পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে কেটে গেছে খরার দহন। সারাদেশে স্বস্তির বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে মোটামুটি ভারসাম্য এবং ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে কালবৈশাখী ও শিলাঝড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানী ঢাকায় কালবৈশাখীর ঝড়োহাওয়া বয়ে গেছে ঘন্টায় ৮৫ কি.মি রেকর্ড গতিতে। রংপুর বিভাগে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরমধ্যে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় ৬৩ মিলিমিটার, রংপুরে ৪১ মি.মি., দিনাজপুরে ৩৫ মি.মি., সৈয়দপুরে ৩৭ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এ সময় ঢাকায় ২৫, টাঙ্গাইলে ১২, নিকলিতে ২৪, ময়মনসিংহে ২১, নেত্রকোনায় ৩০, সীতাকুন্ডে ৫২, রাঙ্গামাটিতে ১৩, কুমিল্লায় ১৪, হাতিয়ায় ৮, সিলেটে ১৮, শ্রীমঙ্গলে ২৬, বগুড়ায় ১৬, কুমারখালীতে ৭, পটুয়াখালীতে ৫ মিলিমিটারসহ দেশের অধিকাংশ জেলায় হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে আজ (বুধবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, রাজশাহী, সিলেট ও রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে যেতে পারে। এর পরের ৫ দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
রাজশাহী অঞ্চলে বদলে গেছে খরতাপের চিত্র। চিরচেনা দৃশ্য ‘চৈত্র মাসে খরতাপে মাঠি ফেটে চৌচির। কৃষকের ধান আর আম বাঁচাতে সেচের পানির জন্য হাহাকার’। এবার তেমনটি দেখা যাচ্ছেনা। গরম আবহাওয়ার স্থলে ভর করেছে নরম আবহাওয়া। প্রচন্ড খরতাপ নেই। বরং যখন তখন আকাশ কালো করে মেঘ জমছে। মেঘের তর্জন গর্জন চমক আর বজ্রপাত। এরপর ঝড়ো হাওয়ার সাথে ঝুপ ঝাপ বৃষ্টি। এযেন অন্য রকম চৈত্রের রূপ। ঝড়ে আম লিচুর খানিকটা ক্ষতি হলেও উপকার বয়ে এনেছে বোরো সহ বিভিন্ন ফসলের জন্য। জমিতে সেচ লাগছে কম। ধানের ক্ষেতে লকলকিয়ে বেড়ে উঠছে ধান। বোরো ধানের কোথাও পোকা মাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। কৃষকরা বলছেন এসময় সাধারনত পোকা মাকড় লাগেনা। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। ধানের পাতা মরা চিটা হওয়া ধানের শীষে কালো দাগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাদামী গাছ ফড়িংয়ের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। রাজশাহীর পুঠিয়ায় ধানের জমিতে এক ধরনের রোগ দেখা দিয়েছে। ধানের শীষ কালো হয়ে যাচ্ছে। এটি কেন হচ্ছে তা স্থানীয় কৃষিকর্মীরা শনাক্ত করতে পারেনি। তারা ধান গাছের কালো ছোপ লাগানো নমুনা সংগ্রহ করে ধান গবেষনা ইন্সটিটিউটে পাঠিয়েছে।
ধান গবেষনা ইন্সটিউটিউটের উদ্ভিদ রোগ তত্ত¡ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আব্দুল লতিফের অভিমত মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া, কুয়াশা, বৃষ্টি, রাতে ঠান্ডা দিনে গরম এমন আবহাওয়ার কারণে ধানে বিভিন্ন রোগ ছড়ায়। ঝড় বৃষ্টির কারণে ধানের পাতা মরা রোগা হয়। বৃষ্টির পানিতে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত ছড়ায়। রোগ বালাই নিয়ন্ত্রণে এজন্য কৃষককে উচ্চ ব্যবস্থাপনায় যেতে হচ্ছে।
নাটোরের চলনবিলে অতিরিক্ত শিলাবৃষ্টি ও পর পর কয়েকটি ঝড়ো হাওয়ার কারণেবোরো ধানের শীষে কালো চিটা দেখা দিয়েছে। নাটোর এলাকার অনেক জমিতে শীষ বের হওয়া ধানে এমনটি কৃষকদের হতাশায় ফেলেছে।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, শিলাবৃষ্টি ও পর পর কয়েকটি ঝড়ো হাওয়ায় ধানের শীষে ঠিকমত পরাগায়ন না হওয়ায় ফলে ঐসব জমিতে ধানে চিটা দেখা দিয়েছে।
বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন অবধি বরেন্দ্র অঞ্চলের ধান ক্ষেতগুলো বেশ সতেজ রয়েছে। বৃষ্টি উপকার বয়ে আনলেও ঝড়ো হাওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে। তারপর সার্বিক পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক। আর কয়েকদিন পর স্বপ্নের ফসল গোলায় উঠবে।
বরেন্দ্র অঞ্চলে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি ভূতত্ত্ব ও খনি বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সরওয়ার জাহান সজল বলেন এবার অসময়ে ঝড়ো হাওয়া আর বৃষ্টির কারণে ধানে পরাগ রেনু উড়ে গেছে কিংবা ধুয়ে গেছে। ফলে অনেক স্থানে ঠিকমত পরাগয়ন হয়নি বলে ধানে চিটা দেখা যাচ্ছে। এটা আবহাওয়ার এলোমেলো আচরণের বিরুপ প্রভাব। এবার মে জুন মাসে ব্যাপক গরম পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।