পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোন কারণে মানুষের সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়? এ প্রশ্নের জবাবে কেউ বলবেন ধূমপান, কেউ উচ্চ রক্তচাপ। কিন্তু গবেষণা বলছে, ভুল খাদ্যেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় গোটা বিশ্বে।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশন এক নতুন গবেষণায় জানাচ্ছে, বিশ্বের অনেক দেশেই এখন খাবারের নিম্ন ও অস্বাস্থ্যকর মানের কারণে বেশি মৃত্যু হচ্ছে। মানুষ স্বেচ্ছায় এসব খাদ্য বেছে নিচ্ছে। তারা পাতে চায় রেডমিট, চায়ে চিনি, ভাতে লবণ।
গবেষকরা দেখেছেন, স্বাস্থ্যকর খাবারে অনীহা কিংবা অনভ্যস্তের কারণে মানুষের মৃত্যু এখন স্বাস্থ্যহানিকর খাবার খেয়ে মৃত্যুর চেয়েও বেশি। দেশভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, স্রেফ ফল না খাওয়ার কারণে মৃত্যু ত্বরান্বিত হচ্ছে বিশ্বের এমন দেশগুলোর প্রথমই উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম। এরপর রয়েছেÑ ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিল। গত ৩ এপ্রিল (বুধবার) এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ২৭ বছরে গোটা বিশ্বের খাদ্যাভ্যাস বিশ্লেষণ করে এসব সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে গবেষক দল। তারা বলেছেন, নিত্য খাবারে স্বাস্থ্যকর খাদ্যের অভাব। আর যাও খাবার পছন্দ তাতেও আবার উচ্চমাত্রায় চিনি ও লবণের ব্যবহার বেশি। হেলথি ফুড হেলথি ফুড বলে কথাবার্তা অনেক দিন ধরেই চলছে। কিন্তু খুব কিছু বদলাচ্ছে না। গবেষকরা দেখেছেন, অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া যেমন একটি কারণ, স্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া তার চেয়ে বড় কারণ।
গবেষণা বলছে, ২০১৭ সালে বিশ্বের প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর একটি ঘটেছে খাবারজনিত কারণে। যার মোট সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখ। এদের মধ্যে চর্বিযুক্ত, চিনি সম্মৃদ্ধ খাবার, লাল গোশত এগুলো খাওয়ার কারণে যত না মৃত্যু হয়েছে তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে তাদের খাদ্য তালিকায় শস্যদানা, ফল-মূল, বাদাম-বীজ এসব না থাকায়।
খাবারের সাথে উচ্চমাত্রায় সোডিয়াম গ্রহণ করার কারণে বিশ্বের যেসব দেশে খাদ্যাভ্যাসজনিত বেশি মৃত্যু হয় তার মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে চীন, জাপান ও থাইল্যান্ড। ওদিকে শস্যদানা খাবার হিসেবে গ্রহণ না করার কারণে সর্বোচ্চ মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও ভারত, ব্রাজিল, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, রাশিয়া, মিশর, জার্মানি, ইরান ও তুরস্কে শস্যদানা না খাওয়ার কারণে বেশি মৃত্যু হয়। বাংলাদেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল না খাওয়ার কারণে মৃত্যু কিংবা প্রতিবন্ধীতার শিকার হওয়ার হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বলেই গবেষণায় ধরা পড়েছে। বাদাম কম খাওয়ার কারণে খাদ্যাভাসজনিত মৃত্যুতে মেক্সিকো সবচেয়ে এগিয়ে। আর উচ্চমাত্রায় রেডমিট, প্রক্রিয়াজাত গোশত, চিনিযুক্ত পানীয় এসব খাওয়ার কারণে বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশও এখন মৃত্যু ঝুঁকিতে এগিয়ে রয়েছে।
গোটা বিশ্বের দেশে দেশে ১৭ বছর ধরে খাদ্যাভ্যাস বিশ্লেষণ করে এই গবেষণা হওয়ায় বলা হচ্ছে এর ফল বিশ্বের প্রতিটি মানুষের জন্য প্রযোজ্য। বিশ্বের কোন দেশে, কোন ভৌগলিক অবস্থানে তার বসবাস সেটা মোটেই এখানে মুখ্য নয়। এশিয়া ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরাও রয়েছেন এই গবেষণা দলে। এই অনুপোযুক্ত খাদ্যাভ্যাসের কারণে শিগগিরই বিশ্বকে বড় ধরনের মূল্য দিতে হবে বলেও হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তারা। বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে করা এই গবেষণা ১৫টি সুনির্দিষ্ট ঝুঁকি চিহ্নিত করেছে। যার প্রভাবে পঙ্গুত্ব বরণ এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৭ সালে বিশ্বে খাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক কোটি মানুষের। এছাড়া ক্যান্সারে মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখ ১৩ হাজার। টাইপ টু ডায়াবেটিসে মৃত্যুবরণ করেছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার। এছাড়া প্রতিবন্ধিতার ৬৬ শতাংশই ঘটেছে একম সব রোগের কারণে যা কোনও না কোনওভাবে খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই গবেষণা মেদ আক্রান্তদের ঝুঁকি কম দেখা গেছে। বৈশ্বিক রোগ ঝুঁকির তালিকায় এর অবস্থায় ষষ্ঠ।
প্রতিবেদন মতে, ডায়েট সংশ্লিষ্ট মৃত্যুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে উজবেকিস্তান। এর পরপরই অবস্থান আফগানিস্তান, মার্শাল আয়ল্যান্ড, পাপুয়া নিউগিনি ও ভানুয়াতুর। আর সবচেয়ে কম মৃত্যু হয় এমন দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ইসরায়েল।
এরপর ফ্রান্স, স্পেন, জাপান ও অ্যান্ডোরা (ফ্রান্স ও স্পেনের মাঝে এক ছোট্ট প্রিন্সিপ্যালিটি)। মৃত্যুর নিম্নহারের দিক থেকে যুক্তরাজ্য ২৩তম। এর পরে আয়ারল্যান্ড ২৪, সুইডেন ২৫, যুক্তরাষ্ট্র ৪৩তম। ভারতের অবস্থান রয়েছে ১১৮তে। আর চীনের অবস্থান ১৪০ এ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।