পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘দৃশ্যত গণতন্ত্র হচ্ছে এমন এক ব্যবস্থা যেখানে কোন উপযুক্ত ইস্যু ছাড়া প্রচুর অর্থ খরচ করে অনেকগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং তারাই প্রার্থী হন যারা খুব সহজেই বিনিময়যোগ্য কিংবা বিক্রি হয়ে যান’ (উইল রজার্স)। মার্কিন লেখকের এই উক্তি যেন চাক্ষুস হয়ে ধরা দিয়েছে ঐক্যফ্রন্টের এমপিদের দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে শপথ নেয়া বিতর্ক। দেশে বর্তমানে রাজনীতি বলতে কিছু নেই। বিএনপির এমপিদের ‘শপথ’ ইস্যুতে কিছু ‘গরম কথাবার্তা’ শোনা গেলেও দেশের রাজনীতিতে গুমোট অবস্থা। ঝড়ের আগে যেমন গুমোট আবহাওয়া অস্বস্তির কারণ হয়; গুমোট রাজনীতিতে বর্তমান তেমন অবস্থা বিরাজমান। দক্ষ মাঝির মতোই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, ১৪ দলীয় জোট, নিয়ন্ত্রিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, মাঠের বিরোধী দল বিএনপি, গণফোরাম, বাম দল, জামায়াত, ইসলামী দল সর্বত্রই অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজমান। অনিশ্চয়তা ও বিশ্বাসহীনতা যেন সবকিছুই গ্রাস করেছে। বিরোধী শিবিরের রাজনীতির অবস্থা আরো করুণ-অগোছালো। স্বাধীনতার ৪৮ বছরে ‘বিরোধী দল বিহীন’ এমন নজীরবিহীন রাজনীতি দেশের মানুষ দেখেনি।
ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের ১৪৯তম জন্মবার্ষিকীর এক অনুষ্ঠানে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘এই রাষ্ট্রটি একেবারেই লুটেরাদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এ কথা শুনলে আমাদের যারা শাসন করছেন বা সরকারে আছেন, তারা হয়তো রাগ করতে পারেন’। ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে ‘জনআক্সক্ষার বাংলাদেশ’ নামে নতুন রাজনৈতিক সংগঠন আত্মপ্রকাশের পর গতকাল আওয়ামী লীগ নেতা ও ১৪ দলীয় জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, জামায়াত নতুন রূপে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের এই উদ্দেশ্য অজানা। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে’। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশে একটি গভীর সংকট বিরাজ করছে। এ সংকট জাতীয় জীবনে, সমাজ জীবনে, রাষ্ট্রীয় জীবনে এবং আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও সৃষ্টি হয়েছে’। এই তিন নেতার কথাতেই ‘বর্তমান চিত্র’ উঠে এসেছে।
দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের উক্তিই মোহাম্মদ নাসিম ও রাশেদ খান মেননের মুখ থেকে বের হয়েছে। বিশষজ্ঞরা প্রায়ই বলেন, ‘রাজনীতি যখন থাকেন না তখন অন্য অপশক্তি সেই সুযোগ নিতে পারে’। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন ‘ঢাকা ফোরাম’ নামের এক সংগঠনের সেমিনারে বলেছেন, দেশে ভোটের রাজনীতির মৃত্যু হয়েছে। ১৭ কোটি মানুষ অন্যায় অবিচারের কাছে অসহায়। দেশের রাষ্ট্রীয় শক্তির ভয়ভীতির আতঙ্কে রয়েছি। ভোটাধিকার রক্ষা করতে না পারার ব্যর্থতা দলীয় রাজনীতির ব্যর্থতা নয়, আমাদের স্বাধীনতার ব্যর্থতা।
দেশে বিরোধী দলবিহীন এমন রাজনীতি অতীতে দেখা যায়নি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অবিসম্বাদিত নেতা। তাঁর সামনে দাঁড়ানোর কেউ ছিল না। সেই সময় ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৯৩ আসন। জাসদ এক, জাতীয় লীগ এক এবং অন্যান্যরা পেয়েছিলেন ৫টি আসন। বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে পারেন এমন পরিস্থিতি ছিল না। সে সময়ই আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যাপ, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের নাপ, জাসদ জনগণের অধিকার আদায়ের দাবিতে সরকারকে দিশেহারা করে ফেলেছিল। অনেক সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বিরোধিতার মুখে পড়েন। অথচ এখন বিরোধিতা ছাড়াই যা ইচ্ছে সরকার তাই করছে। বিরোধিতা দূরের কথা স্তুুতিতে ভরিয়ে দেয়া হচ্ছে সরকারের চরণ। সরকারের তোষামোদীর জন্য সিন্ডিকেট গঠন করা হয়েছে। তারা মিডিয়া ও টিভির টকশোতে পালাকরে কেরাস গাইছেন।
উপনিবেশিক শাসনামলে নির্বাচন ছিল না। তারপরও রাজনীতি হয়েছে আন্দোলন হয়েছে। পাকিস্তান আমলে রাজপথ কাঁপানো আন্দোলন হয়েছে। রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির বয়ে সরকার থাকতো আতঙ্কিত। এখন তেমন কিছুই নেই। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে জাতীয় সংসদে ‘বিরোধী দল বলতে কিছু’ নেই। দশম সংসদে ছিল গৃহপালিত বিরোধী দল; বর্তমানে সরকার নিয়ন্ত্রিত বিরোধী দল। বিরোধী দলের নেতারাও জানেন না তাদের কাজ কি? জনগণের অধিকারের কথা দূরে থাক; নিজের ইচ্ছা মতো কিছুই বলতে পারেন না। ক্ষমতাসীনদের আদেশ-নির্দেশে তারা পুতুলের মতোই নাচেন। কি করতে হবে কি বলতে হবে সে সম্পর্কে নির্দেশনা দেয়া হয়। অনুগত দাসের মতোই তারা সেগুলো করে থাকেন। যারা মাঠের বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত সেই বিএনপির সারা দেশে ব্যাপক জনসমর্থক। সাংগঠনিক শক্তিও কম নয়। কিন্তু নেতৃত্বের ব্যর্থতা এবং নেতৃত্বের অভাবে জনগণ থেকে তারাও যোজন যোজন মাইল দূরে। দুর্বল চিত্তের লোকজন দলটির নেতৃত্বে থাকায় ‘ছায়া দেখেও ভূতের ভয়ে’ তারা কেপে উঠেন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিরোধী দলের রাজনীতিকদের ব্যর্থতার কারণেই ভোটের অধিকার হারানো মানুষ রাজপথে নামছে না। গণতন্ত্রের এ সংকট থেকে মুক্তি পেতে গণআন্দোলন প্রয়োজন। কিন্তু নেতৃত্বে ব্যর্থতায় তা হচ্ছে না। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল অশুভ আঁতাতের ফসল। সরকার, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই অশুভ আঁতাত করায় রাজনীতি হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। মানুষ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া তথা নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বর্তমান সময়ে মানুষ চরম অস্থিরতার মধ্যে বসবাস করছে। ন্যূনতম নাগরিক অধিকার নেই কারোই। সে সুযোগ নিয়ে বিপথগামী চক্র প্রভাব বিস্তার করে পুরো রাষ্ট্রকে করায়ত্ত করতে তৎপর হতে পারে। অনতিবিলম্বে চলমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সংস্কার করতে হবে।
বিএনপির এখন বেহাল দশা। ক্ষমতার বাইরে থেকেও জনগণ থেকে যোজন যোজন মাইল দূরে। দলটি এখন শহীদ জিয়ার আদর্শের বহুমুখী রাজনীতিতে নেই। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বাইরে। যাদের ওপর নেতৃত্ব তাদের মাথার ওপর ঝুলছে অসংখ্য মামলার খড়গ। বেশ নাজুক হয়ে পড়েছে দলটির সংগঠনিক চেইন। এমন ক্রান্তিকালে বিভিন্ন ইস্যুতে মতভিন্নতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্রমেই বাড়ছে দ্ব›দ্ব। নেতাকর্মীরা চায় দিক নির্দেশনা। জাতীয় ইস্যুতে আপোষহীন আন্দোলন। বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে লাগাতার কর্মসূচি। ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত ইস্যু, দেশের ভিতরে নানা সংকট এবং সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ইত্যাদি ইস্যুকে মাঠ কাঁপানো কর্মসূচি। কিন্তু দলের নেতৃত্ব কার্যত বিদেশমুখী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মতোই হঠাৎ ‘দিল্লিমুখী চেতনার’ প্রতি দৌড়ঝাঁপ দেশের আলেম-ওলামা-মাশায়েখদের দলটি থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। কর্মসূচি ও দিক-নির্দেশনা না থাকায় মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে অস্থিরতা। নির্বাচনের চার মাসেও কি করবে দলটি তা ঠিক করতে পারেনি। এরই মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী দলের সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ ইস্যু দলকে আরো বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। গণফোরামের দুইজন এমপি হিসেবে শপথ নেয়ার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে শরীদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। আবার বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের নেই কোনো কর্মসূচি। জোটের শরিক জামায়াতের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ ইস্যুতে অনেক আগে থেকেই বিএনপির দুরত্ব। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী জোট হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর জামায়াত কার্যত বিএনপির কাছে অনেকটাই অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়ে। অন্যদিকে জামায়াতের মধ্যে অনেক দিন ধরে চলা গৃহবিবাদে যোগ হয়েছে আনুষ্ঠানিক মাত্রা। ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের বোমা ফাটানো ঘোষণার পর গত ২৭ এপ্রিল জামায়াতের সংস্কারপন্থী নেতারা নতুন দল গঠনের ঘোষণা দেন। আবার ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন প্রতিষ্ঠিত গণফোরামেও দ্ব›দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে।
জাতীয় সংসদের নিয়ন্ত্রিক বিরোধী দল জাতীয় পার্টিতে দীর্ঘদিন থেকে ‘রাজনীতি উধাও’। ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন হিসেবে সাংগঠনিক কাঠামো টিকিয়ে রেখেছে দলটি। সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদে বিরোধী দল অপরিহার্য। সংসদের বিরোধী দল হিসেবে তাদের ভূমিকা কেমন হবে সেটা জাপার নেতারা জানেন না। সরকার যখন যা বলার নির্দেশ দেবে, যখন কর্মসূচি পালনের আদেশ দেবে তখন তারা সেগুলো পালন করবে। এর ভিতরে দলের নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধী প্রকাশ্য রুপ নিয়েছে। এরশাদের অবর্তমানে দলের নেতৃত্ব জিএম কাদেরকে ‘উইল’ করে দেয়া, পরবর্তীতে তা বাতিল এবং নতুন করে রওশন এরশাদকে বিরোধী দলের উপনেতা নিয়োগ, এরশাদের সম্পদ লুটতরাজ ঠেকাতে থানায় জিডিসহ নানান কর্মপন্থা জাপাকে কার্যত রাজনৈতিক দলের অবস্থান থেকে নামিয়ে ‘কর্পোরেট হাউজে’ পরিণত করেছে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটেও অস্বস্তি অস্থিরতা চোখে পড়ার মতোই। শরীক দলগুলো নানাভাবেই নিজেদের অস্বস্তি এবং না পাওয়ার বেদনার কথা তুলে ধরছেন। হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেননকে মন্ত্রী না করায় তারা সরকারের ওপর মহাখ্যাপ্পা। দুই নেতা সরকারের সমালোচনা করে বক্তৃতা বিবৃতি দিচ্ছেন। আবার তাদের দলের ভেতরেও চলছে অস্থিরতা। রাশেদ খান মেননের স্ত্রীকে সংরক্ষিত আসনে এমপি করায় দলের বৃহৎ অংশ এখন পৃথক ওয়ার্কার্স পার্টি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। কয়েক দফায় ভেঙ্গে যাওয়া ওয়ার্কার্স পার্টি আবারও ভাঙনের মুখে পড়তে যাচ্ছে। হাসানুল হক ইনুর জাসদ ভেঙে গেছে বিগত জাতীয় কাউন্সিলে। শরীফ নুরুল আম্বিয়া, মঈন উদ্দিন খান বাদল, নাজমুল হক প্রধানরা ১৪ দলীয় জোটের শরীক হিসেবে জাসদের একাংশ নিয়ে সক্রিয় রয়েছেন। আবার হাসানুল হক ইনুর গ্রুপের শিরিন আখতার প্রতিমন্ত্রীর জন্য দেন-দরবার করছেন। তাকে মন্ত্রী করা হলে আবার জাসদ ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বলে দলটির একাধিক নেতা ইঙ্গিত দেন। দীলিপ বড়–য়ার সাম্যবাদী দল ইতোমধ্যেই দুই টুকরো হয়ে গেছে। গণতন্ত্রী পার্টি নির্বাচনে ১৬টি আসন চেয়ে কিছুই না পেয়ে ‘না পাওয়ার বেদনায়’ অস্থির। অন্যান্য দলের নেতাদের মধ্যে ক্ষমতায় থেকে ‘কিছু না পাওয়ার যন্ত্রণা’ থেকে চলছে অস্থিরতা। আবার আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অনেকেই রয়েছেন মনোকষ্টে। মন্ত্রিত্ব না পাওয়া এবং দলের জুনিয়রদের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে পড়ায় তারাও আছেন অস্বস্তিকর অবস্থায়। আবার যারা মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন তাদের অনেকেই অস্বস্তিতে সময় পাড় করছেন। দায়িত্বে থাকার পরও কাজেকর্মে তারা জানেন না কখন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা বিভিন্ন ইস্যুতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন; অথচ তারা থাকেন অন্ধকারে। এ নিয়ে বিভিন্ন যায়গায় এমপি বমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও এমপি বনাম প্রশাসনিক কর্মকর্তার মধ্যে চলছে বিরোধ। জার্মান-আমেরিকান সমাজতান্ত্রিক লেখক অস্কার আমেরিঙ্গার বলেছেন, ‘হারি কিংবা জিতি, নির্বাচনের পর পরই আমরা শপিং করতে যাব।’ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি অংশ এবং তাদের সমর্থিত বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক-পেশাজীবীদের জার্মান-আমেরিকান ওই লেখকের ‘শপিং করতে যাব’ অবস্থা। তারা ক্ষমতা উপভোগ করছেন। আর মার্কিন যুক্তরাষ্টের লেখক গোর ভিদাল এর উক্তি ‘রাজনীতি হচ্ছে খুব ভদ্রভাবে গরিবদের থেকে ভোট ও ধনীদের থেকে নির্বাচনের জন্য চাঁদা আদায়ের একটি প্রক্রিয়া; যাতে উভয় পক্ষকেই এই ভরসা দেয়া হয় যে তাদেরকে অন্য পক্ষের হাত থেকে রক্ষা করা হবে’। এমপি মন্ত্রী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন যন্ত্রের কর্মরতদের অবস্থা যেন মার্কিন লেখক গোর ভিদাল এর উক্তির অনুরূপ। প্রশাসন ও এমপিরা বিতর্কিত নির্বাচনের পর একে অন্যকে কোথাও রক্ষা কোথাও প্রতিহত করতে ব্যস্ত। এ অবস্থায় রাজনীতি হয়ে পড়েছে নির্জীব।
এ প্রসঙ্গে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দেশের রাজনীতি এখন সরকারি দল কেন্দ্রিক। আন্তর্জাতিক নিবন্ধগুলোতে বাংলাদেশের সরকারকে কর্তৃত্ববাদী সরকার বলা হচ্ছে। বিএনপি থেকে আরও চারজন সংসদে যোগ দিলে তাতে ‘কর্তৃত্ববাদী সরকারের’ যে আবরণ তা কি ঘোচাতে পারবে না। তবে সরকার বলতে পারে- সংসদ অংশীদারিত্বমূলক হয়ে গেছে। দেশে নির্বাচন যে ঠিক মতো হয়নি তা প্রতিষ্ঠিত সত্য। এটি নিয়ে দেশে-বিদেশে কোনো বিতর্ক নেই। দেশে গণতন্ত্রের ভীত যতোদিন পর্যন্ত শক্ত না হবে ততোদিন পর্যন্ত কে এলো, কে গেলো বা পাঁচজন শপথ নিলো কী নিলো না এর মাধ্যমে গণতন্ত্রের মুখ উজ্জ্বল হবে না। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের বুঝতে হবে ৭১, ৫২, ৪৭ আর বর্তমান সময় এক নয়। আমরা গভীর সংকটে রয়েছি। আওয়ামী লীগ কি জিনিস বুঝতে হবে। আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, বিএনপি মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা আসলে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। আমরা মনে করি নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকেই যারা শপথ নিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই এবং স্বাগত জানাই। আশা করি যেসব সংসদ সদস্য শপথ নেননি তারা নৈতিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই শপথ নেবেন। জানতে চাইলে ১৪ দলীয় জোটের শরীক ওয়ার্কার্স পার্টির এক নেতা বলেন, ১৪ দলীয় জোটে মিটিং এ থাকি না। ১৪ দলের মিটিয়ে গিয়ে লাভ নেই। জোটের শরীকদের অনেকেই মিটিং এ যায় না। গিয়ে লাভ কি? আরেক নেতা বলেন, ওরা জোটের নামে ক্ষমতায় গিয়ে সবকিছু খাবে, শরীকদের কিছুই দেবে না তা হয় না। এ জন্যই মিটিং এ যাই না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।