বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
গত নিবন্ধে আমরা আল্লাহ তায়ালার রহম ও করম নিয়ে আলোচনা করছিলাম। তার দয়ামায়া ও বান্দাদের জন্য তার করুণা বর্ষণের বর্ণনা করছিলাম। আজ সে সম্পর্কে কোরআনে কারিম থেকে আরো কিছু আয়াত নিয়ে কথা বলতে চেষ্টা করব। যেমন- সূরা আনয়ামের এক জায়গায় বান্দাদের ভালো-মন্দ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালার অবগত থাকার বিষয় বর্ণনার পর বলা হয়েছে, ‘আর তোমাদের পালনকর্তা সব থেকে পরাক্সমুখ, (তার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তা ছাড়া কারো নিকট তার কোনো প্রয়োজন আটকে নেই। তবে) রহমত ও করুণা হলো তার বিশেষ বৈশিষ্ট্য। (এ রহমতের কল্যাণেই তোমরা নিজেদের অপকর্ম সত্ত্বেও বেঁচে আছো। অন্যথায় তার এ ক্ষমতা রয়েছে,) ইচ্ছা করলে তিনি তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিয়ে তোমাদের পরে যা ইচ্ছা তোমাদের জায়গায় পৃথিবীতে আবাদ করতে পারেন।’ (সূরা আনয়াম : ১৩৩)।
তেমনিভাবে সূরা কাহফের এক জায়গায় বলা হয়েছে, ‘আর তোমার পালনকর্তা নিতান্ত ক্ষমাশীল এবং বড়ই করুণাময়। তিনি যদি তাদের কর্মের জন্য তাদেরকে পাকড়াও করতে চাইতেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের জন্য আজাব পাঠিয়ে দিতেন। বরং তিনি সেজন্য একটি সময় নির্ধারিত করে রেখেছেন। বস্তুত তাকে ছাড়া তারা কোনো আশ্রয়স্থল হতে পারে না।’ (সূরা কাহফ : আয়াত ৫৮)।
অর্থাৎ, পৃথিবীতে দেখা যায়, অনেক দুষ্ট-দুর্বিনীত আল্লাহর নাফরমানি করে, তার নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করে এবং তার বিধিবিধানের প্রকাশ্য বিরোধিতা করা সত্তে¡ও বেঁচে থাকে; আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের ওপর কোনো আজাব নেমে আসে না। না তাদের ওপর আকাশ থেকে বাজ পড়ে, না ভ‚মি তাদেরকে গিলে ফেলে। কোরআন বলে, এমনটি আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা গুণেরই কল্যাণ। যদি আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি এতখানি মেহেরবান না হতেন, তাহলে এ ধরনের অপকর্মী, অবাধ্যদের ওপর সঙ্গে সঙ্গে আজাব এসে যেত, তাদেরকে এতটুকু অবকাশ দেয়া হতো না। কিন্তু যেহেতু তিনি বান্দাদের প্রতি রহমত ও ক্ষমার আচরণ করতে চান, তাই তিনি পাপী-তাপীদেরকে গোটা এ পার্থিব জীবনে অবকাশদানের সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন। যাতে তাদের মধ্যে যে কেউ নিজের কৃত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, নিজের আচরণ সংশোধন করে নিয়ে কখনো কোনো সময় আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে চাইলে তা করতে পারে এবং তার আজাব থেকে অব্যাহতি পেয়ে যেতে পারে। সেজন্যই তিনি ধরপাকড় এবং প্রতিদান ও শান্তির জন্য এ পার্থিব জীবনাবসানের পর একটি সময় নির্ধারিত করে রেখেছেন। সে সময় সবাইকে সেখানে উপস্থিত হতে হবে। কারো জন্য কোথাও আত্মগোপন করে সে সময় এবং সে স্থানে উপস্থিত হওয়া থেকে বেঁচে থাকার অবকাশ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।