Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছুটছেন মৌয়ালরা

মধু আহরণের মৌসুম শুরু

মোস্তফা শফিক,কয়রা (খুলনা) থেকে : | প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

সুন্দরবনের মধু আহরণের মৌসুম শুরু হয়েছে। মৌয়ালরা মধু সংগ্রহের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করছেন। চলতি মৌসুমে বাঘের আক্রমনের ঝুঁকির পাশাপাশি বনদস্যুদের হামলার ভয় মাথায় নিয়ে তাদের বনে যেতে হচ্ছে। তবে মধু আহরণ মৌসুমকে সামনে রেখে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তার বলয়। বনদস্যুদের ব্যাপারে বন বিভাগের দাবি মৌয়ালরা কোন অভিযোগ না করায় এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে গিয়ে বাঘ, সাপ, কুমিরের সাথে জীবন বাজি রেখে এবং ভয়ঙ্কর বন দস্যুদের চাঁদা, মুক্তিপণ মাথায় নিয়ে সুন্দরবনে মধু আহরণ করতে হচ্ছে। চলতি বছর বন বিভাগের কোন হয়রানি ছাড়াই পাস পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পেরে বেশ খুশি তারা। খুলনা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. আবু সালেহ জানান, মৌয়ালীরা কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হয় তার জন্য সকল স্টেশন ও টহল ফাঁড়ির কর্মকর্তা কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বন বিভাগের কারর বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ১লা এপ্রিল থেকে মধু আহোরনের মৌসুম শুরু হয়েছে। ১৫ জুন পর্যন্ত মধু আহরণ চলবে। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্টেশন থেকে মৌয়ালরা পাশ পারমিট নিয়ে বনে যাচ্ছেন। খুলনা, সাতক্ষীরাসহ উপক‚লীয় এলাকার ১৯-২০টি উপজেলার মৌয়ালরা বিভিন্ন মহাজনের অধীনে মধু সংগ্রহ করতে ইতোমধ্যে বনে প্রবেশ করেছেন।
সুন্দরবন বন বিভাগে পশ্চিম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পশ্চিম বন বিভাগ থেকে মধু ১৭৫০ কুইন্টল ও ৪৪০ কুইন্টল মোম আহরণের লক্ষ্য মাত্রা রয়েছে। এর মধ্যে খুলনা রেঞ্জে মধু ৭০০ কুইন্টল ও ১৭৫ কুইন্টল মোম এবং সাতক্ষীরা রেঞ্জে থেকে ১০৫০ কুইন্টল এবং ২৬৫ কুইন্টল মোম। এ বছর বড় ধরনের কোন বিপর্যয় না হলে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি মধু আহরণের আশা করছে বন বিভাগ। কাশিয়াবাদ স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ সুলতান মাহমুদ হাওলাদার বলেন, মধু আহরণ মৌসুমে কোন মৌয়ালরা কোন প্রকার হয়রানী না হয় তার জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক তদারকি করা হচ্ছে। নিবিঘে্ন মধু আহরণ করতে মৌয়ালীদেরকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার ৪নং কয়রা গ্রামের মৌয়ালী রফিকুল সানা জানায়, তারা মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বনে মধু আহরণের জন্য প্রবেশ করেছে। সরকারি কিংবা বে সরকারি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে বিনা সুদে লোন দিলে তাদের পক্ষে ভাল হতো। একাধিক মধূ আহরণকারী মৌয়ালদের দাবি মধু আহরণ মৌসুমে সল্প সুদে তাদের লোন দিলে তারা মহজন প্রথা থেকে দুরে থাকতে পারতো। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের ডিএফও মো. বশিরুল-আল মামুন বলেন, সুন্দরবনে বনজীবি মৌয়ালরা মধু আহরণে বনের ভিতর নিবিঘেœ চলাচল করতে পারে তার জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৌয়ালরা

৪ এপ্রিল, ২০১৯
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ