Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেই উইন্ডিজকেই গুড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

আয়ারল্যান্ড ত্রিদেশীয় সিরিজ : ৮ উইকেটে জিতেছে মাশরাফির দল

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০১৯, ১১:৫০ পিএম

প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং-বোলিংয়ের কিছুই ভালো ছিল না তেমন। আয়ারল্যান্ড ‘এ’ দলের কাছে ৮৮ রানের হারটাও ছিল বেশ বিব্রতকর। তবে ‘আসল’ ম্যাচে ঠিকই ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠল বাংলাদেশ। মাশরাফি বিন মুর্তজার দল সম্মিলিত পারফরম্যান্সে উড়িয়ে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।

ওয়ালটন ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডকে ১৯৬ রানে হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মঙ্গলবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৮ উইকেটে।

ডাবলিনের ডাবলিনের কনট্রাফ স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শাই হোপের সেঞ্চুরির পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলতে পারে ৯ উইকেটে ২৬১ রান। তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার ও সাকিব আল হাসানের ফিফটিতে বাংলাদেশ সেটি পেরিয়ে যায় ৩০ বল বাকি থাকতে।

সেই সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়যাত্রা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। গত ডিসেম্বরে ঘরের মাঠে টানা দুটি জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বিজয়ী হয়েছিল তারা। সৌম্য সরকার, তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ফিফটিতে ৮ উইকেটের দাপুটে জয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ।

শাই হোপের সেঞ্চুরিতে বড় স্কোরের আভাস দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু বাংলাদেশি বোলারদের নৈপুণ্যে বেশি রান স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারেননি। ৯ উইকেটে তারা করে ২৬১ রান। জবাবে তিন ফিফটিতে ৪৫ ওভারে ২ উইকেটে ২৬৪ রান করে বাংলাদেশ।

গত ডিসেম্বরেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবশেষ ব্যাটিংয়ে ফিফটি হাঁকান তামিম, সাকিব ও সৌম্য। এবারও তাদের পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংসে দুর্দান্ত জয় পেলো বাংলাদেশ। ২৬২ রানের লক্ষ্যে সৌম্য ও তামিমের প্রায় দেড়শ ছোঁয়া জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ।

কিন্তু তাদের সেঞ্চুরি করতে না পারাটা আক্ষেপ হয়ে থাকলো। সৌম্য ৭৩ আর তামিম ৮০ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। এরপর সাকিবের অপরাজিত ৬১ রানের কল্যাণে ৩০ বল বাকি থাকতে জিতেছে বাংলাদেশ। তার সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৬৮ রানের জুটি গড়তে ৩২ রানে টিকে ছিলেন মুশফিকুর রহিম।

আবাহনীকে ২০তম লিগ শিরোপা জেতাতে ১০৬ ও অপরাজিত ২০৮ রান করেন সৌম্য। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মঙ্গলবার ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে ৪৭ বলে করেন অষ্টম ফিফটি। জেসন হোল্ডারকে বাউন্ডারি মেরে পঞ্চাশ ছোঁন এই বাঁহাতি ওপেনার।

৬৩ রানে সৌম্য জীবন পান শেন ডাউরিচের হাতে। কিন্তু তিন অঙ্কের ঘরে যেতে ব্যর্থ এই বাঁহাতি ওপেনার। রোস্টন চেসের বলটি বাউন্ডারি ছাড়া করতে চেয়েছিলেন সৌম্য। কিন্তু ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়ানো ব্রাভো ভারসাম্য রক্ষা করে অসাধারণ এক ক্যাচ ধরেন। তাতে থামে ৯ চার ও এক ছয়ে সাজানো সৌম্যর ৬৮ বলের ইনিংস।

১৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটিতে সৌম্য কিছুটা আগ্রাসী থাকলেও তামিম ছিলেন রক্ষণাত্মক। প্রথম বাউন্ডারির দেখা তিনি পান দশম ওভারে। তারপর থেকে স্বরূপে খেলে গেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। ৭৮ বলে পান হাফসেঞ্চুরির দেখা। কিন্তু সেটাকে তিন অঙ্কের ঘরে নিতে ব্যর্থ তিনি।

গত বছরের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই সবশেষ সেঞ্চুরি ছিল তামিমের। ডাবলিনে এদিন তিনি থেমেছেন ৮০ রান করে। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের নিচু বলে ফ্লিক করতে গিয়ে জেসন হোল্ডারের ক্যাচ হন তিনি। তার ১১৬ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চার। সাকিবের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৫২ রানের। দুই ওপেনার সেঞ্চুরি করতে না পারলেও জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে গেছেন। যার শেষ তুলির আঁচড় দিয়েছেন সাকিব ও মুশফিক।

৪৫তম ওভারে শেলডন কট্রেলের বলে ১৯ রান নেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। মুশফিক মারেন দুটি ছয়, একটি চার সাকিবের। ৬১ বলে ৩ চার ও ২ ছয় ছিল সাকিবের ইনিংসে। ২৫ বলে দুটি করে চার ও ছয় মারেন মুশফিক।

এর আগে দারুণ শুরু করেন হোপ (১০৯)। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচে শতক পূর্ণ করা এই ব্যাটসম্যান আরেকবার জ্বলে উঠলে বড় সংগ্রহের ভিত পায় ক্যারিবিয়ানরা। কিন্তু বাংলাদেশি বোলারদের দারুণ পারফরম্যান্সে প্রত্যাশিত স্কোর তুলতে পারেনি তারা।

মাশরাফি মুর্তজা (৩/৪৯), মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (২/৪৭), সাকিব আল হাসান (১/৩৩) ও মেহেদী হাসান মিরাজের (১/৩৮) নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বেশিদূর যেতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২ উইকেট নিতে ৮৪ রান খরচ করা মোস্তাফিজুর রহমান বাদে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের সব বোলারের প্রস্তুতিটা হয়েছে দারুণ।

ক্যারিবিয়ানদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার চেস করেছেন ৫১ রান। এছাড়া সুনিল অ্যামব্রিস ৩৮ ও অ্যাশলে নার্স করেন ১৯ রান।

আগামী বৃহস্পতিবার ডাবলিনে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ৫০ ওভারে ২৬১/৯ (হোপ ১০৯, আমব্রিস ৩৮, ব্রাভো ১, চেইস ৫১, কার্টার ১১, হোল্ডার ৪, ডাওরিচ ৬, নার্স ১৯, রোচ ১, কটরেল ৪*, গ্যাব্রিয়েল ০; সাইফ ২/৪৭, মাশরাফি ৩/৪৯, মুস্তাফিজ ২/৮৪, সাকিব ১/৩৩, মিরাজ ১/৩৮)।

বাংলাদেশ : ৪৫ ওভারে ২৬৪/২ (তামিম ৮০, সৌম্য ৭৩, সাকিব ৬১*, মুশফিক ৩২*; কটরেল ০/৪৭, রোচ ০/৩০, গ্যাব্রিয়েল ১/৫৮, হোল্ডার ০/২৭, নার্স ০/৪৬, চেইস ১/৫১)।

ফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।

মান অব দ্য ম্যাচ : শেই হোপ।

ম্যান অব দ্য ফাউন্ডেশন : মাশরাফি মুর্তজা।



 

Show all comments
  • Mohammad Shah Alam ৮ মে, ২০১৯, ৯:২৪ এএম says : 0
    Congratulations Bangladesh Cricket Tigers.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ