নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে শুভসূচনা করল বাংলাদেশের মেয়েরা। সোমবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশ ২-০ গোলে হারায় সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। বিজয়ী দলের হয়ে ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্না ও কৃষ্ণা রানী সরকার একটি করে গোল করেন।
বাফুফের কোনো অনুষ্ঠানই যে নির্দিষ্ট সময় শুরু হয়না তার প্রমাণ আবারো মিললো। সংবাদ সম্মেলন থেকে শুরু করে সভা, সেমিনার- সবকিছুর মতই এবার আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচও নির্দিষ্ট সময়ের পরে শুরু করেছে বাফুফে। কাল বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা ৬টায়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তা শুরু হয়েছে ১৫ মিনিট পর, সন্ধ্যায় সোয়া ৬টায়।
টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া পাঁচ বিদেশী দলের মধ্যে চারটিই এক বাক্যে ফেভারিট মেনেছিল বাংলাদেশকে। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাত নিজেদেরকেই ফেভারিট বলেছিল। স্বঘোষিত সেই ফেভারিটদেরই মাত্র ৩০ মিনিটে কুপোকাত করে ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় তুলে নেয় লাল-সবুজের মেয়েরা।
‘এগিয়ে যাওয়ার নেই মানা’ এই স্লোগানে প্রথমবারের মতো আয়োজিত বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা গোল্ডকাপের প্রথম ম্যাচে সুস্পষ্ট প্রাধান্য ছিল বাংলাদেশ দলের। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করে খেলে মিশরাত জাহান মৌসুমী বাহিনী। আরব আমিরাতকে ডজন খানেক গোলের ব্যবধানে হারানোর সুযোগ এসেছিল। কিন্তু স্বপ্না, কৃষ্ণাদের বেশ কিছু আক্রমণ ভেঙ্গে পড়ে আরব আমিরাতের গোলরক্ষক আয়া ওয়ালিদ মালালার প্রতিরোধের দেয়ালে।
রক্ষণাতœক কৌশলকেই প্রাধান্য দিয়ে সোমবার মৌসুমীদের মাঠে নামান কোচ ছোটন। শিউলি আজিম, সিনিয়র শামসুন্নাহার, নার্গিস খাতুন, মৌসুমী ও আঁখি খাতুন-এই পাঁচ ডিফেন্ডারকে একাদশে রাখেন তিনি। বিপরীতে মাত্র দু’জন ফরোয়ার্ড স্বপ্না ও কৃষ্ণাকে রাখা হয় আক্রমণভাগে। তারপরও বল পজিশনে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরাই। ম্যাচের পুরোটা সময়ই স্বাগতিকদের আক্রমণ সামলাতেই ব্যস্ত ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট চলছে। কিন্তু দর্শকদের মাঝে নেই কোন আগ্রহ। তারপরও ৫০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে গ্যালারিতে বসে খেলা দেখেছেন প্রায় হাজার দু’য়েক সমর্থক।
ম্যাচের মাত্র ১২ মিনিটেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এসময় প্রায় মাঝ মাঠ থেকে ডিফেন্ডার আঁখি খাতুনের লম্বা পাসে আসা বল ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন সিরাত জাহান স্বপ্না। বিপদ সীমানায় প্রবেশ করেই কোনাকোনি শটে আগুয়ান গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন ফরোয়ার্ড স্বপ্না (১-০)। উল্লাসে ফেটে পড়ে গ্যালারি। তবে ১৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সহজ সুযোগটা নষ্ট করেন এই ফরোয়ার্ডই। আরব আমিরাতের গোলরক্ষক ওয়ালিদ মালালাকে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে পেয়েও স্বপ্না যে শটটি নেন তা সরাসরি গোলরক্ষকের গ্রিপে চলে যায়। ২০ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে পোস্টের খুব কাছ থেকে সিনিয়র সামসুন্নাহার বল ঠেলে দেন স্বপ্নার দিকে। বক্সে দাঁড়িয়ে থাকা স্বপ্না বলটা আলতো শটেই জড়াতে পারতেন জালে। কিন্তু সেই সুযোগও নষ্ট করেন তিনি। ৩০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ। এসময় ডানপ্রান্ত থেকে মনিকা চাকমার কর্ণারে বক্সে বল পেয়ে হেড নেন কৃষ্ণা রানী সরকার। তার হেডের বল আরব আমিরাতে জালে আশ্রয় নিলে ব্যবধান বাড়ে স্বাগতিক দলের (২-০)। ম্যাচের ৪০ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে সামসুন্নাহারের পাসে বল পেয়ে ডান পোস্টের কাছ থেকে ফ্লাইং কিক করেন অধিনায়ক মৌসুমী। কিন্তু বল অল্পের জন্য জালে জড়ায়নি। নিশ্চিত আরো একটি গোল থেকে বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে দু’গোল পেলেও দ্বিতীয়ার্ধে আর গোলের দেখা মেলেনি স্বাগতিকদের। ফলে শেষ পর্যন্ত ২-০ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। শুক্রবার গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে কিরগিজস্তানকে মোকাবেলা করবে লাল-সবুজরা।
এর আগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এমপি। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী,এমপি, সহ-সভপাতি কাজী নাবিল আহমেদ, এমপি, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, বাফুফের মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ ও টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষক কে-স্পোর্টসের সিইও এম ফাহাদ করিম।
টুর্নামেন্টের ‘এ’ গ্রুপে খেলছে মঙ্গোলিয়া, তাজিকিস্তান ও লাওস। ‘বি’ গ্রুপের দলগুলো হচ্ছে- স্বাগতিক বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কিরগিজস্তান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।