বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পাবনাসহ উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে মার্কসীয় দর্শন তত্বে সমাজতান্ত্রিক সমাজ কাঠামো গড়ে তুলতে গিয়ে চরমপন্থী দলের উত্থান ঘটে। নওগাঁ, পাবনা ও যশোর পরে রাজশাহী জেলা হয় এই দলের কেন্দ্র বিন্দু। পাবনায় উত্থানের মূল কারণ হলো ভারতের নকশাল বাড়ী আন্দোলনের নেতা চারু মজুমদার ব্রিটিশ-ভারতে রাজশাহী জেলা হাগুরিয়ায় ১৯১৫ সালে ১৪ মে জন্ম গ্রহণ করেন। শিলিগুড়ি হাইস্কুল থেকে ১৯৩৩ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত লেখা পড়া-করেন। লজিং থাকতেন রাধানগর মজুমদার পাড়া এলাকায়। তিনি ইন্টারমিডিয়েট ফাইনাল পরীক্ষা না দিয়ে সাম্যবাদী চিন্তা চেতনা ধারণ করে চলে যান জলপাইগুড়ি এবং তেভাগা আন্দোলনে যোগ দেন। এডওয়ার্ড কলেজে থাকাকালে তাঁর মার্কসীয় তত্বে বেশ কয়েকজন অনুসারী সৃষ্টি হয়। শ্রেণী শত্রু খতমের নামে কালক্রমে এক সন্ত্রাসবাদের সৃষ্টি হয়। ধীরে ধীরে নানা নামে চরমপন্থী দল গড়ে ওঠে। এদের দমনে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু রক্ষীবাহিনী গঠন করেছিলেন। কিন্তু আন্ডার ওয়ার্ল্ড দমন থাকলে একেবারে নির্মূল হয়নি, কোন দলকে একেবারে নির্মূল করা যায় না। দরিদ্র-না খাওয়া মানুষদের সাম্যবাদের সঠিক দীক্ষা না দেওয়া এরা উগ্রবাদীতে পরিণত হন। এক সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পুলিশসহ চরমপন্থীদের হাতে নিহত ১৯৭ জন । পাবনার ঢালার চরে পুলিশ হত্যাকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের অনেকেই পুলিশের সাথে ‘বন্দুক’ যুদ্ধে নিহত হন। বিএনপি-জামায়াতের শাসন কালে রাজশাহী অঞ্চলে বাংলা ভাইয়ের উত্থান হয়। তারাও উগ্রবাদী পন্থা অবলম্বন করেন। মার্কসীয় চিন্তা ধারণ করতে গিয়ে এরা বিপথে পরিচালিত হয়ে পড়েন। নানা নামে চরমপন্থী দল বিভক্ত হয় পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (এম এর লাল পতাকা), সর্বহারা, বাহিনী, জনযুদ্ধ । জনযুদ্ধের উত্থান হয় দক্ষিণাঞ্চলে। এরা পরস্পর বিরোধী হয়ে ওঠে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। গ্রামের অনেক ধনাঢ্য কৃষক, চাকুরীজীবী হত্যার শিকার হন । আবার চরমপন্থী দল গুলো একদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে যুদ্ধে নিহত হন আবার নিজেরা পরস্পর বিরোধী হওয়ায় অন্ত কোন্দলে নিহত। শোনা যায়, এই দলের পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি (লাল পতাকা) স্থানীয় বিএনপির ছত্র ছায়ায় আসেন আর সর্বহারা ও বাহিনী আওয়ামীলীগের সেল্টার লাভ করে। রাষ্ট্র তাদের সমর্থন না করলেও স্থানীয় পর্যায়ে নেতারা নিজেদের কাজে ব্যবহারের জন্য তাদের সেল্টার দেন বলে জানা যায়। পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় এই সংগঠনের তৎপরতা খুব জোরের ছিল না, এ ছাড়া পাবনার আটঘরিয়া, একদন্ত, হাঁদল, যমুনার ত্রিমোহনী এলাকা বেড়া উপজেলার ঢালার চরসহ প্রায় সব উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এদের আস্তানা ছিল। তাঁরা দিনের বেলায় ক্ষেত মজুরী অথবা রিকশা চালক, রাতে চরমপন্থী। বাংলা ভাই সংগঠন উগ্রবাদী হয়ে চরমপন্থী দমনে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে ছিলেন। বিএনপি শাসন আমলে ক্লিন হার্ট অপারেশন, র্যাব-পুলিশের হাতে বিএনপিকে সমর্থন করতেন এই চরমপন্থী সদস্যের অনেকই বন্দুক যুদ্ধে নিহত হন। ১৯৯৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার চরমপন্থীদের সুপথে আসার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় সাড়া দিয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ নাসিমের কাছে প্রায় ৪ শতাধিত চরমপন্থী আত্মসমর্পণ করেছিলেন। জানা যায়, সরকার তাদের পুনর্বাসন করেন ,অনেককেই আনসার-ভিডিপিতে চাকুরী দেওয়া হয়। আবার এই সুবাদে প্রকাশ্য আওয়ামীলীগ করেন, কিন্তু চরমপন্থী নন, রাজনৈতিক মামলার পাল্লা ভারি হওয়ায় তাদের কেউ কেউ এই সুবিধা নিতে চরমপন্থী হিসেবে আত্মসমর্পণ করেন। পাবনা শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামে ৫৯৫ জন চরমপন্থী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে আত্ম সর্মপণ করেন। আগ্নেয়াস্ত্র ৬৮টি এবং দেশীয় অস্ত্র ৫৭৫টি জমা দেওয়া হয়। তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। তথ্য সূত্র মতে,
নেতা ১০ লাখ আর কর্মীরা এক লাখ টাকা করে প্রণোদনা পেয়েছেন। পর্যায়ক্রমে আইনী প্রক্রিয়া শেষ হলে তাদের পুনর্বাসন করা হবে। যারা কোন অস্ত্র জমা দেননি, তাঁরা নিরস্ত্র চরমপন্থী হিসেবে গণ্য হবেন। অবৈধ অস্ত্র জমাদানকারীদের আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালাস দেওয়া হবে। তাঁরা সবাই সুন্দর ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক এই প্রত্যাশা সবার। রাতের ঘুম হারাম করে বনে জঙ্গলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রতিপক্ষ চরমপন্থী দলের ভয়ে পালিয়ে জীবন-যাপন করা কোন জীবন নয়। সুস্থ্য ধারাই জীবনের অপর নাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।