বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জাতি বা সত্তাবাচক নাম দু’টি। একটি নাম ‘আহমাদ’ এবং একটি নাম ‘মুহাম্মদ’। নূরনবী মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সা. মা আমেনার কোলে আগমনের পর ‘মুহাম্মদ’ নামে বিভ‚ষিত হন। তৎপূর্বে ঊর্ধ্বজগতে তিনি ‘আহমাদ’ নামে সুপরিচিত ছিলেন। মহান রাব্বুল আলামী ‘মুহাম্মদ’ নাম মোবারক আল কোরআনে চারটি সূরায় চারবার উল্লেখ করেছেন। নিম্নে আমরা পর্যায়ক্রমিকভাবে সহৃদয় পাঠক ও পাঠিকাদের সামনে তার সম্যকচিত্র তুলে ধরতে প্রয়াস পাব। ওয়ামা তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহ।
১। ‘মুহাম্মদ’ নাম মোবারক আল কোরআনের ৩নং সূরা আল ইমরানের ১৪৪ নং আয়াতে এসেছে। ইরশাদ হচ্ছে, মুহাম্মদ একজন রাসূল মাত্র। তার পূর্বে বহু রাসূল গত হয়েছে। সুতরাং যদি যে মারা যায় অথবা সে নিহত হয় তবে তোমরা কি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে? এবং কেউ পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলে সে কখনো আল্লাহর ক্ষতি করতে পারবে না, বরং আল্লাহ শীঘ্রই কৃতজ্ঞদের পুরস্কৃত করবেন। এই আয়াতের অক্ষর সংখ্যা ১১৫ এবং পুরো সূরাটির আয়াত সংখ্যা ২০০ এবং পুরো সূরাটির অক্ষর সংখ্যা ১৫৭২৭।
এখন এই সবগুলো সংখ্যার যোগফল (৩+১৪৪+১১৫+২০০+১৫৭২৭) = ১৬১৮৯। এখন একক সংখ্যাটির একক (১+৬+১+৮+৯) = ২৫। আর ২৫ সংখ্যাটির একক (২+৫) = ৭। এই ৭ সংখ্যাটি উম্মুল কোরআন সূরা ফাতিহা’র মর্মের সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। কেননা উম্মুল কোরআনের আয়াত সংখ্যা ৭; অক্ষর সংখ্যা ১৩৩ অর্থাৎ (১+৩+৩) = ৭; এবং শব্দ সংখ্যা ২৫ (২+৫) = ৭। প্রিয় নবী মুহাম্মদ সা. ৭ সংখ্যার এই বিশেষ নেয়ামতটির অধিকারী ছিলেন, যা অন্যান্য নবী রাসূলগণের মাঝে ছিল না।
২। ‘মুহাম্মদ নাম মোবারক আল কোরআনের ৩৩ নং সূরা আহযাবের ৪০ নং আয়াতে এসেছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘মুহাম্মদ’ তোমাদের মধ্যে কোনো পুরুষের পিতা নন, বরং সে আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বজ্ঞ। এই আয়াতের অক্ষর সংখ্যা ৭২, এবং পুরো সূরাটির অক্ষর সংখ্যা ৬০৫০। এখন এই সবগুলো সংখ্যার যোগফল (৩৩+৪০+৭২+৭৩+৬০৫০) = ৬২৬৮। এখন এই সংখ্যাটির একক (৬+২+৬+৮) = ২২। এই ২২ এর একক ৪। এই ৪ সংখ্যাটি উল্লিখিত মুহাম্মদ নাম মোবারকের দিকেই ইঙ্গিত প্রদান করে। যা আল কোরআনে আল্লাহপাক ৪ বার উল্লেখ করেছেন। সুবহানাল্লাহ।
৩। ‘মুহাম্মদ’ নাম মোবারক আল কোরআনে ৪৭ নং সূরা মুহাম্মাদের ২ নং আয়াতে এসেছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘যারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে এবং মুহাম্মাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়ে তাতে বিশ্বাস করে এবং তা-ই তাদের প্রতিপালক হতে প্রেরিত সত্য; তিনি তাদের মন্দ কর্মগুলো ক্ষমা করবেন এবং তাদের অবস্থা ভালো করবেন।’ এই আয়াতের অক্ষর সংখ্যা ৮৮। পূর্ণ সূরাটির আয়াত সংখ্যা ৩৮ এবং পূর্ণ আয়াতসমূহের অক্ষর সংখ্যা ২৫৭১। এখন এই সবগুলো সংখ্যার যোগফল (৪৭+২+৮৮+৩৮+২৫৭১) = ২৭৪৬। এখন এই সংখ্যাটির একক (২+৭+৪+৬) = ১৯। এই ১৯ সংখ্যাটি ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ এর প্রতীক। যার দ্বারা কোরআন শুরু হয়েছে। সুবহানাল্লাহ। কোরআন ও মুহাম্মদ নাম মোবারকের মধ্যে মহব্বতের তা এক অনন্য নজীর।
৪। ‘মুহাম্মদ’ নাম মোবারক আল কোরআনের ৪৮ নং সূরা ফাতহ-এর ২৯ নং আয়াতে এসেছে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল; তার সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভ‚তিশীল, আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদের রুকু ও সিজদায় অবনত দেখবে, তাদের মুখমন্ডলে সিজদার চিহ্ন থাকবে....। এই আয়াতটির অক্ষর সংখ্যা ২৬৪। এই সূরায় সর্বমোট ২৯টি আয়াত আছে। এগুলোর মোট অক্ষর সংখ্যা ২৬৩৬। এখন এই সবগুলো সংখ্যার যোগফল (৮৪+২৯+২৬৪+২৯+২৬৩৬) = ৩০০৯। এই সংখ্যাটির একক (৩+০+০+৯) = ১২। এই ১২ সংখ্যাটি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর প্রতীক। যার ধ্বনি মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সা. এর জবান মুবারক হতে উচ্চারিত হয়ে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। আলহামদুলিল্লাহ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।