Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধান নিয়ে বিপাকে ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত ফুলবাড়ীর কৃষক

প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. আবু শহীদ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ৩২,৫৫৫ জন কৃষকের মধ্যে ২৮,৭৬৪ জন কৃষকেই সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারছেন না তাদের উৎপাদিত বোরো ধান। আর তাই ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা। অন্যান্য এলাকার ন্যায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে এখন বোরো ধান বিক্রি নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষক। বাজারে ক্রেতা না থাকায় তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রান্তিক চাষিরা পানির দামে বোরো ধান বিক্রি করে মিটাচ্ছে মজুরের খরচ। বর্ষা মৌসুমের এই ধান বিক্রি করতে না পেরে ধান রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও বিপাকে পড়েছে ধান চাষিরা। এদিকে চাল উৎপাদনকারী মিল মালিকেরা বলছেন, তাদের উৎপাদিত আমন মৌসুমের চাল এখন পর্যন্ত বিক্রি করতে পারায় ব্যাংকের ঋণও পরিশোধ হয়নি। তাই তারা নতুন করে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ধান কিনতে পারছেন না। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এটি এম হামিম আশরাফ বলেন, ফুলবাড়ী উপজেলায় ৩২ হাজার ৫৫৫টি সরকার রেজিস্টারভুক্ত কৃষক পরিবার এবং রেজিস্ট্রেশন ছাড়াও প্রায় ১০ হাজারের অধিক কৃষক রয়েছেন। এই মৌসুমে বোরো ধান উৎপাদন হয়েছে ৮৫ হাজার ৪৯১ মে.টন বা ২১ লাখ ৩৭ হাজার ২৭৫ মণ, সেখানে সরকার সরাসরি কৃষকের নিকট ধান ক্রয় করছে ১ হাজার ৯৭৫ মে.টন। কৃষি অফিসের হিসাব অনুযায়ী একজন কৃষক ৪০ কেজি থেকে ১০০ কেজি পর্যন্ত ধান সরকারের নিকট বিক্রি করতে পারবে। এতে ৩২ হাজার ৫৫৫ জন কৃষকের মধ্যে সরকারের নিকট ধান বিক্রি করতে পারবে মাত্র ৩ হাজার ৭শ ৯১ জন কৃষক। সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের হিসাব অনুযায়ী বাকি ২৮,৭৬৪ জন নিবন্ধিত কৃষককে ধান বিক্রি করতে হবে খোলা বাজারে। কৃষি অফিস সূত্রে জানায়, উৎপাদিত বোরো ধানের মধ্যে এই উপজেলায় খাদ্য চাহিদা রয়েছে ২৩ হাজার ২২ টন। সরকার ক্রয় করছে ১ হাজার ৯শ ৭৫ মে.টন। তবে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা বলেন, গত বোরো মৌসুমে মিলারদের মাধ্যমে ৭ হাজার ৫শ ৩০ মে.টন চাল ক্রয় করা হয়েছে। সেই হিসাব অনুযায়ী উপজেলার চাহিদা পূরণ হওয়ার পরেও উদ্বৃদ্ধ থাকবে ৬০ হাজার মে.টন ধান। যা বিক্রি করার জায়গা নেই। এ কারণে ধান বিক্রি করতে পারছেন না উপজেলার প্রান্তিক ধান চাষিরা। ধান চাষি এজাজুল হক মুন্সি বলেন, বাজারে বোরো ধানের দাম না থাকায় প্রতি একর জমিতে কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে ৭ থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে প্রান্তিক চাষিরা ঋণের দায়ে জর্জরিত হয়ে যাচ্ছে। একই কথা বলেন, উপজেলার বারোকোনা গ্রামের ধান চাষি সৈয়দ সামিউল ইসলাম সোহেল, মহসিন আলী সরকার ও স্বজনপুকুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক মিজানুর রহমান মানিক। উপজেলা চাল কল মালিক সমিতির সভাপতি সামিউল আলম বলেন, মিল মালিকেরা তাদের উৎপাদিত চাল বাজারে বিক্রি করতে পারছে না। তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত থেকে আমদানি করা নি¤œমানের চাল নি¤œদরে বাজারে সয়লাব হওয়ায় দেশীয় চালের বাজারে ধস নেমেছে। তিনি আরো বলেন, অনেক মিল মালিকরাই এখন পর্যন্ত তাদের ব্যাংক ঋণের বিপরীতে মজুদ করা চাল বাজারে বিক্রি করতে পারেনি। যার ফলে ব্যবসায়ীরা বোরো ধান কিনতে পারছে না বলেই বোরো ধানের বাজারে ধস নেমেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধান নিয়ে বিপাকে ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত ফুলবাড়ীর কৃষক
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ