পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিজানুর রহমান চৌধুরীর পর এবার জাতীয় পার্টির কান্ডারি হলেন জি এম কাদের। গতকাল এক ‘সাংগঠনিক নির্দেশে’ এরশাদ তার অবর্তমানে জি এম কাদেরকে জাতীয় পার্টির কান্ডারির দায়িত্ব দেন। ভবিষ্যতে কাদের হবেন জাপার চেয়ারম্যান। দলের কো-চেয়ারম্যান এবং সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার ১৪ দিন পর তাকে আবার সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হলো। এর আগে ১৯৯০ সালে কারাগারে থেকে এরশাদ চিঠির মাধ্যমে মিজানুর রহমান চৌধুরীকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেন। অতঃপর তিনি হন জাপার কান্ডারি। ১৯৯১ সালের পয়লা জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টি নতুন জীবন লাভ করে। জি এম কাদের ইনকিলাবকে বলেন, এটা আমার জন্য শিক্ষণীয় হয়েছে। জনগণ এবং দলের নেতাকর্মীরা যে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন, সেটা বোঝা যাচ্ছে। তবে এ ধরনের ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি কিছুটা নষ্ট হয়েছে। এরশাদের এই সিদ্ধান্তে দলের কেন্দ্র থেকে শুরু করে শেকড় পর্যায়ের নেতারা দারুণ খুশি। তবে চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়-কেন্দ্রিক ‘সিন্ডিকেট’ প্রচন্ড হতাশ। তারা এখন নতুন করে রওশন এরশাদকে দিয়ে অন্য ধরনের কিছু করার চেষ্টায় রয়েছেন।
এরশাদ নিজের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে বলেন, ‘পুনরায় আমি জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী এবং সংশ্লিষ্ট সকল মহলের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই, আমার অবর্তমানে বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিদেশে থাকাকালীন পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।’
এইচ এম এরশাদ ২০১৬ সালে রংপুরের এক সমাবেশে জি এম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান করার ঘোষণা দেন। এতে নাখোশ হন দলের ‘রওশনপন্থী’ হিসেবে পরিচিত নেতারা। পরে দলে রওশনকে দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান করতে বাধ্য হন এরশাদ। অতঃপর নিজ জেলা রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ৯০ বছর বয়সী সাবেক এই স্বৈরশাসক ঘোষণা করেছিলেন, তার অবর্তমানে দলের হাল ধরবেন কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের। এরপর ২০ জানুয়ারি তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য যান। ফিরে আসেন ৪ ফেব্রুয়ারি। এরপর থেকে অসুস্থতার কারণে খুব বেশি অনুষ্ঠানে অংশ নেননি জাপা চেয়ারম্যান এরশাদ।
২০ মার্চ নিজের ৯০তম জন্মদিন পালনের পর ২২ মার্চ রাতে হঠাৎ করেই জি এম কাদের দল চালাতে ব্যর্থ হয়েছেন- এমন কথা উল্লেখ করে দলের কো-চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। পরের দিন তার বিরোধী দলের উপনেতার পদও কেড়ে নেয়া হয়। তবে তিনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে বহাল ছিলেন। এরশাদের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে রংপুর বিভাগের নেতারা দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাফার নেতৃত্বে সংবাদ সম্মেলন করে জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে ৫ এপ্রিল আল্টিমেটাম দেন। না হলে তিনিসহ সকলেই পদত্যাগ করবেন এবং রংপুর বিভাগে জাতীয় পার্টির সব ধরনের সাংগঠনিক কর্মকান্ড প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দেন। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে রংপুরের নেতাদের নিয়ে ৩ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট পার্কে বৈঠক করে ৪ এপ্রিল জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেন। এরপর তাকে দলের ভবিষ্যৎ চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেন। ২২ মার্চের চিঠিতে এরশাদ উল্লেখ করেন, ‘আমি ইতিপূর্বে ঘোষণা দিয়েছিলাম, আমার অবর্তমানে পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের পার্টি পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন এবং এটাও আশা করেছিলাম যে, পার্টির পরবর্তী জাতীয় কাউন্সিল তাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবে। কিন্তু পার্টির সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় আমার ইতিপূর্বেকার সেই ঘোষণা প্রত্যাহার করে নিলাম।
পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০/১/ক ধারা মোতাবেক এরশাদ গতকাল পাঠানো ‘সাংগঠনিক নির্দেশে’ বলেন, আমি আবারো জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, গত ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে আমার স্বাক্ষরিত ‘সাংগঠনিক নির্দেশনা’ যথা আমি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, আমার অবর্তমানে বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিদেশে থাকাকালীন সময়ে পার্টির বর্তমান কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের এমপি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। অত্র ‘সাংগঠনিক নির্দেশ’ দ্বারা পুনর্বহাল করলাম। এ দিকে জাতীয় পার্টির অসুস্থ চেয়ারম্যান এরশাদকে যাতে সিন্ডিকেট প্রভাবিত না করে সেজন্য পাহারা বসিয়েছেন দলের মাঠপর্যায়ের কিছু নেতা। তারা বলছেন, এরশাদকে ভুল বুঝিয়ে সিন্ডিকেট অপকর্ম করছে এবং পরিচ্ছন্ন ইমেজের জি এম কাদেরকে দূরে সরিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে। এ বিষয়ে পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব হাসিবুল ইসলাম জয় বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে ঘাপটি মেরে থাকা কুচক্রীরা পার্টিকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছেন। যারা ষড়যন্ত্র করছেন তারা এক সময় বিএনপি থেকে এ পার্টিতে এসেছেন। এদের মাঝে কেউ কেউ এরশাদের বুকে ছুরিকাঘাত করে চলে গিয়ে আবার ফিরে এসেছেন। সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল্লাহ শফি বলেন, জাপার মাঝে ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারী সরকার ও এরশাদকে ভুল বুঝিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করেছিল। বিষয়টি নিয়ে জাপা মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, এ বিষয়ে সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হবে। জাতীয় পার্টি কোনো পারিবারিক দল নয়। এরশাদের অবর্তমানে কে চেয়ারম্যান হবেন, তা দলের সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।