বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ লাখ টাকার চেক দিয়েছে গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। বাকি ৪৫ লাখ টাকা এক মাসের মধ্যে রাসেলকে বুঝিয়ে দিতে গ্রিন লাইনের মালিককে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। পা হারানো রাসেল ও গ্রিন লাইন পরিবহনের মালিক হাজী মো. আলাউদ্দিনের উপস্থিতিতে আদালত বুধবার এই আদেশ দেন।
গত বছর ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিন লাইন পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। তাকে বাঁচাতে একটি পা কেটে ফেলতে বাধ্য হয়েছে চিকিৎসকরা। ক্ষতিপূরণ চেয়ে উম্মে কুলসুমের করা এক রিট আবেদনে রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। পরে আপিল বিভাগেও ওই আদেশ বহাল থাকে। ৪ এপ্রিল গ্রিন লাইনের মহাব্যবস্থাপক আবদুস সাত্তার আদালতে হাজির হয়ে বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানের মালিক চিকিৎসার জন্য ভারতে গেছেন, ফিরবেন ৯ এপ্রিল।
এরপর হাইকোর্ট রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করে ১০ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হলফনামা দাখিলের নির্দেশ দেন গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষকে। তা না হলে গ্রিন লাইনের সব বাস জব্দ করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করে আদালত। বুধবার শুনানির শুরুতেই কিন্তু রিটকারী আইনজীবী উম্মে কুলসুম আদালতকে বলেন, গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের যোগাযোগই করেনি। গ্রিন লাইনের আইনজীবী অজি উল্লাহ তখন বলেন, টাকা দিতে তাদের এক মাস সময় প্রয়োজন।
বিচারপতি তখন বলেন, উনি অসুস্থ, কিন্তু উনার ব্যবসা তো থেমে নেই, ব্যবসা তো চলছে। আজকে যদি একটা কিছু নিয়ে আসতেন তাহলে আমরা বুঝতাম একটা মানবিকতা আপনারা দেখিয়েছেন। কিন্তু কিছুই দেন নাই এখন পর্যন্ত। বিকালে আইনজীবী অজি উল্লাহ পাঁচ লাখ টাকার একটি চেক দেখিয়ে বলেন, এই চেক আমরা এখন হাতে হাতে দিতে চাচ্ছি। ১৫ তারিখ এটা ক্যাশ করা যাবে।এরপর রাসেল সরকারকে ডেকে বিচারপতি জানতে চান তার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে কি না। রাসেল অ্যাকাউন্ট আছে জানালে বিচারপতি তাকে চেক নিতে বলেন এবং ওই চেক বুঝে নেয়ার বিষয়ে বিবাদীপক্ষকে লিখিতভাবে জানাতে বলেন।
তখন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান তখন বলেন, ওসব আমরা শুনতে চাই না। এক মাস সময় দিলম। এর মধ্যে বাকি টাকা দিয়ে দিবেন। একইসঙ্গে রাসেলের অন্য পায়ের চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।
এ সময় গ্রিন লাইনের মালিককে সামনে ডাকে বিচারপতি বলেন, আপনি একটা ব্যবসা চালান, আপনার পরিবহনের সুমান আছে। আমরাও কখনও কখনও ওই পরিবহনে চড়েছি। ধরে নিলাম এই ঘটনায় তার দায় আছে, কিন্তু একটা দায় সবারই আছে। ওর চিকিৎসা করানোর একটা মানবিক দায়িত্ব আছে। হাজী আলাউদ্দিন তখন বলেন, রাসেল সরকারের ঘটনার পর আমিও পারিবারিকভাবে তিনটা অ্যাক্সিডেন্টের মুখোমুখি হয়েছি। আমার বড় ছেলের চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে। আমার স্ত্রীর কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। আমিও এক মাস ধরে অসুস্থ। আমার যে ব্যবসা, তা এখন লসে আছে।
আদালতের আদেশের পর রাসেল সরকার সাংবাদিকদের বলেন, টাকা বড় কথা না। সব থেকে বড় কথা হল মানুষের একটা অঙ্গ। যে অঙ্গ একমাত্র উপরওয়ালা ছাড়া আর কেউ দিতে পারে না। আমি যদি আজ পাঁচ কোটি টাকা দিয়েও পা লাগাই, তাহলেও আমি আগের জীবনে ফিরে যেতে পারব না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।