বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম ভোট আগামী ৫ মে। এই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন ৫ জন। ভোটারের স্বাক্ষর জাল করে প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিন প্রার্থীর প্রার্থীতা ইতোমধ্যেই বাতিল হয়েছে। বাকী ছিলেন শুধু দু’জন। একজন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু ও ময়মনসিংহ মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি জাহাঙ্গীর আহমেদ।
কিন্তু মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইকরামুল হক টিটুকে সমর্থন দিয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন জাহাঙ্গীর আহমেদ। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় মেয়র নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন ইকরামুল হক টিটু।
এদিকে, জাতীয় পার্টির সংবাদ সম্মেলনের শেষে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। দুই প্রার্থী ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের উন্নয়নে একযোগে কাজ করারও অঙ্গীকার করেন। টিটু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নিয়েই অতীতের ধারাবাহিকতায় পথ চলবেন। উপহার দেবেন মডেল ময়মনসিংহ।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এহতেশামুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমিনুল হক শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানো প্রার্থী জাহাঙ্গীর আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইকরামুল হক টিটুকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ও মহাজোটের স্থানীয় রাজনীতির সহাবস্থানের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আমার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিলাম।
তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ এমপি ময়মনসিংহের উন্নয়ন প্রশ্নে মহাজোটের সকল শরীকদের ঐক্যবদ্ধ উন্নয়ন প্রচেষ্টা প্রয়োজন উপলব্ধি করেছেন। এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা স্বরূপ নৌকার মনোনীত প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানানোর ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। এসব কারণে ইকরামুল হক টিটুকে সমর্থন নিয়ে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করলাম।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো এই প্রার্থী আরো বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ময়মনসিংহের উন্নয়ন প্রশ্নে যত বাঁধা-বিপত্তি রয়েছে সেগুলো দূর করতে আমাদের নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ এমপিসহ মহাজোটের সকল স্থানীয় মন্ত্রী, এমপিসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে কাজ করে নবজাগরণ সৃষ্টি করতে সক্ষম হবেন।
আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়েই ময়মনসিংহের উন্নয়নের রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি, সংযোজন করে বলেন জাহাঙ্গীর।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, আব্বাস উদ্দিন তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু বলেন, বিগত দু’টি নির্বাচনে রওশন এরশাদকে আমরা আওয়ামী লীগ পরিবার ও জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনে বিজয়ী করেছি।
বিরোধী দলের উপনেতার ইচ্ছা অনুযায়ী ময়মনসিংহকে একটি মডেল নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাবো। রওশন এরশাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমার সমর্থনে জাহাঙ্গীর আহম্মেদ প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।
২০১৪ সাল থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে ময়মনসিংহ পৌরসভার সাবেক এই মেয়র বলেন, আমরা এক পরিবারের মতো একে অপরে মিলেমিশে ময়মনসিংহকে সমৃদ্ধ ময়মনসিংহ গড়ার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।
সেই ধারাবাহিকতায় আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের মাঝে কোন ভেদাভেদ বা দুরত্ব নেই। শেখ হাসিনাকে উন্নয়নের স্বার্থে রওশন এরশাদ বরাবরই অকুন্ঠ সমর্থন দিয়েছেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি। জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নিয়েই আমরা মডেল ময়মনসিংহ উপহার দেবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।