মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত শরতের ঘটনা। এক রোববারের সকালে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে বেথ তার বাবাকে বলল, আমার পেটে খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। তারপর তার পেটের ব্যথা এত তীব্র হল যে বুধবার সে কলেজে যেতে পারল না। বারবার সে টয়লেটে গেল। কয়েক সপ্তাহ আগে সে গর্ভবতী কিনা তার পরীক্ষা করিয়েছিল এবং তাতে নেতিবাচক ফল এসেছিল। তখন থেকে সে আর কোনো যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়নি।
যাহোক, তার বাড়ি থেকে ট্রিপল ওয়ান (১১১) নম্বরে কল দেয়া হল। হাসপাতালে নেয়া হল তাকে। নার্স তাকে জিজ্ঞেস করল তুমি কি গর্ভবতী? বেথ বলল, না। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর বেথকে এ অ্যান্ড ই-তে নেয়া হল। সেখানে সে একটি পূর্ণ সময় গর্ভধারণকৃত কন্যা শিশুর জন্ম দিল। শিশুটির ওজন ছিল ৭ পাউন্ড ৫ আউন্স। তার নাম রাখা হল মেইজি।
সন্তান জন্মদানের আগের মাসগুলোতে তার বয়সী অন্য কিশোরীরা যা করে, বেথও তাই-ই করেছে। নিজের শহর সেন্ট অ্যান’স-অন-দি-সিতে ক্লান্তিকর দিন। পড়াশোনা, কলেজের একটি ছেলের সাথে দেখাশোনা করে সময় কাটায়। স্থানীয় ওয়েদারস্পুন হোটেলে শিফটে কাজ করে। সেনাবাহিনীর দাঙ্গা প্রশিক্ষণ নিয়ে এবং বন্ধুদের সাথে ব্ল্যাকপুল ড্লেজার বিচে ড্রিংক করা ইত্যাদির ভেতর দিয়ে তার দিনগুলো কেটেছে।
গত আগস্টে তার শেষ ছুটির দিনের ছবি সে আমাকে দেখিয়েছে। স্লিম শরীর, ৭ স্টোন ওজন- আমাকে বলছিল সে, তার পেট ছিল সমতল। সে যে তখন সাত মাসের গর্ভবতী তার কোনো লক্ষণই শরীরে ছিল না। গর্ভবতী হওয়ার এ রকম সময়ে সব নারীরই পেট স্ফীত হয়। সন্তান প্রসবের দুই মাস আগেই তারা অনুভব করে যে তাদের কচি শিশুটা পেটের মধ্যে নড়াচড়া করছে। কিন্তু বেথের বেলায় তার কিছুই ঘটেনি।
বেথের গর্ভ ধারণ এক রহস্যময় ব্যাপার। ঘরোয়া প্রেগনেন্সি টেস্টে তা ধরা পড়েনি। তার পেট স্ফীত হয়নি এবং সে রকম কোনো লক্ষণও দেখা যায়নি। সাম্প্রতিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, ৪৭৫ জন গর্ভবতী মেয়ের মধ্যে একজনের এ রকম অবস্থা হয়। রহস্যময় গর্ভবধারণকারিণী কিছু নারী সাত বা আট মাসের সময় তা টের পায়। কিন্তু বেথের মত বহু মেয়েই শুধু সন্তান জন্মদানের সময়ই কেবল তা বুঝতে পারে।
রহস্যময় গর্ভধারণের বহু রকম কারণ আছে। তার মধ্যে আছে দুটি গর্ভাশয় থাকা। একটি গর্ভাশয় থাকে মেরুদন্ডের হাড়ের কাছে। এ জন্য পেট স্ফীত হয় না। জরায়ু কাত হয়ে থাকে অথবা নিচু মাত্রার এইচসিজি (গর্ভবতী নারী কর্তৃক উৎপন্ন হরমোন এবং ঘরোয়া প্রেগনেন্সি টেস্টের দ্বারা সংগৃহীত)।
এ সমস্যা পরীক্ষায় শনাক্ত নাও হতে পারে। কারণ কেউ জানে না তার কয়টি গর্ভাশয় আছে। অধিকাংশ নারীই নিয়মিত আল্ট্রাসাউন্ডের মধ্য দিয়ে যান না। তাছাড়া কোনো নারী তার এইচসিজি তখনি পরীক্ষা করেন যখন জানেন যে তিনি গর্ভবতী।
বেথ জানাল, রক্তপাত হতে থাকায় আমাকে এ অ্যান্ড ই-তে নেয়া হল। নার্স বলল, আমার মনে হচ্ছে তুমি গর্ভবতী ও সন্তানের মা হতে যাচ্ছ। তারপর আমাকে প্রসবের জন্য নেয়া হল। দুই ঘন্টা পর জন্ম নিল আমার বাচ্চাটি। বেথ কথা বলার সময় তার কোলে থাকা মেয়ে মেইজিকে দোল দিচ্ছিল। মেইজির বয়স ৬ মাস।
বেথ একটি টিভি অনুষ্ঠান দেখে ক্লারা ও লিলির কথা জানতে পারে। আমি বেথের কাছে জানতে চেয়েছি যে যখন অপ্রত্যাশিত ভাবে সন্তানের জন্ম দিলে তখন কি ঘটল। ‘আকস্মিক মাতৃত্ব’ শব্দটি কিভাবে গ্রহণ করলে? এর পরিণতিতে যা ঘটল সেটাই বা কোনভাবে দেখলে? তারা তিনজনই এখন যেভাবে তাদের সন্তানদের বড় করছে তাতে তারা নিজেরাও বিস্মিত। তারা নিজেরাই তাদের যত্ম নিচ্ছে, কান্না থামাচ্ছে, দুধ খাওয়াচ্ছে, মুখ মুছিয়ে দিচ্ছে। অথচ তারা কেউই সে বয়সে মা হতে চায়নি। এ কারণে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী ব্যবহার করত। সবাই বলেছে যে তারা যদি জানতে পারত তা হলে ব্যাপারটা অন্যরকম হত। বেথ বলে, জানতে পারলে সে অবশ্যই গর্ভপাত করাত।
বেথ সিঙ্গল প্যারেন্ট হিসেবে মেয়ে মেইজিকে বড় করছে। কারণ মেইজির বাবা তার জীবনসঙ্গী হতে চায়নি। বন্ধুরা ও নিজ পরিবার, বিশেষ করে তারা বাবা তাকে প্রয়োজনীয় সব সমর্থন দিচ্ছেন। মেইজির থুতনি নেড়ে দিয়ে সে বলে, সবাই তোকে ভালোবাসে।
বেথও বলে, মেইজির আগমন তাকে জীবনে অগ্রসর হতে সাহায্য করছে। সে সেপ্টেম্বরে কলেজে ফিরবে। পরের বছর সে সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীতে যোগ দেয়ার আগে খেলাধুলা ও জনসেবা বিষয়ে পড়াশোনার জন্য বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। (নিবন্ধকার নানা বাহ ‘ভাইস’-এর প্রতিবেদক।)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।