Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বোরো ধান চাষে কমবে ২ গুণ পানি ও সেচ খরচ

প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বাকৃবি সংবাদদাতা (ময়মনসিংহ) : আমাদের দেশে প্রচলিত কাঁদা পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষে প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে প্রায় ৩-৫ হাজার লিটার পানি খরচ হয়। নতুন কোনো জাতের উদ্ভাবন ছাড়াই বোরো ধান চাষে পানি সেচের পরিমাণ ২ গুণ কমিয়েও ফলন বাড়ানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষিতত্ত¡ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান ও তার গবেষক দল। অধ্যাপক ড. মো. মশিউরের উদ্ভাবিত ‘শুকনা পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ’ প্রযুক্তিতে জমিতে পানি সেচের পরিমাণ কমানোর ফলে প্রচলিত কাঁদা পদ্ধতির তুলনায় ধানের ফলন বেশি হয়। এতে অর্থনৈতিক ভাবে ব্যাপক লাভবান হবেন কৃষক।
ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, প্রচলিত কাঁদা পদ্ধতিতে বোরো ধানের জমিতে ১৫-৩০ বার সেচ দিতে হয়। তবে আমাদের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ৪-৮ বার সেচ দিয়েই ফসল ফলানো যাবে। এ প্রযুক্তিতে সামান্য অংকুরিত বীজ জো (জমির অনুকূল আর্দ্রতা) অবস্থায় জমিতে সরাসরি লাইনে লাগাতে হবে। তবে বীজ বপন করতে হবে ফেব্রæয়ারির ১ম সপ্তাহে। এ পদ্ধতির অন্যন্য উপকারী দিক সম্পর্কে তিনি বলেন, ভূগর্ভস্থ পানি খুব সামান্য উত্তোলন করতে হয় বলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী তেলের খরচ কম হয়। জমিতে পানির পরিমাণ কম থাকায় কাঁদা পদ্ধতির তুলনায় এ পদ্ধতিতে গ্রীন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ নিতান্তই কম হয়। এ পদ্ধতিতে ধানের জীবনকাল ১৫ দিন কমে যায়। এতে আমন ধান কাটার পর সরিষা, আলু বা অন্যান্য রবি শস্য চাষের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়। ফলে কৃষক একটি বাড়তি ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। তবে নতুন এ পদ্ধতির সামনে একমাত্র বাঁধা ছিল ‘আগাছা’। বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমীর অর্থায়নে পরিচালত গবেষণায় ড. মশিউর ও তার দল আগাছা ব্যবস্থাপনার ‘সমন্বিত পদ্ধতি’ উদ্ভাবন করেন। এ সমন্বিত পদ্ধতিতে কৃষকের আর্থিক সাশ্রয় হবে এবং পরিবেশেও কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না। সহায়ক গবেষক মো. জয়েন উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে নতুন এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিনাজপুর, রংপুর, নেত্রকোণা, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী অঞ্চলে দেশীয় জাতের বিরিধান-২৮ ও বিরিধান-৫৮ চাষ করে কম খরচে বেশি ফলন পেয়েছেন বলে জানান কৃষকরা।
ড. মো. মশিউর রহমানের গবেষণায় সহযোগী হিসেবে ছিলেন ডি.এ.ই এর ডি.ডি (এল আর) মো. জয়েন উদ্দিন, পি.এইচ.ডি শিক্ষার্থী শাহজাহান সরকার এবং রিসার্স ফেলো মোজাহার হোসেন।
এ পদ্ধতি সম্পর্কে ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘শুকনা পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ’ বর্তমানে একটি লাভজনক ও সময়োপযোগী প্রযুক্তি। এ পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ করলে যেমন লাভবান হবেন কৃষক তেমনি লাভবান হবে সরকার ও দেশ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বোরো ধান চাষে কমবে ২ গুণ পানি ও সেচ খরচ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ