পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রকাশ করা হয়েছে চলতি বছরের এসএসসি, দাখিল ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষার ফলাফল। এবার সারা দেশে ১০ শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। এছাড়া জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন। এবার জিপিএ-৫ ছাড়া সব ক্ষেত্রে ‘সূচক’ গত বছরের চেয়ে ভালো। জিপিএ-৫ এবং পাসের হার উভয় ক্ষেত্রেই ছেলেদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে মেয়েরা।
ফলাফল ঘোষণার পর ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্কুল ও মাদরাসায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। নেচে-গেয়ে শিক্ষক ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীরা সফলতা উদযাপন করে। আগামী প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের এই সাফল্যের খবরে বাঁধনহারা আনন্দ যেন ধরে না। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার নামকরা স্কুলগুলোতে ফলাফল ঘোষণার পর অন্যরকম দৃশ্যের অবতারণা হয়। লন্ডনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করে পাস করা শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। ফেল করা শিক্ষার্থীদের নতুন উদ্যমে পড়ালেখায় মনোযোগী হয়ে আগামী বছর পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে শীর্ষে রয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৯১.৬৪ শতাংশ। গত বছর রাজশাহীতে পাসের হার ছিল ৮৬.০৭ শতাংশ। গত বছরের মতো এ বছরও পাসের দিক দিয়ে পিছিয়ে সিলেট শিক্ষা বোর্ড। এ বছর পাসের হার ৭০.৮৩ শতাংশ, যা গত বছর এ হার ছিল ৭০.৪২ শতাংশ।
৮ সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, পাস সব সূচক ঊর্ধ্বমুখী। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল ২৮ হাজার ৬৭৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৫৫৮টি। পরীক্ষা কেন্দ্র, পরীক্ষার্থী সংখ্যা গত বছরের চেয়ে এবার ছিল বেশি। এ বছর শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ হাজার ৫৮৩টি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫৭৪টি। গত বছরের তুলনায় এ বছর এই সংখ্যা বেড়েছে এক হাজার ৯টি। তবে এবার শতকরা একশ’ ভাগ ফেল করেছে ১০৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। অর্থাৎ ১০৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ৮টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। এসময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছর সাধারণ ৮ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হয় ৫ মার্চ।
রেওয়াজ অনুযায়ী, প্রতি বছর পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার দিন সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেন বোর্ডের চেয়ারম্যানরা। পরে দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন। কিন্তু এবার প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির হাতে ফলাফলের সিট তুলে দেয়া হয়। এরপর লন্ডনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন করে পাস করা শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের অসাধ্য কিছুই নেই। একাগ্রতা, অধ্যবসায় এবং পরিশ্রম যেকোনো অসাধ্য সাধন করতে সহায়তা করতে পারে। যারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি, তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এখন থেকে চেষ্টা করলে ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই বাধা অতিক্রম করে ভালো ফল অর্জন করতে পারবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফল করেছে। আমরা চাই সব শিক্ষার্থী পাস করবে, কিন্তু কোনো-না-কোনো কারণে অনেক শিক্ষার্থী পাস করে না। তিনি আরো বলেন, পাসের হার বৃদ্ধিতে আমাদের মন্ত্রীদের কোনো ব্যক্তিগত কৃতিত্বের ব্যাপার নেই। এটি পুরোপুরি শিক্ষার্থী-অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সম্মিলিত কৃতিত্ব।
২০১৯ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ২১ লাখ ২৭ হাজার ৮১৫ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১০ লাখ ৬৮ হাজার ৫২৭ জন ছাত্র এবং ১০ লাখ ৫৯ হাজার ২৮৮ জন ছাত্রী। এর মধ্যে পাস করেছে ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৫ শিক্ষার্থী।
এ বছর শুধু এসএসসিতে পাসের হার ৮২.৮০ শতাংশ। ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল ১৬ লাখ ৯৪ হাজার ৬৫২ জন; যা গত বছর ছিল ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৪২৩ জন। পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৭০ হাজার ২২৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৪ লাখ ৩ হাজার ১৫৭ জন। গত বছর পাস করেছিল ১২ লাখ ৮৯ হাজার ৮০৫ জন। পাসের সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৬১ জন। এর মধ্যে যশোর বোর্ডে ৯০.৮৮, ঢাকা বোর্ডে ৭৯.৬২, রাজশাহী বোর্ডে ৯১.৬৪, দিনাজপুর বোর্ডে ৮৪.১০, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭৮.১১, সিলেট বোর্ডে ৭০.৮৩, বরিশাল বোর্ডে ৭৭.৪১ এবং কুমিল্লা বোর্ডে ৮৭. ১৬ শতাংশ পাস করেছে।
এ দিকে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে ৮৩.০৩ শতাংশ পাস করেছে; যা গত বছর ছিল ৭০. ৮৯ শতাংশ। এ বছর পাসের হার বেড়েছে ১২.১৪। জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ৬ হাজার ২৮৭ জন। গত বছর পেয়েছিল ৩ হাজার ৩৭১ জন। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭২.২৪ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৭১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এ বছর পাসের হার বেড়েছে শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ৪ হাজার ৭৫১ জন; গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৪১৩ জন। এ ছাড়াও এ বছর বিদেশের ৮টি কেন্দ্রে ৪২৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে পাস করেছে ৩৮৯ জন। মোট পাসের হার ৯১.৯৬ ভাগ। বিদেশ কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে মোট জিপিএ পেয়েছে ৫৬ জন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।