Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুরুষের অধিকার রক্ষায় # মেনটু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ঋষি (ছদ্ম নাম) একটি যোগ ব্যায়াম গ্রুপের সাথে জড়িত ছিল, তার দায়িত্ব ছিল প্রতি রোববার সকালে স্টুডিওতে যেয়ে ব্যায়ামের উপকরণগুলো সাজিয়ে রাখার। তার চেম্বুরের বাসা থেকে মালাদের স্টুডিও অনেক দূরে হওয়ায় শনিবার রাতে তার ইয়োগা গ্রুপের এক সদস্য দম্পতি লিনা ও করণের বাসায় থাকতো।

এমনই এক শনিবার করন বাড়িতে না থাকায় লিনা রিশির প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে ও তাদের মাঝে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় এক মাস পরে রিশি বুঝতে পারল যে, এ সম্পর্কের কোন ভবিষ্যত নেই। সে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছিল যাকে তার ভালো লাগতো। কিন্তু লিনা ব্যাপারটি মানতে পারেননি এবং তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ছিনতাই করেন। এর ফলে ঋষিকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয় এবং তিনি তার চাকরি, বন্ধু-বান্ধব ও আন্তঃবিশ্বাস সব হারিয়ে ফেলেন।
এ ধরণের মিথ্যা মামলার কারণে পুরুষ অধিকার কর্মীরা মনে করেন আইন ‘লিঙ্গ নিরপেক্ষ’ নয় বরং ‘লিঙ্গ-পক্ষপাতী’।
তাদের কাছে সবচেয়ে বেশী অভিযোগ আসে যৌতুক হয়রানি এবং গার্হস্থ্য সহিংসতার মিথ্যা মামলার ঘটনা। কিন্তু ইদানিং সেচ্ছায় গড়া সম্পর্ক থেকে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগও প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে।
এ বিষয়ে পুরুষ অধিকারকর্মী অমিত দেশপান্ডে বলেন, ‘বেশিরভাগ সময় এই ধর্ষণ মামলা প্রতিহিংসা বা সুবিধা আদায়ে ব্যবহার করা হয়। যদিও ৭৪% মামলার বিচার হয় না, তবে এটি একটি পুরুষের অবস্থান ধ্বংস করে দিতে পারে।’
# মিটু আন্দোলনের ফলে যেমন নারীরা অত্যাচারিত হওয়ার কথা প্রকাশ করতে পারছেন, তার পাশাপাশি মিথ্যা অভিযোগ, অভিযুক্তদের মানসিক এবং আইনি সমর্থন প্রদানকারীর অভাব পুরুষদের জন্য উদ্বেগের কারণ। হয়তো তুলনামূলক ভাবে কম সংখ্যক পুরুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে, কিন্তু তারা যখন সঠিক বিচার পাচ্ছে না বা অবহেলার শিকার হচ্ছে বলে মনে করে তখন তারা প্রতিবাদ করতে চায়। এবং এর ফলেই ভারতে পুরুষাধিকার আন্দোলন গড়ে উঠছে।
২০০৫ সালে ইয়াহুতে একটি গ্রুপ হিসাবে এর শুরু হয়েছিল, যেখানে পুরুষরা আইপিসি’র (ইন্ডিয়ান পেনাল কোড) ৪৯৮এ ধারা (যৌতুকের হয়রানি) নিয়ে আলোচনা, যার অভিপ্রায় ছিল, ঘরোয়া বিরোধে জেরে কারাগারে নিক্ষেপিত স্বামীদেরকে মানবিক সমর্থন দেয়া। বর্তমানে এই আন্দোলন ‘সেভ ইন্ডিয়া ফ্যামেলী’র মাধ্যমে ৪৫ টি আলাদা এনজিওতে বিভক্ত হয়ে পুষাধিকার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
এর মাধ্যমে নারীর প্রতি বিরোধিতা করছেন না জানিয়ে পুরুষ অধিকার আন্দোলনের কর্মী ক্যাপ্টেন অরুণ শেঠি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা বলছি না যে, মহিলাদের রক্ষা কোরো না। কিন্তু মাত্রা এবং ভারসাম্য থাকা উচিত। বর্তমানে প্রচলিত আইন অনেক সময় পুরুষদের জন্য বিপদজ্জনক হয়ে দাড়ায়।
৭৬ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ, যিনি বহুদিন জেল খেটেছেন, ২১ বছর সংসার করার পর স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হওয়ায় তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দেয়ার কারণে। তিনি বলেন, ‘আমি আমার সম্মান, চাকরী, মামলা চালাতে টাকা সব হারিয়েছি।’
এ বিষয়ে দেশপান্ডে বলেন, আমাদের প্রাথমিক দাবি হচ্ছে ‘আইপিসি ৩৫৪ (নারী নির্যাতন) এবং ৩৭৬ (ধর্ষণ) ধারার অধীনে লিঙ্গ-পক্ষপাতমূলক আইনগুলিকে লিঙ্গ নিরপেক্ষতা।’ তিনি আরো বলেন, ‘খুব সহজেই সামান্য ব্যাপারে ৩৫৪ ধারায় মামলা হতে পারে; অনেকেই বলেন কিভাবে এই আইনের মাধ্যমে এমনকি অফিসের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।’ সূত্র: টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ