পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেসরকারি স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের ফান্ডে ১০ শতাংশ হারে অর্থ কেটে আদেশ দিয়েছে সরকার। এর আগে একই আদেশ দিয়ে স্থগিত করার ২ বছর পর পুনরায় গত সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করে। এর ফলে চলতি মাস থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের মোট ১০ শতাংশ অর্থ কেটে রাখা হবে। এই অর্থ চলে যাবে বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এবং কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিলে। যে তহবিলের অর্থ পেতে শিক্ষক-কর্মচারীদের দিনের পর দিন অপেক্ষা, হয়রানির শিকার, নাজেহাল ও ঘুষের আশ্রয় নিতে হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত গত ১৫ এপ্রিল জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এবং শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের অর্থ শিক্ষক ও কর্মচারীদের এপ্রিল/২০১৯ মাসের বেতন হতে যথাক্রমে ৬ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ টাকা জমা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে শিক্ষকদের বেতন কেটে নেয়ার হার ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে অবিলম্বে এ আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনগুলোর নেতারা। অন্যত্থায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারিও দিয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলো। বেতন কর্তনের আদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করার আহবান জানিয়েছে জাতীয় পর্যায়ের ১০টি শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ মোর্চা “বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী সমিতি ফেডারেশনের নেতারা। গতকাল (বুধবার) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী সমিতি ফেডারেশন ও বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সমন্বয়কারী প্রিন্সিপাল আসাদুল হক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ফেডারেশনের নেতারা বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড এবং শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের অর্থ শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন হতে কর্তনকৃত ৬ শতাংশ এবং ৪ শতাংশসহ মোট ১০ শতাংশ কর্তন করার যে আদেশ জারি করা হয়েছে তা বেসরকারী শিক্ষক ও কর্মচারীদের মতামতের কোন তোয়াক্কা করা হয়নি। নতুন শিক্ষামন্ত্রীকে বিতর্কিত করার জন্য একটি মহল চক্রান্ত করছে এবং শিক্ষক ও কর্মচারীদের বিভ্রান্ত করে শিক্ষাঙ্গনকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করছে। তারা বলেন, এর আগে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদের সময়েও এই মহলটি ১০ শতাংশ কাটার আদেশ জারি করেছিল এবং শিক্ষক ও কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে সেই আদেশ বাতিল করা হয়েছিল।
বিবৃতিদাতারা হলেন- ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, প্রিন্সিপাল বজলুর রহমান, প্রিন্সিপাল এম এ আউয়াল সিদ্দিকী, প্রিন্সিপাল এম এ সাত্তার, প্রিন্সিপাল হোসনে আরা বেগম, সৈয়দ জুলফিকার আলম চৌধুরী, প্রিন্সিপাল মোঃ ফয়েজ হোসেন, মোঃ কাওছার আলী শেখ, বিলকিস জামান, মোঃ মহসীন রেজা, প্রিন্সিপাল মোঃ জাহাঙ্গীর, প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব, মোঃ ফখরুদ্দীন জিগার, মোঃ শহীদ মোল্লা, কাজী আব্দুল লতিফ, বাবু রঞ্জিত কুমার সাহা, প্রিন্সিপাল মোঃ আবু বকর চৌধুরী, মোঃ শাহে আলম, প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রিন্সিপাল মোস্তফা চৌধুরী, শেখ মোঃ আফসার উদ্দিন, মোঃ সেলিম শাহ, মোঃ হুমায়ুন কবীর, মোঃ আনসার আলী, মোঃ সাইফুর রহমান।
৬ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ চাঁদা কর্তনের আদেশের প্রতিবাদে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) নেতারা। অবিলম্বে এ আদেশ বাতিল না হলে কঠোর কর্মস‚চি পালন করতে বাধ্য হবেন তারা। গতকাল সেগুনবাগিচায় সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয় আয়োজিত এক সভায় এ দাবি জানানো হয়। সমিতির সভাপতি প্রিন্সিপাল মো. বজলুর রহমান মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন, সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রিন্সিপাল মো. কাওছার আলী শেখ, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক।
এসময় শিক্ষক নেতারা বলেন, শিক্ষক প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা ছাড়াই আমলাতান্ত্রিক জটিলতার মারপ্যাচে শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারিকরণের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ২০১৭ সালে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডের চাঁদার হার ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ কর্তনের আদেশ জারি করা হয়। এরপর সারা দেশের শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে তা স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে পুনরায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ১০ শতাংশ অবসর-কল্যাণের চাঁদা কর্তনের আদেশ জারি করা হয়। কিন্তু পরে বিজ্ঞপ্তিটি প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন জানিয়েছিলেন। গত ১৫ এপ্রিল পুনরায় এমপিওভ‚ক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ১০ শতাংশ চাঁদা কর্তনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে আদেশ দেয়ায় সারা দেশের মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ এমপিওভ‚ক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহ সভাপতি প্রিন্সিপাল মো. আবুল কাশেম, আলী আসগর হাওলাদার, বেগম নুরুন্নাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু জামিল মো. সেলিম, মো. আনোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মোস্তফা জামান খান, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, সহদপ্তর সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক ফাহমিদা রহমান, সহমহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহানা বেগম প্রমূখ।
অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান: অবিলম্বে অবসর ও কল্যাণ তহবিল থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের আদেশে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের একক সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর ও কল্যাণ তহবিল থেকে ৬ শতাংশ কর্তনের বিধান ছিল কিন্তু আকস্মিক ১০ শতাংশে উন্নিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যে আদেশ জারি করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের মাদরাসা শিক্ষক কর্মচারীদের একমাত্র পেশাজীবী অরাজনৈতি সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন। সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব এ এম এম বাহাউদ্দীন ও মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী এক বিবৃতিতে বলেন, অবসর ও কল্যাণ তহবিল থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তনের আদেশ দেশের সকল বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের অন্তরে দাগ কেঁটেছে। আমরা আশা করছি শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলে খুব দ্রুত এ আদেশ প্রত্যাহার করে দেশের শিক্ষক-কর্মচারীদের শান্ত করবেন। জমিয়াত নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর আশুদৃষ্টি কামনা করেছেন।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।