বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর ড. এস. এম ইমামুল হককে তার মেয়াদের অবশিষ্ট সময় ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক ‘অফিস আদেশ’এ প্রেসিডেন্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় সমুহের চ্যান্সেলর আবদুল হামিদ এ্যাডভোকেট এ আদেশ প্রদান করেন। এতে ভিসি’র ব্যক্তিগত ও প্রশাসনিক কারন দেখিয়ে ১১ এপ্রিল থেকে ২৬ মে পর্যন্ত পূর্ণমেয়াদে ছুটি প্রদান করা হয়। ট্রেজারার অধ্যাপক ড. এ কে এম মাহবুব হাসান নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত ভিসির রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন।
এদিকে ভিসির পূর্ণমেয়াদের ছুটির খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি থেকে দুপুর ২টায় আনন্দ মিছিল বের করে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একত্রে অংশ নেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিজয়ী শ্লোগান প্রদান করে ।
শিক্ষার্থীরা জানায়,‘স্বৈরাচার ভিসির পতন হয়েছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় নতুন করে মুক্তি পেয়েছে।’ ছাত্র-শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তারা আমাদের বিষয়টি বাস্তবতা ও গুরুত্বের সাথে দেখে ভিসিকে পূর্ণমেয়াদে ছুটিতে পাঠিয়েছেন।’ উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ মহান স্বধীনতা ও জাতীয় দিবসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে বৈকালিক চা-চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ না জানানোয় শিক্ষার্থীরা এ অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। এর প্রেক্ষিতে ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দিয়ে হল থেকে নেমে যাওয়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এমতাবস্থায় হলে অবস্থান করে ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে ভিসি দুঃখ প্রকাশ করলেও তাতে কাজ না হওয়ায় গত ৬ এপ্রিল স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা সমঝোতা বৈঠক করেন। কিন্তু তা কোনো কাজে আসেনি। পরে ১০ এপ্রিল ১৫ দিনের ছুটিতে যান ভিসি। এ ছুটি প্রত্যাখ্যান করে ভিসির পদত্যাগ অথবা পূর্ণকালীন ছুটি চেয়ে ৩দিন ধরে অনশন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এতে ১০ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরেন। এ অবস্থায় অধ্যাপক মো. হানিফের নেতৃত্বে বরিশাল বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষাবিদ ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ক্যাম্পাসে গিয়ে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে সোমবার পর্যন্ত অনশন স্থগিত করান। আর সোমবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর অনুমোদনক্রমে পূর্ণমেয়াদে ছুটিতে পাঠান হল ভিসি প্রফেসর ড. এস. এম ইমামুল হককে।