Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশে হচ্ছে ক্যাশ সার্ভার

প্রতিমাসে ব্যয় ১৫ কোটি টাকা

ফারুক হোসাইন : | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নেটফ্লিক্স। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা দুই লাখের বেশি। যার মাধ্যমে প্রতি মাসে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন এই প্রতিষ্ঠান গ্রাহক প্রতি ৯ ডলার করে মোট ১৮ লাখ ডলার বা ১৫ কোটি টাকা আয় করছে। দেশ থেকে এই বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে গেলেও তা বন্ধ করার সুযোগ নেই। তাই প্রথমে আপত্তি জানালেও ইন্টারনেট গেটওয়েগুলোতে ক্যাশ সার্ভার বসাতে অনুমোদন দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গত ৬ মে কমিশনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশে নেটফ্লিক্স এর সেবা নিষিদ্ধ করা সম্ভব না বলেই এই সেবার জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় ইন্টারন্যাশনাল ব্যান্ডউইডথ কেনার ব্যয় এড়াতে এবং মানসম্মত সেবা পাওয়ার শর্ত সাপেক্ষে দেশে এর ক্যাশ সার্ভার স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বিটিআরাসি সূত্রে জানা যায়। 

মার্কিন অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং প্রতিষ্ঠান নেটফ্লিক্স। ইন্টারনেট সংযুক্ত ডিভাইসের মাধ্যমে গ্রাহকরা টিভি শো, চলচ্চিত্র, ডকুমেন্টারি এবং আরও অনেক ধরণের ভিডিও দেখার সুযোগ পায়। প্রতিমাসে নতুন নতুন টিভি শো এবং চলচ্চিত্র এই সেবায় যুক্ত করা হয়। ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ি প্রায় ১৯০টি দেশের ১৪৮ মিলিয়ন বা ১৪ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহক রয়েছে নেটফ্লিক্সের। বাংলাদেশেও দুই লাখের বেশি গ্রাহক রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এজন্য গ্রাহক প্রতি ৯ ডলার করে প্রতি মাসে প্রায় ১৮ লাখ ডলার (টাকার মূল্যে ১৫ কোটি টাকা) নিয়ে যাচ্ছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। এই বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার পাচার রোধ করা সম্ভব না হলেও এই সেবার জন্য বৈদেশিক মুদ্রায় ইন্টারন্যাশনাল ব্যান্ডউইথ কেনার ব্যয় এড়াতে এবং মানসম্মত সেবা পাওয়ার শর্ত সাপেক্ষে দেশে নেটফ্লিক্স এর ক্যাশ সার্ভার স্থাপনের অনুমতি দিচ্ছে বিটিআরসি। তবে এই সার্ভার স্থাপনের অনুমতি পাবে শুধুমাত্র লাইসেন্স প্রাপ্ত ন্যাশনাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ (এনআইএক্স) অপারেটর। যেসকল ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) তাদের গ্রাহকদের এ সার্ভিস প্রদান করতে ইচ্ছুক তারা এনআইএক্স-এ আন্তঃসংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে এ সার্ভিস প্রদান করতে পারবে। যদিও এর আগে নেটফ্লিক্স ক্যাশ সার্ভার স্থাপন ও ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে বিটিআরসির কাছে আবেদন করে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) অপারেটর সামিট কমিউনিকেশন্স ও আমরা টেকনোলজিস এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) সিস্টেম সলিউশন্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট টেকনোলজিস, লিংক থ্রি টেকনোলজিস, আম্বার আইটি ও মাজেদা নেটওয়ার্কস। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কয়েকটির এনআইএক্স লাইসেন্স রয়েছে।
জানা যায়, নেটফ্লিক্স কিংবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কোন সেবা বা কনটেন্ট বাংলাদেশের গ্রাহক পেতে হলে তাকে ইন্টারন্যাশনাল লং ডিসটেন্স টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিস (আইএলডিটিএস) নীতিমালা অনুয়ায়ি এই সেবা গ্রাহক প্রান্ত হতে আইএসপি, আইআইজি, আইডিএলসি, বৈদেশিক ক্যারিয়ারের মাধ্যমে আদান প্রদান হয়ে থাকে। যার ফলে আন্তর্জাতিক সার্ভিস বা কনটেন্ট আদান প্রদানের জন্য বাংলাদেশী লাইসেন্স প্রাপ্ত এ সকল প্রতিষ্ঠানের ইন্টারন্যাশনাল ব্যান্ডউইথ/ইন্টারনেট ক্রয় করতে হয়। যেহেতু নেটফ্লিক্স একটি স্ট্রিমিং সার্ভিস; স্বভাবতই এ সেবা প্রদানে অপারেটরদের অনেক বেশি ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন পড়ে। যার জন্য অপারেটরদের ব্যয় বৃদ্ধি পায়। এছাড়া এই সেবার সার্ভিস চার্জ সরাসরি নেটফ্লিক্স প্রতিষ্ঠানটি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেয়ে থাকে, এজন্য লোকাল অপারেটরদের কোন বাড়তি রাজস্ব আয় হয় না। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকার জন্য গ্রাহকদের এ সেবা প্রদান করতে হয়।
বিটিআরসি জানায়, নেটফ্লিক্স ক্যাশ সার্ভার স্থাপন করা গেলে এ সার্ভার ব্যবহার করে তাদের কনটেন্ট বিভিন্ন লোকাল হোস্ট করা ক্যাশ সার্ভার সময় সময় হালনাগাদ করবে ফলে সার্ভিস পেতে প্রতিবার আন্তর্জাতিক রুট ঘুরে আসতে হবে না। লোকাল হোস্ট করা ক্যাশ সার্ভার থেকে দ্রæত ও ভালো সেবা পাবে। একইসাথে লোকাল ইন্টারনেট/ট্রাফিক বৃদ্ধি পাবে এবং ইন্টারন্যাশনাল ব্যান্ডউইথের ব্যবহার কমবে। এজন্য এই সার্ভার ব্যবহারে ব্যান্ডউইথ কেনা বাবদ রাজস্ব ব্যয় কমবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হ্রাস পাবে।
তবে কমিশন যদি দেশে নেটফ্লিক্স ক্যাশ সার্ভার স্থাপন ও ব্যবহারের অনুমতি দেয়, তাহলে আইএসপি প্রান্তে না দিয়ে ন্যাশনাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ (এনআইএক্স) প্রান্তে স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, দেশে আইএসপি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দেড় হাজারেরও বেশি। তাদের নেটফ্লিক্স ক্যাশ সার্ভার স্থাপনের অনুমতি দিলে তা পর্যবেক্ষণ করা কঠিন হবে। অন্যদিকে এনআইএক্স অপারেটরের সংখ্যা মাত্র ৭টি হওয়ায় তাদেরকে এর অনুমতি দেওয়া যুক্তিসংগত হবে।

 



 

Show all comments
  • Abrar Shahran ১৬ মে, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
    How? There are very few people using a legal Netflix accounts in BD, and even they are sharing it with their friends.
    Total Reply(0) Reply
  • Ragib Tasnim ১৬ মে, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    Well Bangladesh e jodi credit card er matter ta complicated na hoto then ei shob platform e manush aro jeto
    Total Reply(0) Reply
  • Junaid Miaje ১৬ মে, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    টরেন্ট কম বেশি সব মানুষ ই চালাতে পারে। কিন্তু ডিরেক্টরি এক্সপ্লোর করে স্ট্রিমিং করায় অন্যরকম মজা পাওয়া যায়। আর তাছাড়া ইন্টারনেট গতিও এখন সাবলিল। আমার নিজেরি সাবস্ক্রিপশন কেনা আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Tariqul Islam ১৬ মে, ২০১৯, ১:২৯ এএম says : 0
    People know the feelings of streaming who can afford
    Total Reply(0) Reply
  • Kawsir ১৬ মে, ২০১৯, ১০:৩৬ এএম says : 0
    valo e hobe
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টাকা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ