Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

শ্রীলংকায় জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ শিবিরের খোঁজ

মুসলমানদের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

শ্রীলংকার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কাত্তানকুত্তিতে ১০ একর ভ‚মিতে স্থাপিত একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের খোঁজ পেয়েছে দেশটির পুলিশ। ইস্টার সানডে হামলার জঙ্গিরা সেখানে বোমা নির্মাণ ও বন্দুক চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, রাজধানী কলম্বোর উত্তরাঞ্চলের নেগোম্বো শহরে মুসলমানদের বাড়ি-ঘর, দোকানপাট ও যানবাহনে হামলা করেছে দেশটির উগ্রপন্থী খ্রিস্টানরা। গতকাল সোমবারের ওই হামলার পর শহরটিতে কারফিউ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। মুসলিমদের ওপর এই হামলার ঘটনার পর দেশটির রোমান ক্যাথলিক চার্চের যাজক উভয় সম্প্রদায়কে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ২১ এপ্রিল দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরোচিত হামলার মূল হোতা হিসেবে সন্দেহভাজন জাহরান হাশেমির বাড়ি যে শহরটিতে, সেটির একটি দরিদ্র আবাসিক এলাকায় দেয়াল দিয়ে ঘেরা এই প্রশিক্ষণ শিবিরের খোঁজ মিলল। সেদিন তিনটি হোটেল ও তিনটি গির্জায় একযোগে বোমা হামলায় ২৫০ জন নিহত ও পাঁচ শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৪২ জন বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন। রোববারের অভিযানে ওই শিবিরটির একপাশের দেয়ালে গর্ত পেয়েছে পুলিশ।
কাত্তানকুত্তিতে লম্বা, বালুময় ওই শিবিরটিতে পাকা চারতলা একটি ওয়াচটাওয়ার রয়েছে। এছাড়াও আম, নারিকেল গাছ, মুরগির খাঁচা ও ছাগল পালার ছাউনি রয়েছে। বাত্তিকালোয়ার এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তারা এই জায়গাটিকে স্বাভাবিক দেখাতে চেয়েছেন। কেউ দেখতে এলে এটিকে খামার বলে মনে করবে। কিন্তু তারা এখানে সন্ত্রাসবাদের চর্চা করতো। শিবিরটিতে অনেকগুলো লম্বা টিউবও পাওয়া গেছে। এগুলো বোমা রাখার জন্য ব্যবহার করা হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, ওই প্লটটির দুই ভ‚মিমালিককে আটক করা হয়েছে।
এদিকে, গতকাল নেগোম্বো শহরে মুসলমানদের দোকানপাট, বাড়িঘর ও যানবাহনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এএফপি বলছে, মুসলিমদের কয়েক ডজন বাড়ি-ঘর, দোকানপাট ও যানবাহন আক্রান্ত হওয়ার কারফিউ কার্যকর করার জন্য শহরটিতে নিরাপত্তাবাহিনীর শত শত সদস্য প্রবেশ করেছেন।
এক ভিডিও বার্তায় কলম্বোর আর্চবিশপ কার্ডিনাল ম্যালকম রনজিৎ বলেছেন, ‘একজন মুসলমানকেও যেন আঘাত করা না হয়, আমি সকল ক্যাথলিক ও খ্রিস্টান ভাই-বোনদের সেই আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ তারা আমাদের ভাই, তারা আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ।’
দেশটির পুলিশের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেছেন, সোমবারের সংঘর্ষের পর নেগোম্বো থেকে অন্তত দু’জনকে গ্রেফতার এবং আরো কয়েকজন সন্দেহভাজন হামলাকারীকে ভিডিও ফুটেজ দেখে সনাক্ত করা হয়েছে। ইস্টার সানডের পর দেশটির পার্লামেন্টে পাস হওয়া জরুরি আইনে এই হামলাকারীদের বিচার হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবারের হামলায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, উত্তেজিত খ্রিস্টানরা নেগোম্বোর মুসলিমদের দোকানপাটে হামলা, তাদের বাড়ি-ঘরের আসবাবপত্র ও জানালা ভাঙচুর এবং যানবাহন উল্টে দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ইস্টার বিস্ফোরণের পরে তৎপর হয়েছে শ্রীলঙ্কা প্রশাসনও। দেশ থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে ছ’শোরও বেশি বিদেশি নাগরিককে। যার মধ্যে রয়েছেন দু’শো মাওলানাও। তারা বৈধ পথেই শ্রীলঙ্কায় এসেছিলেন। কিন্তু ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তারা রয়ে গিয়েছিলেন। তাদের জরিমানা করে শ্রীলঙ্কা থেকে বার করে দেওয়া হয় বলে জানান দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাজিরা অবেবর্ধনে। তাদের পরিচয় জানানো হয়নি। সূত্র: রয়টার্স, টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ