Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আল-আমিনের বিধ্বংসী বোলিং

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

অনেকদিন পর পারফম্যান্সের ঝলকে নজরে আসলেন জাতীয় দলের সাবেক পেসার আল-আমিন হোসেন। তার ওপেনিং স্পেলেই গুড়িয়ে গেছে বিকেএসপির টপ অর্ডার। যে ধাক্কা আর সামলে উঠতে না পেরে মাত্র ৫০ রানে গুটিয়ে গেছে বিকেএসপি। ১৭২ রানের বড় জয় তুলে নেয় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।

গতকাল ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে নবম রাউন্ডের ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ৯ রানের দুর্দান্ত জয় পেয়েছে গাজী গ্রæপ ক্রিকেটার্সও। তবে দিনের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ম্যাচে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে ২ উইকেটে হারিয়েছে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব।

মিরপুরে টপঅর্ডারদের ব্যাটিং দৃড়তায় শেষ ওভারে অল আউট হয়ার আগে ৩২৪ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় মোহামেডান। জবাবে ২ বল বাকি থাকতে জয় নিশ্চিত করে শাইনপুকুর। ব্যাটে বলে দারুণ অবদান রাখায় ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন দেলোয়ার হোসেন।

শেষ ২ ওভারে শাইনপুকুরকে করতে হত ২৩ রান। এসময় ভারতীয় রিক্রুট রজত ভাটিয়ার ওভারে আউট হলেও তিন ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ নাগালে নিয়ে নেন দেলোয়ার। শেষ ওভারে ৫ রানের হিসাব ২ বল হাতে রেখেই মিলিয়ে নেন সোহরাওয়ার্দি শুভ। দুজনে মিলে অষ্টম উইকেটে ৫৯ রান যোগ করে ম্যাচ বের করে আনেন। তবে দারুণ ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে যান আফিফ হোসেন। তিন রানের জন্য তরুণ এই ব্যাটসম্যান শতক হাতছাড়া করেছেন। মাত্র ৮৬ বলে ৫ ছক্কা ও ৪ বাউন্ডারিতে ৯৭ রান করেন আফিফ। ১১৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে আফিফ ও অমিত হাসানের মধ্যকার ১১৮ রানের জুটি দলকে ম্যাচে ফেরায়।

এর আগে শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানের ফিফটিতে ৪৫ ওভারে ৪ উইকেটে ২৮৬ রান তুলে মোহামেডান। ২২ বলে ৩টি করে ছক্কা-চারে ৪৫ রান করে রান আউট হন সোহাগ গাজি। ৮৯ বলে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন ওপেনার লিটন দাশ। শেষদিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে নাদিফ চৌধুরির দলকে ৩ বল বাকি ধাকতেই গুটিয়ে দেয় শাইনপুকুরের বোলাররা। এখানেও শেষ সময়ে সবচে বড় অবদান রাখেন দেলোয়ার। সব মিলে ইনিংসে ৫ উইকেট নেন ৩৪ বছর বয়সী এই মিডিয়াম পেসার। চারটি করে জয় ও পরাজয় এবং এক টাই ম্যাচের কল্যাণে পয়েন্ট তালিকার পাঁচে শাইনপুকুর। সমান সংখ্যক জয়ে তাদের পরেই মোহামেডান।

ওদিকে সাভারে গাজী গ্রæপকে ২০৬ রানে আটকে রেখেও জিততে পারেনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ৭ বল বাকি থাকতে ১৯৭ রানে গুটিয়ে যায় মোহাম্মাদ শরিফের দল। অথচ জুনায়েদ সিদ্দিকির অর্ধ-শতকে জয়ের পথেই ছিল তারা। একসময় তাদের স্কোরবোর্ডে ছিল ২ উইকেটে ১৩৬ রান। এসময় ৭২ রান করে জুনায়েদ আউট হতেই পথ হারায় ব্রাদার্স। তাদেরকে ক্রিজে দাঁড়াতে দেননি মূলত নাসুম আহমেদ ও সঞ্জিত শাহা। ঘুর্ণী বলে নাসুম নেন ৫ উইকেট। সঞ্জিত ৩ উইকেট নেন গতির বলে।

এর আগে ব্যাটিং নিয়ে অস্বস্তিতে ছিল গাজী গ্রæপও। ৭০ রানে তারা হারায় ৫ উইকেট, ৯২ রানে ৬টি। সাতে নেমে লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে স্কোরবোর্ডে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন কামরান গোলাম। ১০১ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৮১ রান করেন তিনি। নয় ম্যাচে গাজীর এটি চতুর্থ জয়। সমান ম্যাচে মাত্র দুটিতে জিতে ১২ দলের পয়েন্ট তালিকায় দশ নম্বরে ব্রাদার্স।

আর ফতুল্লায় ছিল আল-আমিন শো। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে নিজের প্রথম স্পেলেই শীর্ষ ৫ ব্যাটসম্যানকে তুলে নেন জাতীয় দলের সাবেক এই পেসার। সব মিলে তার বোলিং ফিগার ছিল ৮-৩-২০-৫। ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দেশের হয়ে সর্বনি¤œ রানের শঙ্কায় পড়ে বিকেএসপি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই লজ্জায় তাদের পড়তে হয়নি। লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে বাংলাদেশের সর্বনি¤œ রানের রেকর্ড সিলেটের বিপক্ষে চট্টগ্রামের ৩০ রান, ২০০২ সালে জাতীয় লিগে। বিকেএসপির গতকালের ম্যাচটি ছিল পঞ্চম সর্বনি¤œ। ২২ ওভারে শেষ হওয়া তাদের ইনিংসে দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেন কেবল একজন, পারভেজ হোসেন ইমন (১৫)।
প্রাইমের অবস্থাও ভালো ছিল বলা যাবে না। ৭২ রানে তারা হারায় ৫ উইকেট। এমন বিপর্যয় থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরান অভিমন্যু ইশ্বরণ। দারুণ ব্যাটিংয়ে দেখিয়েছেন কিভাবে ঠাÐা মাথায় বিপর্যয় সামলাতে হয়। এক-দুই করে রানের চাকা সচল রাখেন ভারতীয় এই ব্যাটসম্যান। ষষ্ঠ উইকেটে নাহিদুল ইসলামকে নিয়ে গড়েন ৯৪ রানের জুটি। ফিফটির দেখা পান নাহিদ। আর ৪৮তম ওভারে রান আউটে কাটা পড়ে ইশ্বরণের ১০৯ বলে ২টি ও এক ছক্কায় করা ৯২ রানের ঝকঝকে ইনিংসটি। নয় ম্যাচে সাত জয়ে পয়েন্ট তালিকার তিনে প্রাইম ব্যাংক। সাত হারে তালিকার নয়ে বিকেএসপি।


গাজী গ্রæপ-ব্রাদার্স, সাভার
গাজী গ্রæপ : ৪৯.৪ ওভারে ২০৬ (মেহেদি ৪৮, কামরান ৮১, শামসুল ২২; মেহেদি ২/২৬, শরীফ ২/৪৭, শরিফউল্লাহ ১/২, সাজেদুল ৪/৫৪)। ব্রাদার্স : ৪৮.৫ ওভারে ১৯৭ (মিজানুর ২৫, জুনায়েদ ৭২, ফজলে রাব্বি ৩১, ইয়াসির ৩০; সঞ্জিত ৩/৪৫, নাসুম ৫/৪৯)। ফল : গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৯ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : নাসুম আহমেদ।

প্রাইম ব্যাংক-বিকেএসপি, ফতুল্লা
প্রাইম ব্যাংক : ৫০ ওভারে ২২২/৯ (এনামুল ২৩, ইশ্বরণ ৯২, আল আমিন ১৭, নাহিদুল ৫০, নাঈম ১৫, রাজ্জাক ১৫*; সুমন ২/৪১, নওশাদ ২/৩৭, মুরাদ ২/৩৫)। বিকেএসপি : ২২ ওভারে ৫০ (কাইয়ুম ৭, ইমন ১৫; আল আমিন ৫/২০, মনির ১/১৫, নাঈম ২/৬, রাজ্জাক ১/০)। ফল : প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ১৭২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : আল আমিন হোসেন।

মোহামেডান-শাইনপুকুর, মিরপুর
মোহামেডান : ৪৯.৩ ওভারে ৩২৪ (লিটন ৮৪, ইরফান ৫০, অভিষেক ৫০, রাকিবুল ৭৪, সোহাগ গাজী ৪৫; দেলোয়ার ৫/৪৬, সোহরাওয়ার্দি ৭২/২)। শাইনপুকুর : ৪৯.২ ওভারে ৩২৫/৮ (সাদমান ২১, চাঁদ ৪৯, আফিফ ৯৭, অমিত ৪৩, সোহরাওয়ার্দি ৩৪*, দেলোয়ার ৩৪; সোহাগ গাজী ২/৪০, ভাটিয়া ২/৮০)। ফল : শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ২ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : দেলোয়ার হোসেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ