Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাঁধ সংস্কার না হওয়ায় মানবেতর জীবন

আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে জি এম মুজিবুর রহমান | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

গত তিন মাস ধরে বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার। দিনে দু’বার জোয়ার ভাটার ভাসতে থাকা এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট। গ্রামের পশু এখন এলাকা থেকে হারাতে বসেছে। প্রায় তিন শতাধিক মাছের ঘের নষ্ট হওয়ায় অনাহারে দিনাপাত করছেন এলাকার মানুষ।
প্রতাপনগরের সীমান্তবতী চাকলা গ্রাম। গ্রামটি দীর্ঘকাল ধরে নদীর জোয়ারের পানির চাপে পাউবোর বাঁধ ভেঙে এখন জোয়ার ভাটার পানিতে টইটম্বুর। বাঁধটি স্থায়ীভাবে নির্মাণ না করা হলে আশাশুনির মানচিত্র থেকে এলাকাটি হারিয়ে যেতে পারে। স্থানীয় প্রশাসন ভাঙনের সাথে সাথে কিছু সহযোগিতা করলেও সেটি কপোতাক্ষের প্রবল জোয়ারে বিলীন হয়ে যায়। এদিকে গত তিন মাস ধরে ভাঙন কবলিত বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তা এক পলক দেখতেও আসেননি। এদিকে ভাঙন প্রতিরোধের দাবিতে এলাকাবাসী প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ ও মানববন্ধন করেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
ভাঙন কবলিত এলাকার মাগফুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, হাবিবুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান ও কালাম ঢালি বলেন, গত তিন মাস আগে কপোতাক্ষ নদীর প্রবল জোয়ারে একশত হাত বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। প্রাথমিক ভাবে স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কার করলেও এক সপ্তাহের মধ্যে সেটি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সেই থেকে দিনে দুই বার জোয়ার ভাটা চলছে। বর্তমানে সেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কটের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ সংক্রমিত হতে দেখা যাচ্ছে। তাদের দাবি দ্রæত বাঁধটি সংস্কার করা না হলে সামনে বর্ষা মৌসুমে চাকলা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে যে বাঁধ দেওয়া আছে সেটিও ভেঙে পুরো প্রতাপনগর ইউনিয়ন প্লাবিত হতে পারে। শিক্ষক আমিরুল ইসলাম জানান, চাকলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙন কবলিত এলাকায় হওয়ায় অনেক অভিভাবক তাদের বাচ্চাদের স্কুলে আসতে দিচ্ছেননা।
প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জানান, স্থায়ী ভাবে মাটি না দেওয়ার ফলে মূহুর্তে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে চাকলার বিস্তীর্ন এলাকা প্লাবিত হয়। ২/৩ শত বিঘা চিংড়ি ঘের ও ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়। হাজার হাজার টাকার চিংড়ি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দেড় শতাধিক পরিবার পানি বন্দী হয়ে আছে। তিনি আরো জানান প্রাথমিক ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ডিসি মহোদয়ের সহযোগিতা নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধটি আটকানো হয়। কিন্তু সেটি এক সপ্তাহের মধ্যে ভেঙ্গে যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত জোয়ার ভাটা চলছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজ পর্যন্ত কোনদিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তা এখানে আসেননি। এমনকি কোন খোঁজ নেয়নি। চাকলাবাসির কথা চিন্তা করে আশ্রায়ণ প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল সেটি বাঁধা গ্রস্থ করছে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ