Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ফনির প্রভাবে শরণখোলায় পাউবো’র রিং বাঁধ উপচে ফসলী জমিতে জোয়ারের পানি প্রবেশ, এলাকায় আতংক

প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি সম্পন, শেল্টারে যাচ্ছে এলাকাবাসী

শরণখোলা উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০১৯, ৫:৪৫ পিএম

বাগেরহাটের শরণখোলায় ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাবে পাউবো’র ৩৫/১ পোল্ডারের বেরিবাঁধে সম্প্রতি নির্মিত রিং বাঁধ উপচে পড়ে ফসলী জমিতে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। তা ভাটিতে পুনরায় তা নেমে গেছে। এছাড়া, রিং বাঁধের কিছু অংশ ধ্বসে পড়েছে। জোয়ারের সময় ওই এলাকার অর্ধ-শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছিল। পরবর্তী জোয়ারে রিং বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তির্ন এলাকা তলিয়ে যাবার আশংকা করা হচ্ছে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ কামরুজ্জামান জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়নের বোর্ড কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। 

এদিকে, শরণখোলাসহ দক্ষিানাঞ্চলে ৭ নং বিপদ সংকেত থাকায় সকাল থেকে সাউথাখালীসহ উপজেলার কয়েকটি সাইক্লোন শেল্টারে বৃদ্ধ, প্রতিবন্দী ও অসুস্থ্য রোগীসহ অর্ধ-সহ¯্রাধিক মানুষকে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার থেকে আবহাওয়ার অবস্থা থমথমে থাকলেও শুক্রবার দুপুর থেকে হালকা বৃস্টি হতে শুরু করেছে। বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার মতো কিছু দৃশ্যমান নেই। তবে, গোটা উপজেলাবাসীর মাঝে একটা অজানা টেনশন কাজ করছে। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টি ভয়ংকর রূপ ধারন করার পাশাপাশি জ্বলোচ্ছাস হতে পারে - এ কথা মাতায় রেখে অনেকেই নগদ টাকা, মূল্যবান জিনিস ও কাগজপত্র নিরাপদে রাখতে শুরু করেছেন । এলাকাবাসী, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বিভাগ সুত্রে জানা যায়, ফনির প্রভাবে শুক্রবার সকালে শরণখোলার বলেশ্বর নদীতে জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগী ও গাবতলা এলাকার কয়েকটি পয়েন্টে বেরিবাধ ভেঙ্গে যায়। পরে ওই স্থানগুলিতে রিং বাঁধ দিয়ে সামাল দেয়া হয়।
বগী এলাকার সফিকুল ইসলাম, সফেজ খাঁন, দেলোয়ার বয়াতী, মিজানুর রহমান, রুস্তুম হাওলাদার ও সাইয়েদুর রহমান জানান, বগী এলাকায় সকালে রিং বাঁধ উপচে পড়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় তারা রাতের জোয়ার নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এলাকার ইউপি সদস্য রিয়াদুল পঞ্চায়েত ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, নদী শাসন ব্যবস্থা না রেখে সরকার আধুনিক, উচু ও টেকসই বেরিবাঁধ নির্মান করছে। এতো অর্থ দিয়ে নির্মানাধীন এ বেরিবাঁধের স্থায়ীত্ব নিয়ে সকলের মনে শংকা রয়েছে।
সাউথাখালী ইউপি চেয়ারম্যান অসুস্থ্য থাকায় প্যানেল চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন খলিল জানান, রিং বাঁধ একটু নীচু হওয়ায় সেখান থেকে পানি উপচে পড়ে ফসলের মাঠে নদীর পানি প্রবেশ করে তা আবার নেমে গেছে। মাঠে কোন ফসল না থাকায় কৃষির কোন ক্ষতি সাধিত হয়নি। তবে, ওই এলাকার কিছু পরিবার বিরম্বনার মধ্যে পড়েছেন। তবে, রাতের জোয়ার নিয়ে গ্রামবাসী টেনশনে রয়েছেন। তিনি নদী শাসন ব্যবস্থা করে বাঁধ নির্মানের দাবী করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ কামরুজ্জামান সাউথখালী ইউয়িনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসে জানান, রিং বাঁধ উপচে কিছু পানি প্রবেশ করলেও তা বেরিয়ে গেছে। ফনি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া রয়েছে। সকল সরকারী কর্মকর্তা, এনজিও ও সিপিপি’র সদস্য তৎপর রয়েছে। তিনি উপজেলাবাসীকে কাছাকাছি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেযার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ