Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে চন্দনাইশের লেবুচাষিদের মুখ মলিন

প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এম এ মোহসীন, চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) থেকে

চট্টগ্রামের চন্দনাইশে অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও লেবুর ব্যাপর চাষাবাদ হয়েছে। তবে বৃষ্টির অভাবে আশানুরূপ ফলন হয়নি। এ বছরে তীব্র তাবদাহে লেবুর চাহিদা অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তারা জানান। তীব্র তাপদাহে মানুষের একটু তুষ্টির জন্য বিভিন্ন কৃত্রিম কোমল পানীয় থেকে লেবুর শরবত এর চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রামের চন্দনাইশের লেবু চট্টগ্রামের চাহিদা মিটিয়ে দেশের সর্বত্র রপ্তানি হচ্ছে। বিশেষ করে চাষির চেয়ে লেবুর বেপারীরা বাংলাদেশের রাজধানী ছাড়াও দেশের আনাচে-কানাচে লেবুর বিক্রি করে বেপারীরা আর্থিক উপার্জন করে তাদের পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করছে। লেবু চাষিদের চেয়ে মধ্যস্বত্বভোগী বেপারীরা অধিক লাভবান হচ্ছে। চন্দনাইশের ধোপাছড়ি, দিয়াকুল, হাশিমপুর, রায়জোয়ারা, লর্ড এলাহাবাদ, কাঞ্চননগর এসব পাহাড়ি অঞ্চলে লেবু চাষের ব্যাপক ফলন হয়। লেবু চাষি নটন দেব রায় ও আলমগীর জানান, তাদেরকে লেবু চাষের জন্য সরকারিভাবে সাহায্য পেলে তারা লেবু ফলনে আরো ব্যাপক সফলতা লাভ করবে। দোহাজারী জামিরজুরী রায় জোয়ারা থেকে নাজিম উদ্দিন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছরও আরো অধিক চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তীব্র তাপদাহে ও পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে ইফতারি কে সুস্বাদু করার জন্য রোজাদারের কাছে লেবুরও চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট। চন্দনাইশের পল্লী এলাকার গ্রামীণ হাটবাজার ছাড়াও দোহাজারী হাজারী হাট, হাশিমপুর বাগিচা হাট, গাছবাড়ীয়া খাঁনহাট, কাঞ্চননগর বাদামতল, রৌশনহাট ছাড়াও চন্দনাইশের বিভিন্ন হাটবাজারে লেবুর বাজার বসে। এসব বাজারে লেবু বেপারীরা এসে গৃহস্থ চাষিদের কাছ থেকে লেবু কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সরবরাহ করে। এ বছর দফায় দফায় ভারী বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলের কারণে লেবুর বাগানে ফুল ঝরে যাওয়ার কারণে কাক্সিক্ষত উৎপাদন চাষিরা পায়নি। তীব্র তাপদাহের কারণে কোন কোন লেবুর বাগানে গাছগুলো মরে যাচ্ছে। মহাজনের কাছ থেকে লেবু চাষিরা মুনাফায় টাকা নিয়ে দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরি দিয়ে দিনমজুর দিয়ে লেবুর বাগান করতে হয়েছে। বাগানে পরিচর্যা, শ্রমিকের মজুরি তথা লেবুর চারা রোপণ থেকে শুরু করে লেবুর ফলন দেয়া পর্যন্ত পরিচর্যা করার খরচ ফুসিয়ে নিতে বাগানের মালিকরা হিমশিম খাচ্ছে। যাদের নিজস্ব বাগানে বাগান করার ভূমি বা পাহাড় নেই তারা বাৎসরিক লাগিয়তে বা পাহাড়ি ভূমি বর্গা নিয়ে লেবুর চাষাবাদ করেন। চাষিরা লেবুর বড়, ছোট, মাঝারি বিভিন্ন আকারের লেবু প্রতি শত ১০০ থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন বেপারিদের কাছে। আগামী রমজানের শেষ পর্যন্ত লেবু ধরে রাখার জন্য বাগানের মালিকা পরিচর্যা করে যাচ্ছে। এসব লেবু চাষিদেরকে সরকারিভাবে আর্থিক তথা ঋণ বিতরণে সহায়তা করলে লেবুর বাম্পার ফলনে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে দেশের আর্থিক উন্নয়নে সহায়তা করতে পারবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। লেবুর বেপারী আবদুল আজিজ ও মো. ইয়াকুব জানান, তারা চন্দনাইশে উৎপাদিত লেবু বিক্রির জন্য জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করার দিন যাপন করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে চন্দনাইশের লেবুচাষিদের মুখ মলিন
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ