পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বর্ষার ঠিক আগেভাগে হঠাৎ করে যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ৩শ’ ২৮ কোটি টাকার কাজ বন্ধ করে দেয়ায় সম্ভাব্য বন্যার আতঙ্কে ভুগছে গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার লাখো মানুষ। তাদের আশঙ্কা, বর্ষা মওসুমে ব্যাপক এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে হাজার হাজার হেক্টর আবাদি জমির ফসলহানিসহ লাখো মানুষের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। গাইবান্ধা, ফুলছড়ি, সাঘাটা হয়ে বগুড়া পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কটিও পড়বে হুমকির মুখে। পাশাপাশি গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, জামালপুর ও টাঙ্গাইল, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে জেলার নৌরুটের বিভিন্ন ঘাটগুলোও বিপন্ন হয়ে পড়বে। এমন বাস্তবতার মধ্যে কী কারণে হঠাৎই ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গেল তা বুঝতে পারছে না এলাকার মানুষ।
সরেজমিনে ফুলছড়ি উপজেলার যমুনা পাড়ের সিংড়িয়া এলাকায় গেলে নদীভাঙনের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত মানুষ জানায়, ২০১৮ সালে এই এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ঘরবাড়ি হারা শতশত মানুষ এখনও আশ্রয়হীন। তারা ত্রিপলের নীচে অস্থায়ী ছাউনীতে বসবাস করছে। আবার যদি তারা নদীভাঙনের কবলে পড়েন তাহলে বাস্তচ্যূৎ হয়ে যাযাবর জীবন বেছে নিতে হবে।
এই এলাকার ৩০ বছর বয়সী যুবক ফারুক আহম্মেদ জানান, গত বছরের বন্যায় বাড়িঘর হারিয়ে নিজের পরিবারের যেমন খাবার জোটাতে পারিনি, তেমনি গবাদী পশুর মুখেও খাবার তুলে দিতে না পারায় সেগুলো জবাই করে খেতে হয়েছে। আমরা কি আবারও ওই পরিস্থিতির মুখে পড়বো? আবারও হঠাৎ বন্যায় আমরা গৃহহারা হবো, হাজার হাজার বাড়িঘর পানিতে ভেসে যাবে?
কঞ্চিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি লিটন মিয়া বলেন, উন্নয়নবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা সত্তে¡ও কেন আমাদের এই এলাকা নদীভাঙনের ঝুঁকির মুখে থাকবে? আমরা চাই দ্রুত ওই এলাকায় নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হোক এবং তা যে কোন মূল্যে।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর যাবৎ গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাগুড়িয়া থেকে ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়ার গণকবর পর্যন্ত যমুনা নদীর ব্যাপক ভাঙন ও বন্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ নামে ২০১৮ সালের পহেলা জুন মাস থেকে একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করে। ফুলছড়ি-সাঘাটার এমপি জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া এ প্রকল্পের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ জন্য ৩শ’ ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী আগামী ২০২১ সালের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।
জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার বাগুড়িয়ায় ৩শ’ মিটার, ফুলছড়ির বালাসিতে ১৩শ’ মিটার, সিংড়িয়ায় ২২শ’ মিটার ও গণকবর এলাকায় ৭শ’ মিটার নদীর লুপকাটিং (খনন) করার কথা। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই বাগুড়িয়ায় ৩শ’ মিটার, ফুলছড়ির বালাসিতে ৬শ’ মিটার, সিংড়িয়ায় ৮শ’ মিটার ও গণকবর এলাকায় ৭শ’ মিটার নদীর লুপকাটিং করে ক্যানেল তৈরি করেছে। নদীভাঙন প্রতিরোধে ডাম্পিংয়ের জন্য বালাসিঘাট, সিংড়িয়া ও বাদিয়াখালির রিফাইতপুর এলাকায় ব্লক দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের কাজও এগিয়ে চলেছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড হঠাৎ করেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৫ মার্চ একটি পত্র দিয়ে প্রকল্পটির কাজ বন্ধ করে দেয়। এমতাবস্থায় কবে নাগাদ আবার এই প্রকল্পের কাজ নতুন করে শুরু করা হবে তা এখনও অনিশ্চিত।
এলাকার লোকজন জানান, বর্ষা মওসুমের আগে কাজ সম্পন্ন না হলে প্রকল্পটির অগ্রগতি ব্যাহত হবে এবং এ বাবদ ব্যয়কৃত টাকা ভেস্তে যাবে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধি মেহেদী হাসান বলেন, মাত্র ৭ দিনের নোটিশে হঠাৎ করে কাজ বন্ধ করে দেয়ায় তারা আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কেননা ইতোমধ্যে কাজের জন্য তাদের পর্যাপ্ত লোকবল, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি কাজে লাগানো হয়েছিল।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড, গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে তাদের কাজ না করায় এবং তাদেরকে সতর্ক করা সত্তে¡ও তারা আশানুরূপ কাজে মনোযোগী না হওয়ায় বাধ্য হয়েই গত ৫ মার্চ তাদের সাথে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে এবং নতুন করে টেন্ডার আহবানের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে এলাকার মানুষের দাবি, দ্রুততম সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হোক, কারণ এই প্রকল্পের সাথেই জড়িয়ে আছে এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকাসহ সবকিছু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।