পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারানো প্রাইভেটকারের চালক রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, যত বড় বিজনেসম্যান হোক না কেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে হয়ে যাননি। একটা সীমা থাকা দরকার। টাকা দিতে না পারলে ১১ তারিখের জন্য কোন টিকেট বিক্রি করবেন না। ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ না করলে প্রয়োজনে গ্রিনলাইন পরিবহনের সব গাড়ির চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে। সব গাড়ি সিজ করে নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা করে রাসেলকে টাকা দেয়া হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানিতে এইসব মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে রাসেল সরকারকে টাকা দেয়ার জন্য গ্রিনলাইন পরিবহনের মালিককে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন আদালত।
আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা। গ্রিনলাইন পরিবহনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অজি উল্লাহ। বিআরটিসির পক্ষে এস এম মনিরুজ্জামান। এছাড়াও স্ত্রী-সন্তানসহ আদালতে আসেন রাসেল সরকার।
গত বছর ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিনলাইন পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। এতে পা হারান রাসেল সরকার। ক্ষতিপূরণ চেয়ে উম্মে কুলসুমের করা একটি রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে পা হারানো রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। কিন্তু সেই টাকা না দেয়ায় রিটকারী পক্ষের আইনজীবী রেজা গ্রিন লাইনের মালিককে আদালতে তলবের মৌখিক আবেদন জানান।
গ্রিনলাইনের আইনজীবী অজি উল্লাহ আদালতকে বলেন, আদেশের বিষয়টি তিনি পরিবহন কর্তৃপক্ষকে জনিয়েছেন। কিন্তু গ্রিনলাইনের প্রোপাইটার চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে আছেন। গ্রিনলাইন পরিবহনের মালিক মো. আলাউদ্দিন কবে কোন দেশে গেছেন, কবে ফিরবেন- এসব প্রশ্নের উত্তর আইনজীবী দিতে না পারায় ওই কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারকে বেলা ২টায় হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, একটা সীমা থাকা উচিৎ। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ম্যানেজারকে ২টায় আসতে বলেন। সমস্ত গাড়ি সিজ করতে বলব যদি পজেটিভ স্টেটম্যান্ট না পাই। ২টায় আদালতে হাজির হন গ্রিন লাইন পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক আব্দুস সাত্তার। পরে অজি উল্লাহর কাছে আদালত জানতে চান, গ্রিনলাইন পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার হাজির হয়েছেন কিনা। অজি উল্লাহ ইতিবাচক উত্তর দিলে আদালত মহা ব্যবস্থাপকের নাম জানতে চান। বিচারপতি তখন জানতে চান গ্রিন লাইনের মালিক কোথায়। সাত্তার বলেন, আলাউদ্দিন অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য তিনি গত ৩১ মার্চ ভারতে গেছেন, দেশে ফিরবেন ৯ এপ্রিল। তখন বিচারপতি জানতে চান, মালিক ৩১ মার্চ কখন দেশ ছেড়েছেন। আদেশ সম্পর্কে তিনি অবগত কি না। টাকা পরিশোধের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আলাউদ্দিন দিয়েছেন কি না। সাত্তার বলেন, আদালতের আদেশের বিষয়টি টেলিফোনে জানানো হয়। গ্রিন লাইনের ব্যাংক লেনদেন কীভাবে হয় তা আদালত জানতে চাইলে মহা ব্যবস্থাপক বলেন, পরিবহন মালিক আলাউদ্দিন নিজেই সেগুলো দেখেন। চেকে তিনি নিজেই সই করেন। এ পর্যায়ে বিচারপতি পরিবহনের মালিক বলেন, আপনার মক্কেল যে দেশে নেই, এ বিষয়ে আদালতে কোনো আবেদন দাখিল করেননি। আপনার উচিৎ ছিল এ ধরনের আবেদন দাখিল করা। আপনি কোনো পদক্ষেপই নেননি। আদালতের আদেশ নিয়ে এ ধরনের খামখেয়ালি টলারেট করব না। রিটকারী পক্ষের আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা শুনানির এ পর্যায়ে একটি নিউজে প্রতিবেদনের অনুলিপি দেখিয়ে আদালতকে বলেন, ক্ষতিপূরণের আদেশ আপিল বিভাগে বহাল থাকার পরই কারসাজি করে গ্রিন লাইনের মালিককে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বিচারপতি তখন বলেন, আমরা এগুলো দেখতে চাই না। অসুস্থতার বিষয়টি থাকতেই পারে। সাধারণত আমরা এসব বিষয় সাময়িকভাবে মেনে নিই। এরপর বিচারপতি বলেন, আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করবেন। যদি আদেশ বাস্তবায়ন না করেন তাহলে ১১ তারিখের কোনো টিকিট বিক্রি করবেন না। আপনারা তো অগ্রিম টিকি বিক্রি করেন। জনগণকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলবেন না। বিচারপতি বলেন, মিস্টার অজি উল্লাহ, ম্যানেজার সাহেব হাজির হয়ে বলেছেন উনি ইন্ডিয়া গেছেন চিকিৎসার জন্য, ৯ তারিখ ফিরবেন। কোনো টিকিট বিক্রি করবেন না। টাকা দিতে না পারলে টিকিট বিক্রি করবেন না। আদালত আরো বলেন, আমাদের আদেশের বাস্তবায়ন না হলে আইন অনুযায়ী যে ধরনের আদেশ দেয়া দরকার তাই দেব। এরপর আদালত লিখিত আদেশ দিয়ে ১০ এপ্রিল বিষয়টি পরবর্তী আদেশের জন্য রাখেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৮ এপ্রিল কেরানীগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ীর হানিফ উড়াল সড়কে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারান রাসেল সরকার। এ ঘটনায় রাসেলের বড় ভাই আরিফ সরকার বাসচালক কবির মিয়ার বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় গত বছরের ২৮ এপ্রিল মামলা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।