পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় সারাবিশ্বে এগিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গাদের সহায়তায় জাতিসংঘের নেতৃত্বে যে জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেআরপি) গঠিত হয়েছে, তার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বেশি সহায়তা দিচ্ছে। গত বছর মোট তহবিলের ৩৬ শতাংশ একাই জোগান দিয়েছে দেশটি। চলতি বছরও এখন পর্যন্ত সংগৃহীত তহবিলের ৭১ শতাংশের বেশি জোগান দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, পশ্চিমা উন্নত দেশগুলো থেকে শুরু করে প্রতিবেশী ও মুসলিম বিশ্ব রোহিঙ্গাদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও আর্থিক সহায়তায় এগিয়ে আসছে না। ভারত ত্রাণসহায়তা দিলেও জেআরপিতে তাদের কোনো অবদান নেই। এমনকি জেআরপিতে কোনো ভূমিকা নেই চীনেরও। রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় অধিকাংশ দেশের আগ্রহ না থাকায় বড় ধরনের তহবিল ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন খাতে ২০১৮ সালে ৯৫ কোটি ডলারের চাহিদা প্রাক্কলন করা হয়েছিল। যদিও জোগাড় হয়েছিল এর চেয়ে অনেক কম। চাহিদার মাত্র ৬৯ শতাংশ বা সাড়ে ৬৫ কোটি ডলার সংগ্রহ হয়েছিল ওই বছর। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একাই দিয়েছিল ২৪ কোটি ডলার।
জেআরপির ২০১৮ সালের অর্থায়ন পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের পর ওই বছর সবচেয়ে বেশি আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। এর পরিমান ৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা সংগৃহীত তহবিলের ১৩ শতাংশ বা। ৭ শতাংশ বা ৫ কোটি ডলার অর্থায়ন করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সাড়ে ৬ শতাংশ বা ৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার জাপান, ২ কোটি ৪০ লাখ ডলার অস্ট্রেলিয়া ও ২ কোটি ১০ লাখ ডলার দিয়েছিল কানাডা সরকার। এছাড়া সুইডেন ও নরওয়ে ১ কোটি ডলার করে অর্থসহায়তা দেয়।
তবে চলতি বছরের পরিস্থিতি আরো নাজুক। ৯২ কোটি ডলার চাহিদার বিপরীতে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার সংগৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে ১০ কোটি ৫৫ লাখ ডলারই দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর বাইরে অস্ট্রেলিয়া সরকার ১ কোটি ১০ লাখ, জার্মানি ৯১ লাখ, জাপান ৬২ লাখ, কানাডা ৪৫ লাখ ও ইউরোপীয় কমিশন ২৮ লাখ ডলার সরবরাহ করেছে। মাত্র ১০ লাখ ডলার দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। মধ্যপ্রাচ্য ও আরব বিশ্ব থেকে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় সাড়া পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কক্সবাজারে অবস্থানকারী রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ১২ লাখ ৯৪ হাজার ৫২০ জনের জন্য খাদ্যনিরাপত্তায় চাহিদা ধরা হয়েছিল ২৪ কোটি ডলার। এর বিপরীতে পাওয়া গেছে ১৬ কোটি ডলার। স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য চাহিদা ধরা হয়েছিল ১১ কোটি ৩০ লাখ ডলার। তবে পাওয়া গেছে ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এখানে থাকা জনগোষ্ঠীর ৯ লাখ ৮ হাজার ৯৭৯ জনের আশ্রয়কেন্দ্রের প্রয়োজন রয়েছে। তবে এর মধ্যে ৮ লাখ ১৩ হাজার ২৮৯ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এতে প্রয়োজন ছিল ১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। তবে জোগাড় হয়েছিল ৩ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।
এছাড়া রোহিঙ্গাদের জন্য ইউএনএইচসিআরের তৈরি করা ডবিøউএএসএইচ (ওয়াশ) প্রকল্পে ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৫২০ জনের মধ্যে ১০ লাখ ৫২ হাজার ৪৯৫ জনকে নির্বাচন করা হয়েছে। এখানে ১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারের বিপরীতে জোগাড় হয়েছে ৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। নিরাপত্তা এবং এ-সংক্রান্ত সংকট মোকাবেলার জন্য ৭ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিপরীতে পাওয়া গেছে প্রায় ৪ কোটি, সাইট ব্যবস্থাপনার জন্য ১৩ কোটি ১০ লাখের চাহিদার বিপরীতে ৫ কোটি ৬০ লাখ এবং শিক্ষার জন্য ৪ কোটি ৭০ লাখের জায়গায় পাওয়া গেছে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পুষ্টি সুরক্ষার জন্য ৫ কোটি ৭০ লাখের বিপরীতে পাওয়া গেছে সাড়ে ৩ কোটি ডলার, কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ৫৯ লাখের বিপরীতে ৪৩ লাখ, সমন্বয়ের জন্য ৬০ লাখের বিপরীতে ২২ লাখ, সরবরাহের জন্য ৩৬ লাখের বিপরীতে ৪০ লাখ এবং অন্যান্য খরচের জন্য ১২ লাখের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া গেছে ৮ লাখ ৪৫ হাজার ডলার।
চলতি বছরও ১২টি খাতে সহায়তা প্রাক্কলন করেছে জাতিসংঘ। আগের জেআরপির মতো এবারও খাদ্যনিরাপত্তায় সবচেয়ে বেশি চাহিদা ধরা হয়েছে। এ খাতে এ বছর চাহিদা ধরা হয়েছে ২৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর পরই সর্বোচ্চ চাহিদা ধরা হয়েছে ওয়াশ প্রকল্পে ১৩ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্র বাবদ ১২ কোটি ৮৮ লাখ ও স্বাস্থ্যসেবায় ৮ কোটি ৮৮ লাখ ডলার চাহিদা প্রাক্কলন করা হয়েছে। এর বাইরে শিক্ষার জন্য ৫ কোটি ৯৫ লাখ ও পুষ্টির জন্য ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার চাহিদা নির্ধারণ করেছে জাতিসংঘ।
সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বাকি দেশগুলোর সহায়তায় আগ্রহ না থাকায় এসব লক্ষ্য অর্জন নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। ###
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তাজেআরপিতে ২০১৮ সালের অর্থায়ন (ডলার)
যুক্তরাষ্ট্র : ৮ কোটি ৪০ লাখ
ইউরোপীয় ইউনিয়ন : ৫ কোটি
জাপান : ৪ কোটি ৩০ লাখ
অস্ট্রেলিয়া : ২ কোটি ৪০ লাখ
কানাডা : ২ কোটি ১০ লাখ
সুইডেন : ১ কোটি
নরওয়ে : ১ কোটি
চলতি বছরের অর্থায়ন (ডলার)
যুক্তরাষ্ট্র : ১০ কোটি ৫৫ লাখ
অট্রেলিয়া : ১ কোটি ১০ লাখ
জার্মানি : ৯১ লাখ
জাপান : ৬২ লাখ
কানাডা : ৪৫ লাখ
ইউরোপীয় ইউনিয়ন : ২৮ লাখ
যুক্তরাজ্য : ১০ লাখ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।