প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
ডিলান হাসান : সেন্সর বোর্ড আগে সিনেমার অশ্লীল দৃশ্য কর্তনের সাথে সাথে অশ্লীল সংলাপও কেটে দিত। এখন অশ্লীল দৃশ্য কর্তনের নির্দেশ দিলেও অশ্লীল সংলাপ কর্তন না করে ‘মিউট’ বা নিঃশব্দ করে দেয়ার প্রক্রিয়া অবলম্বন করছে। প্রশ্ন হচ্ছে, যে সংলাপ অশ্লীল ও অকথ্য এবং যা জনসম্মুখে প্রদর্শন করা যায় না, তা পরিচালকরা কেন সংযোজন করেন? আর সেন্সর বোর্ডই বা তা মিউট করে দেবে কেন? যারা সিনেমায় খিস্তি-খেউড় বা অশ্লীল ও অকথ্য সংলাপ এবং গালিগালাজ সংযোজন করেন সেসব নির্মাতাদের কাÐজ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়। তাদের সভ্যতা-ভব্যতা ও সুরুচি আছে বলে মনে হয় না। সম্প্রতি বিজ্ঞাপন নির্মাতা অমিতাভ রেজার প্রথম সিনেমা আয়নাবাজি গত ২৬ এপ্রিল কিছু সংশোধন-বিয়োজনের পর সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েছে। এ সিনেমার তিনটি অশ্রাব্য ও অসভ্য সংলাপ যা কোনো ভদ্রলোকের পক্ষে উচ্চারণ করা সম্ভব নয়, তা সংযোজন করা হয়েছে। সেন্সর বোর্ড এই সংলাপ তিনটি ‘মিউট’ করে দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, অমিতাভ রেজার মতো একজন গুণী নির্মাতা কেন এমন অকথ্য সংলাপ ব্যবহার করলেন? তাকে তো মিডিয়ার সবাই ভদ্রলোক বলেই জানেন। তাহলে কি তার এই চরিত্রের আড়ালে এক ধরনের পারভারসন বা বিকৃত রুচি লুকিয়ে রয়েছে, যা তিনি সিনেমায় প্রকাশ করেছেন? এ প্রশ্ন তোলার যৌক্তিকতা তিনিই সৃষ্টি করে দিয়েছেন। তা নাহলে এমন কাজ করবেন কেন? অথচ এই সিনেমা নিয়ে তিনি কান চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক উৎসবে যোগ দেয়ার অর্থ দেশের শিল্প-সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করা। এখন উৎসবে যদি ‘মিউট’ করা অংশ সাউন্ড দিয়ে চালানো হয় বা ইংরেজি সাব টাইটেলে দেয়া হয়, তবে বিদেশে কি এই ধারণা জন্মাবে না, আমাদের দেশের মানুষ অসভ্য ভাষায় কথা বলে? এটা কি আমাদের দেশের সংস্কৃতি? হলিউড-বলিউড সিনেমায় গালি-গালাজ দেয়া হয়। সেখানেও মিউট করার প্রচলন রয়েছে। তবে এসব তাদের সংস্কৃতিতে রয়েছে। কাজেই অমিতাভ রেজা তার আয়নাবাজি সিনেমায় যে অশ্লীল সংলাপ ব্যবহার করেছেন এবং সেন্সরবোর্ড সেগুলো যে মিউট করে দিয়েছে, এতে কি তার সম্পর্কে কোনো ইতিবাচক ধারণা জন্মানোর কারণ রয়েছে? সেন্সরবোর্ড আরো একটি সিনেমার সংলাপ মিউট করে দিয়েছে। ফরিদুর রেজা সাগর প্রযোজিত এ সিনেমাটির পরিচালক তানিয়া আহমেদ। সিনেমাটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় গুড মর্নিং লন্ডন নামে। পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে ছাড়পত্র রাখা হয় ভালোবাসা এমনই হয়। এ সিনেমায়ও এমন একটি সংলাপ ছিল যুক্ত করা হয়, তা উচ্চারণযোগ্য নয়। ভাবতেই অবাক লাগে তানিয়া আহমেদের মতো একজন নামকরা অভিনেত্রী পরিচালনায় এসে এমন অশ্রাব্য সংলাপ ব্যবহার করতে পারেন! এটা কোনোভাবেই তার ইমেজের সাথে যায় না। কোন রুচিবোধ থেকে তিনি এই অশ্লীল সংলাপ জুড়ে দিলেন এবং তা সেন্সরবোর্ডকে মিউট করতে হলো, তা বোধগম্য নয়। এসব সংলাপ যদি মিউট বা কর্তন করা না হতো, তাহলে দর্শকের মনে তার প্রতি যে শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে, তা কি এই একটি সংলাপেই ধুলোয় মিশে যেত না? আমরা আশা করব, নির্মাতারা আমাদের শিল্পবোধের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আকর্ষণীয়, শিক্ষণীয় ও উপভোগ্য সংলাপ ব্যবহার করবেন। সুড়সুড়ি মার্কা ও অকথ্য সংলাপ দিয়ে অসভ্য শ্রেণীকে উৎসাহিত করার অর্থ হচ্ছে, সমাজে অশ্লীলতা ছড়িয়ে দেয়া। এতে তাদের রুচি ও সামাজিক অবস্থানের বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। আমরা মনে করি, সেন্সরবোর্ডের সদস্যরাও রুচিবোধের পরিচয় দেবেন। শুধু অশ্লীল দৃশ্য কর্তন নয়, অশ্লীল সংলাপও কর্তন করে দেবেন। এ ব্যাপারে ন্যূনতম ছাড় দেয়া উচিত হবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।