মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কিছু বাধা সত্তে¡ও চীনের সাথে ‘মহাকাব্যিক’ বাণিজ্য চুক্তি শিগগিরই সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে গত বৃহস্পতিবার চীনা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ওভাল অফিসের একটি বৈঠকে চীনের সঙ্গে চ‚ড়ান্ত বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাজি হননি। বলেছেন, এ ‘মহাকাব্যিক’ বাণিজ্য চুক্তির জন্য আরো চার সপ্তাহ বা তার বেশি সময় লাগতে পারে।
বাণিজ্য চুক্তি বিষয়ে চীনও আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বাণিজ্য আলোচনায় যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাণিজ্যযুদ্ধে ক্ষান্ত দিয়েছে। চলমান এই বাণিজ্যযুদ্ধে বৈশ্বিক অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হারও কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
চীনের ভাইস প্রিমিয়ার ও বিশেষ বাণিজ্য দূত লিউ হেই-এর সফরকালে চলতি সপ্তাহে মধ্যস্থতাকারীরা মূলত এই চুক্তিকে নিরাপদ করার লক্ষ্যে এবং মি. ট্রাম্প এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের মধ্যে শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণার আশা করেন। কিন্তু পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আলাদা আলাপ আলোচনা এবং অতিরিক্ত শাস্তির হুমকির মুখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন কিছু অবশিষ্ট বিষয় নিয়ে হতাশায় পড়েছে। এসব বিষয়ের মধ্যে রয়েছে চীনা পণ্যগুলি থেকে কত শুল্ক প্রতাহার হবে এবং কখন হবে।
অমীমাংসিত বিষয়গুলোর কথা উল্লেখ করে মি. ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি সুরক্ষা এবং চুরির কথা বলছি। আমরা নির্দিষ্ট শুল্ক সম্পর্কে কথা বলছি’।
আলোচনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছিলেন যে, চীনের সাথে শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণা দিতে প্রেসিডেন্ট প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনাগুলি প্রেসিডেন্টের কিছু বাণিজ্য উপদেষ্টাদের মধ্যে একটি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল, যারা যুক্তি দিয়েছিল যে, চুক্তিটি হবার আগে বৈঠকের ঘোষণা করা হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাত দুর্বল হবে এবং এটি যে পরিবর্তনগুলি চায় তা জোরদার করতে এটি কম সুবিধা দেবে।
হোয়াইট হাউসের মন্তব্যে মি. ট্রাম্প বলেন যে, চুক্তিটি ‘একেবারেই সম্পূর্ণ’ ছিল এবং আমরা ‘উভয় পক্ষ সম্মত হওয়ার চেয়ে অনেক বেশি সম্মত হয়েছিলাম’। তিনি আরো ‘আমি মনে করি, আমি বলতে পারি, কিছু কঠিন বিষয়ে একমত হয়েছি’।
কিন্তু তিনি বলেন, চূড়ান্ত চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত শীর্ষ সম্মেলন হবে না। ‘আগে একটি চুক্তি চূড়ান্ত হবে, অতঃপর শীর্ষ সম্মেলন’ বলেন প্রেসিডেন্ট।
শীর্ষ সম্মেলনের তারিখ এবং অবস্থান বিতর্কিত প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমে মি. ট্রাম্পের ফ্লোরিডা রিসোর্ট মার-অ্যা-লাগোতে সম্মেলন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তবে চীন ওয়াশিংটনে সরকারি সফর বা তৃতীয় দেশের নিরপেক্ষ অবস্থানে সম্মেলন করার জন্য চাপ দিচ্ছে।
‘চীন ভর্তুকি ও অন্যান্য সহায়তার মাধ্যমে অন্যায্যভাবে দেশীয় কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করছে’ এই অভিযোগ তুলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায়, চীন বাণিজ্যনীতিতে পরিবর্তন আনুক। আর চীন যেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও বেশি পণ্য কিনে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনে। অন্যদিকে চীনের অভিযোগ হলো, যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছে এবং তারা অর্থনীতিতে বৃহত্তর কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে অনিচ্ছুক।
তবে নতুন চুক্তি না হলে বিপদ আছে। সেই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র চীনের ২০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে আরোপিত শুল্কের হার ১০ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ ২০ শতাংশে উন্নীত করতে পারে। পাশাপাশি তারা নতুন চীনা পণ্যেও শুল্ক আরোপ করতে পারে। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প তো আগেই সব চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ২৫০ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছে। প্রতিশোধ হিসেবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের ১১০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছে। চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস (এনবিএস) জানায়, বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২০১৮ সালে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে এ হার দেশটির সরকারি লক্ষ্য সাড়ে ৬ শতাংশের তুলনায় একটু বেশি। এর আগে ২০১৭ সালে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল চীনের। এ কারণে চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হারও কমবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সূত্র : নিউ ইয়ক টাইমস ও বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।