বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
একটু ভালো থাকার আশায় গাইবান্ধা থেকে পরিবার নিয়ে চালক রাসেল বসতি গড়েছিলেন স্বপ্নের শহর ঢাকাতে। কিন্তু ইট পাথরের কঠিন শহরের বাস্তবতাটা কিছুটা হলেও অজানাই ছিলো তাঁর। খেশারত দিতে হয়েছে নির্মম ভাবে। বছরখানেক আগে রাজধানীর যাত্রবাড়িতে তুচ্ছ ঘটনায় বাসের চাকায় তাঁর পা পিষ্ট করে দেয় ঘাতক চালক। সেই যন্ত্রানার যুদ্ধ পাড়ি দিতে হয়েছে বছর ধরে। কখনো হাসপাতালের বারান্দায় আবার কখনও আদালতের বারান্দায়। অবশেষে আইনের সুশাসন ও লাখো মানুষের ভালোবাসায় পেয়েছেন ন্যায্য অধিকার। পবর্তীতে তারঁ স্বপ্ন জয়ের সঙ্গী হয়ে কৃত্রিম পা সংযোজনের ব্যবস্থা করে দিলো সাভার পক্ষাঘাতগ্রস্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি)।
বৃহস্পতিবার সকালে সাভারের সিআরপি’র সহযোগীতায় কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজন বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ শফিক এর তত্বাবধানে বিনামুল্যে তার এই কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয়।
রাসেল সরকার গত ১১ এপ্রিল সাভার সিআরপিতে ভর্তি হন। কয়েক দফা ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। নতুন পা সংযোজনের জন্য প্রায় চার সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। এ সময়ের মধ্যে নতুন পা দিয়ে তাঁর চলাফেরাসহ দৈনন্দিন কাজের বিষয়গুলোতেও অনুশীলন করাবে সিআরপি।
রাসেল সরকার বলেন, কৃত্রিম পা পেয়ে আমি অনেক খুশি। পা লাগানোর পর আমার আগের জীবনের কথা মনে পরে গেলো। আজ থেকে আমি আগের মত হাঁটতে পারবো। সেই সাথে আমার নিজের কাজের জায়গায় আবার ফিরে যেতে চাই, যদি আমাকে সেই সুযোগ দেয়া হয়। সিআরপিতে এসে আমার নতুন জীবন খুঁজে পেয়েছি৷ তাই ধন্যবাদ সিআরপি ও এই সংস্থার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে।’
সিআরপি’র কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজন বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ শফিক ও ফিজিওথেরাপি বিভাগের ইনচার্জ ফারজানা শারমিন জানান, তার এ দুর্ঘটনার কারণে যেমন সবাই এগিয়ে এসেছেন আমরাও আমাদের থেকে তার জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। রাসেলকে আমাদের এখানে যে ধরনের সুবিধা দেওয়া সম্ভব আমরা তাকে সব ধরনের সুবিধা দেবো।
সাভারের সিআরপির নির্বাহি পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, কৃত্রিম পা সংযোজনের ফলে রাসেল তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে। তাঁর পাশে দাড়াতে পেরে আমরাও আনন্দিত।
প্রসঙ্গত; গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা রাসেল সরকার রাজধানীর আদাবরে একটি ‘রেন্ট-এ-কার’ প্রতিষ্ঠানের প্রাইভেটকার চালাতেন। ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে বাকবিত-ার জেরে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসের চালক ক্ষিপ্ত হয়ে রাসেলকে চাপা দেন। এতে তার বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
পা হারানোর বাস্তবতার গল্পটা বদলানো যাবে না। হাসি মাখা চেহারাটা, স্মৃতির আড়ালে চাপা পড়ে থাকবে আজীবন। এতো কিছু পরও গ্রীন লাইন বাসের চালকের বেপরোয়ায় পা হারোনো সেই রাসেল নতুন করে বাঁচার স্বপ্নের দেখছেন। পাশে দাড়িয়েছে সিআরপি। কৃত্রিম পা সংযোজনের মধ্য দিয়ে আবার হাঁটবেন রাসেল।
রাসেলের পা হারানোর ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনজীবী উম্মে কুলসুমের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে প্রয়োজন হলে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার এবং কাটা পড়া বাঁ পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচ দিতে ওই পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ রাসেলকে গত ১০ এপ্রিল ৫ লাখ টাকা দেন এবং বাকি টাকা একমাসের মধ্যে দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।