রেখেছিলেন দ্বিতীয়ার্ধের জন্য। বিরতির পর ম্যাচের ৬৪ মিনিটে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়ের সঙ্গে দৌঁড়ে এগিয়ে যান আবাহনীর হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড বেলফোর্ট। বক্সের ভেতরে ঢুকেই ডানপায়ের শটে গোল করে বোকা বানান চেন্নাইনের গোলরক্ষক করনজিৎ সিংকে। লাফিয়ে পড়েও বল রুখতে পারেননি তিনি (১-১)। সমতায় ফেরার ঠিক চার মিনিট পর এগিয়ে যায় আবাহনী। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে ফ্রিকিক থেকে শট নেন আবাহনীর আফগানিস্তানের মাসিহ সাইঘানি। সেই বল বাক খেয়ে প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষককে হতবাক করে কোনাকুনিভাবে জালে জড়িয়ে যায় (২-১)। উল্লাসে মেতে উঠে পুরো বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম।

কিন্তু তাদের সেই উল্লাস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৭৪ মিনিটে আরো এক গোল করে ম্যাচে সমতা আনে চেন্নাইন। জয়ের অপেক্ষায় থাকা আবাহনীর কাছ থেকে পয়েন্ট কেড়ে নেয়ার পায়তারা করতে থাকে তারা। এসময় আবাহনীর বিপদ সীমানায় জটলার সৃষ্টি হয়। বল ধরতে এগিয়ে আসেন গোলরক্ষক সোহেল। ঠিক সেই মূহুর্তে বক্সের ভেতরে থাকা সুযোগ সন্ধানী ইসাক ভানমালসাওয়া ডান পায়ের শটে গোল করেন (২-২)।

ম্যাচের ৮৮ মিনিটে ফের এগিয়ে যায় আবাহনী। এবার গোলের নায়ক জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। ঘরোয়া আসরে নিস্প্রভ সেই মামুনুলই দলকে জয় এনে দিলেন। বক্সের ডান প্রান্ত দিয়ে দুরপাল্লার এক শটে জাল কাঁপান এই মিডফিল্ডার (৩-২)। শেষ পর্যন্ত জয়ের আনন্দ নিয়েই ঘরে ফিরে আবাহনী। ব্যর্থ হয়ে হতাশায় ভোগে চেন্নাইন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ