রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আবুল কালাম আজাদ, বালাগঞ্জ (সিলেট) থেকে
সিলেটের ওসমানীনগর ও বালাগঞ্জ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা ব্যাপক গণসংযোগে চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা প্রতিটি ইউনিয়নের হাট-বাজার ও গ্রামগঞ্জে দিন-রাত নৌকার জন্য ভোট চাচ্ছেন। গত ইউনিয়ন নির্বাচনে আ.লীগের ভরাডুবি এবার উদ্ধার করতে সকল প্রকার মতবিরোধকে পেছনে ফেলে নৌকার জন্য কাজ করছেন। ইতোমধ্যে তারা ৯ বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার করেছেন। পঞ্চম ধাপে সিলেটের ওসমানীনগর ও বালাগঞ্জ উপজেলার নির্বাচন আগামী ২৮ মে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত নির্বাচনের আর মাত্র বাকি ৫ দিন। দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত দুটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য আ’লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময়ে হামলা-মামলা ও ভাঙচুরসহ দুটি গ্রুপের মধ্যে দ্যা-কুমড়ার মতো সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। বর্তমানে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে মতবিরোধ ভুলে তারা উপজেলার প্রতিটি জনপদ চষে গণসংযোগ করছেন। নৌকার জন্য প্রতিটি ভোটারের কাছে ভোট ভিক্ষা চাচ্ছেন। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রায় ডজন খানেক জেলার নেতৃবৃন্দ নিয়ে ১৪টি ইউনিয়নে দিন-রাত গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করছেন। ভোটারের কাছে তুলে ধরছেন বর্তমান সরকারের উন্নয়নের প্রতীক নৌকা। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রবাসে থাকায় তার গ্রুপের নেতাকর্মীরা মতবিরোধকে পেছনে ফেলে নির্বাচনী মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। শেষপর্যন্ত ঐক্য অব্যাহত থাকলে অধিকাংশ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকার বিজয় সম্ভাবনা রয়েছে বলে ভোটাররা মনে করছেন। ওসমানীনগর উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন, উমরপুর ইউনিয়নে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমানের বলয়ের প্রবাসী গোলাম কিবরিয়া, পশ্চিম পৈলনপুরে শেরওয়ান আহমদ, গোয়ালাবাজারে পীর মো. মজনু মিয়া, তাজপুরে অরুণোদয় পাল ঝলক, দয়ামীরে মো. আব্দুল হামিদ, উছমানপুরে মো. নেফা মিয়া, সাদিপুর ইউনিয়নে কবির উদ্দিন আহমদ, বুরুঙ্গায় মো. মকদ্দুছ আলী। বালাগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী হচ্ছেন, পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নে আব্দুল মতিন, বোয়ালজুরে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আনহার মিয়া, পশ্চিম গৌরিপুরে আমিরুল ইসলাম মধু, পূর্ব গৌরিপুর ইউনিয়নে হিমাংশু রঞ্জন দাস, বালাগঞ্জ ইউনিয়নে আব্দুল মতিন ও দেওয়ানবাজার ইউনিয়নে আব্দুল কাদির খসরু। দুটি উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বেকাদায় পড়েছিল আওয়ামী লীগ। সর্বশেষ দলীয় আদেশ অমান্য করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থিতা বহাল রাখায় বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার নয়জন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে সিলেট জেলা আওয়াামী লীগ। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় তাদেরকে দলয়ী পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জেলা সূত্রে জানা যায়। একই সাথে এসব বহিষ্কৃত প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ না নিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশও দেয়া হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের হয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধেও দলীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত শুক্রবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বালাগঞ্জ উপজেলায় ছয়জন ও ওসমানীনগর উপজেলায় তিনজন বিদ্রোহী প্রার্থীকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। বালাগঞ্জ উপজেলায় দলীয় পদ থেকে বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নে নাসিরউদ্দিন, আজমল আলী, আব্দুর রহমান মাখন ও পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নে আজমল বেগ এবং পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নে ছান উল্লাহ। ওসমানীনগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে তিনজন বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃৃতরা হলেন, উসমানপুর ইউনিয়নে ময়নুল আজাদ ফারুক, পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নে আব্দুল হাফিজ এ. মতিন গেদাই ও বুরুঙ্গা ইউনিয়নে খালেক আহমদ লটই। এব্যাপারে ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, আমরা নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে সকল মতভেদ পেছনে ফেলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, সকল ইউনিয়নে আমাদের বিজয় হবে। দলীয় আইন অমান্য করে প্রার্থী হওয়ার কারণে বিদ্রোহীদের বহিষ্কার করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।