রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা
ঝিনাইদহ সদর ও শৈলকুপার ২১টি ইউনিয়নের নির্বাচনে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের রামদা ও হাতুড়ি বাহিনীর তা-ব, ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি-ধমকি, পোলিং এজেন্ট দিতে বাধা, ভোটকেন্দ্র দখলের হুমকির অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে বিএনপি। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীকাল নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হবে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে জেলা বিএনপির পক্ষে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা উল্লেখ করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মালেক। এ সময় ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি মোঃ মসিউর রহমান, শ্রমিক নেতা আবু বক্কার, এড মুন্সি কামাল আজাদ পাননু, আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, আবুল বাশার বাশি, আকতারুজ্জামান প্রমুখ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হরিণাকু-ু উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হান্নান মোল্লাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে পঙ্গু করে দিয়েছে। হরিণাকু-ুর নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগের সকল চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী মহড়া চালানো হচ্ছে। বিএনপির সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে ভোট কেন্দ্রে গেলে পরের দিন লাশ পড়ে যাবে। এ অবস্থায় হরিণাকু-ুর চাঁদপুর ইউনিয়নের ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নে ৪টি মাইক্রোবাস নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা বিএনপি প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের ভোট কেন্দ্রে গেলে হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকির পাশাপাশি মা-বাপ তুলে গালাগাল করছে। সাগান্না ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান সিরাজের ছেলেকে মারধর করা হয়েছে। ক’বছর আগে শাহজাহান সিরাজকে হত্যা করা হলেও এখনো পরিবারটি বিচার পায়নি। কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নে জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে এবং নিজে ধানের শীষের প্রচার মাইকের রেকর্ডিং কেড়ে নিয়েছে। ওই ইউনিয়নে নৌকার সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে ভোটাররা জিম্মি হয়ে পড়েছে। মহারাজপুর ইউনিয়নে ধানের শীষের প্রচার প্রচারণা বন্ধ করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মাইকে ঘোষণা দিয়ে সময় বেঁধে দিয়েছে এবং ধানের শীষের ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী খুরশিদ আলমকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তেতুলতলা বাজারে আ’লীগ সভা আহ্বান করে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে না যেতে হুমকি দিয়েছে। গত বুধবার ধানের শীষের মাইক ছিনিয়ে নেয় নৌকার সমর্থকরা। মধুহাটি ইউনিয়নে আ.লীগের প্রার্থীর নৌকা বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকরা পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় উল্টো বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। অথচ পত্রিকায় রিপোর্ট বেরিয়েছে নৌকায় আগুন দিয়েছে নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকরা। মিথ্যা মামলার কারণে বিএনপির সমর্থকরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সাধুহাটি ইউনিয়নে ধানের শীষের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সাধুহাটী, ডাকবাংলা, বংকিরাসহ বিভিন্ন বাজারে মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে করে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী পাঠিয়ে নৌকায় ভোট না দিলে ভোটের পর ঠ্যাং ভেঙে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হলিধানি ইউনিয়নে ধানের শীষের প্রচার মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীকে জীবননাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাকে প্রচার প্রচারণা চালাতে দেওয়া হচ্ছে না। গান্না ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর সন্ত্রাসী কর্মকা-ে ভোটাররা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ধানের শীষের কোনো প্রতীক টাঙ্গাতে দেওয়া হচ্ছে না। ইতিমধ্যে স্বতন্ত্র এক প্রার্থীকে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে। গান্না, বেলেখাল, শৈলমারী, চ-ীপুর, বেতাইসহ বিভিন্ন বাজারে প্রচার-প্রচারণা চালাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পথে পথে লাঠি নিয়ে মহড়া দিচ্ছে নৌকার সমর্থকরা। আ.লীগের ক্যাডার বাহিনী রামদা হাতে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট কেন্দ্রে না যেতে হুমকি দিচ্ছে। চ-ীপুর গ্রামের বিএনপি কর্মী কামাল ও জাহাঙ্গীরকে এলাকার সন্ত্রাসী কামরুল মীর ডেকে নিয়ে মারধর করেছে। সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, শৈলকুপা উপজেলায় আগামী ৪ জুন ৭ম দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীদেরকে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণার সুুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তাদেরকে ডেকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। শৈলকুপার ১৪টি ইউনিয়নে আ’লীগে-আ’লীগে মারামারি করে উল্টো বিএনপির নামে মামলা সাজানো হচ্ছে। বগুড়া, দুধসর, উমেদপুর, মির্জাপুর, ত্রিবেনী, ফুলহরি, আবাইপুর, হাকিমপুর, কাচেরকোল, ধলহরাচন্দ্রসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। কিন্তু এ সরকার গণতন্ত্রের কবর রচনা করে গ্রাম থেকে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। মহল্লায় মহল্লায় গডফাদার তৈরি করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের মাধ্যমে স্বেরাচারী রাজত্ব কায়েম করেছে। দেশের প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন দুটোই সরকারের পদলেহী। তাদের কাছে কোনো সুবিচার পাওয়া যাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।