Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরকীয়ার জেরেই খুন হন জুয়েল পুলিশের ব্রিফিং

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৫৭ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের চাপরতলা গ্রামের জুয়েল মিয়া (২৬) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। পরকীয়ার জেরেই তিনি নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপাপ্ত পুলিশ সুপার) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান তিনি। হত্যাকাণ্ডের পুরো তদন্ত কাজ তদারকি করেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হারুন মিয়া (৩০) ও তাঁর স্ত্রী আসমা খাতুনকে (২৪) গেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আরও পাঁচজন অভিযুক্ত পলাতক রয়েছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, নাসরিনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের চাপরতলা গ্রামের মৃত আলতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়া চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বিভিন্ন কসমেটিকস্ ফেরি করে বিক্রি করেন। বাড়িতে হারুনের স্ত্রী আসমা একাই থাকতেন। একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আসমার সঙ্গে ডেকোরেটর্স কর্মী জুয়েল মিয়ার পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে তাঁদের দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

তিনি জানান, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে জুয়েল ও আসমা একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়। বিষয়টি জানতে পেরে হারুন তাঁদের দুজনকে সতর্ক করে দেয়। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। এ কারণে গত ১৫/২০দিন আগে রাগের মাথায় আসমার মাথার চুলও কেটে দেন হারুন। সেই থেকে জুয়েলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হারুন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৪ মার্চ রাতে আসমার মাধ্যমে ফোন করে জুয়েলকে বাড়িতে ডেকে আনেন হারুন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আসমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হওয়ার এক মিনিটের মাথায় হারুন লাঠি দিয়ে জুয়েলকে আঘাত করে। পরে হারুনের ছোট বাচ্চার শার্ট দিয়ে জুয়েলের পা এবং আসমার গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো হয়। এর পর হত্যাকা-ে অংশ নেয়া বাকিরা ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁকে মুখম-লসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতে করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ একটি ডোবায় ফেলে দেয়।

তিনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর হারুন চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চলে যান। ঘটনার পাঁচদিন পর ১৯ মার্চ জুয়েলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকা-ের ঘটনায় নিহত জুয়েলের চাচা আব্দুল হকের করা মামলার সূত্র ধরে পুলিশ তদন্ত কাজ শুরু করে। গত ৮ এপ্রিল ভোরে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে হত্যাকা-ের মূল পরিকল্পনাকারী হারুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাঁর দেয়া তথ্যমতে ৯ এপ্রিল সকালে চাপরতলা গ্রাম থেকে আসমাকেও গ্রেফতার করা হয়। তবে হত্যকা-ের ঘটনায় জড়িত আরও পাঁচজন পলাতক রয়েছেন। তাঁদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান আলমগীর হোসেন।
এর আগে গত ১৯ মার্চ সকাল সাড়ে আটটায় চাপরতলা গ্রামের খন্দকারবাড়ি সংলগ্ন একটি ডোবা থেকে জুয়েলের মরদেহ উদ্ধার করে নাসিরনগর থানা পুলিশ। জুয়েল চারপতলা গ্রামের মৃত আনব আলীর ছেলে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশের ব্রিফিং
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ