বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জাতিগত বৈচিত্র্য আর প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের লীলানিকেতন বান্দরবান পার্বত্য জেলা। এখানকার ১৩টি সম্প্রদায়ের বর্ণময় কৃষ্ঠি-সংস্কৃতি, তাদের জীবনাচার এবং পাহাড়ি-বাঙ্গালির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত-ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের আকর্ষণ করে চলেছে প্রতিনিয়ত। বিস্তৃত পর্বতরাজির কোল ঘেঁষে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা চঞ্চলা নদী সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সবুজের মেলা, বয়ে চলা পাহাড়ি র্ঝনা। দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মায়ানমার ও ভারত সীমান্ত পরিবেষ্টিত বান্দরবান জেলা নয়নাভিরাম প্রাকৃতির সৌন্দর্যের কারণে ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশির কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। ফলে শান্ত সবুজ প্রকৃতির সান্নিধ্যে নগর জীবনের ক্লান্তি ঘুচাতে পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে পার্বত্য জেলা বান্দরবান।
এছাড়া বান্দরবানে বসবাসকারী ১১টি নৃতাত্ত্বিক জনোগোষ্ঠীর রয়েছে আলাদা আলাদা ভাষা ও সংস্কৃতি। তাদের সামাজিক রীতিনীতি, জীবনাচার, বৈচিত্র্যময়ে ফুটে উঠেছে ভ্রমণকারী পর্যটকদের জন্য বাড়তি পাওনা।
বান্দরবান একটি বিকাশমান পর্যটক শহর। এখানে রয়েছে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ, তাজিংডং, দ্বিতীয় পর্বতশৃঙ্গ কেওক্রাডং। সেনাবাহিনী পরিচালিত নীলগিরি, চিম্বুক, জিয়া পুকুর, কিংবদন্তীর বগা লেক, জেলা প্রশাসন পরিচালিত মেঘলা, প্রান্তকি লেক, নীল আঁচল, পাহাড়ি ঝর্না ধারা শৈল প্রপাত, রিজুক, রূপমুহুরী, বন প্রপাত, শুভ্রনীলা, নৈসর্গিক শোভামন্ডিত মিরিঞ্জা সহ অসংখ্য পর্যটন স্পট ভ্রমণ বিলাসী পর্যটকদের আকর্ষণ করে চলছে। আর এর মধ্যে “সাইরু রিসোর্ট” পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষনীয় দৃষ্ঠিনন্দন দর্শনীয় স্পট হিসাবে মনেকরে এলাকাবাসী।
সাইরু রিসোর্ট
বান্দরবান জেলার “সাইরু রিসোর্ট” পর্যটন প্রেমীদের সর্বশেস সংযোজন। পর্যটকদের মতে, এটি দার্জিলিংকে ও হার মানাবে। জেলা শহর থেকে ১৮ কি.মি. দূরে চিম্বুক সড়কে ওয়াই জংশন নামক সেনা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় প্রকৃতির অপরূপ পাহাড়ের পাদদেশে এটি অবস্থিত। সাইরু নাম করণে ১টি বেদনা বিধূর ইতিহাস রয়েছে।
সাইরু রিসোর্টের প্রতিটি স্থাপনায় একটি বৈচিত্র রয়েছে। এখানকার ১৩টি উপজাতী জনগোষ্ঠির কৃষি সংস্কৃতি জীবনাচার ও পাহাড়ী বাঙ্গালীর সম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে প্রধ্যান্য দিয়ে তৈরী করা হয়েছে প্রতিটি উপভোগ্য বস্তুকে। কটেজ গুলোকে প্রকৃতির সাথে মিল রেখে আধুনিকতার সর্বশেষ মডেল সংযোজিত হয়েছে। নিরাপত্তা বিভাগ, রিসিপশন, ডাইনিং স্পেস, ওয়াশ রুম সহ প্রতিটি বিভাগের সাথে প্রকৃতির একটি বিশাল মিতালী রয়েছে। সাইরুর অভ্যন্তরে নিজস্ব টমটম নিয়ে আঁকাবাঁকা পাহাড়ে নিঃশব্দ গতিতে প্রতিনিয়ত পর্যটকদের নিয়ে চলা সইরুর জিরো পয়েন্টে নিয়ে যাওয়াকে দারুন আন্দোলিত করে।
সাইরুর অন্যতম নান্দনিক নিদর্শন হলো সুইমিংপুল। যা ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উপরে অবস্থিত। যে কেউ আসলে এখানে তার হৃদয় আকুল ও চঞ্চল হয়ে উঠবে। এখানে আরো উপভোগ্য বিষয় হচ্ছে, সাইরুর পর্বত চূড়ায় একিই স্থান থেকে সূর্যোদয় ও অস্থ যাওয়ার মনোরম দৃশ্য অবলোকন করা।
সাইরুর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউর রহমান রেজা ইনকিলাবকে জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যান রাংলাই ম্রো এর নিজস্ব পাহাড়ে ডুমাস আর্কিটেক্ট ফার্ম এই আকর্ষনীয় সাইরু রিসোর্টটি নির্মাণ করেন। সাইরুর চেয়ারম্যান শামীম ইমাম, পরিচালক রাংলাই ম্রো, এথেন্স ম্রো, মীর মোহাম্মদ আলী ও সাইফুল ইসলামের নির্দেশনা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্থপতি মোস্তাফা আমিনের সুনিপণ তত্বাবধানে দেশী বিদেশী পর্যটকদের নিকট সাইরু আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সাইরু নাম করণে প্রেমের বিষাদময় কাহিনী
সাইরু নাম করণে এক অভিমানি প্রেমিকার করুণ আত্মত্যাগের বিষাদময় ইতিহাস রয়েছে। সাইরু পর্বতের একাংশে রয়েছে জিরো পয়েন্ট। তার সাথে আছে দুইটি আলিঙ্গণরত গাছ। স্থানীয় ম্রো সম্প্রদায় দুইটি গাছকে লিঙ্গে পরিণত করে নাম দিয়েছে ধারমারা (পুরুষ) এবং ফুলশুমারীকে (স্ত্রী) গাছ। তার পাশে বিশাল পাহাড়ের খাদ রয়েছে। ম্রো অর্থ পবিত্র জন্ম। এই গাছ দুইটি পবিত্র অবস্থায় জন্ম নিয়েছে বলে তারা বিশ্বাস করে।
জানা গেছে, এক ম্রো সম্প্রদায়ের যুবতীর নাম ছিল “সাইরু”। তিনি তার এক আত্মীয়কে খুবই ভালোবাসতেন। কিন্তু ম্রো ধর্মীয় আইন ও রীতি তাদের প্রেমকে চিরস্থায়ী করতে দেয়নি। ঐ ছেলের অন্যত্র বিয়ে হলে সাইরু মেয়েটি অভিমান করে উক্ত পাহাড়ের খাদে আত্মাহত্যা করে। পরে ঐ স্থানে দুইটি গাছ পবিত্র ভাবে আলিঙ্গন করে জন্ম নিয়ে বড় হতে থাকে। এভাবে অভিমানি প্রেমের বিষাদময় স্মৃতি ধরে রাখতে এ পাহাড় এবং রিসোর্টকে “সাইরু” নামকরণ করা হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানের সিইও রেজাউর রহমান রেজা এবং পরিচালক এথেন্স ম্রো। যে কেউ চাইলে দৃষ্টি নন্দন এ পর্যটন স্পটে ঘুরে আসলে অনাবিল শান্তির সমারোহ বয়ে আসতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।