পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৃহত্তর খুলনার প্রায় ৪শ’ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হলেও অবশেষে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৮২ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে আসন্ন দুর্যোগ মৌসুমে উপক‚লবাসীর উদ্বেগ আর আতঙ্ক রয়েই গেল।
খুলনা বাগেরহাট সাতক্ষীরা তথা উপক‚লীয় অঞ্চলের অন্তত দুই শতাধিক স্পটে নীচু বাঁধ উপচে জোয়ারের প্রবেশ করে লোকালয়ে। প্রতি বছর জোয়ারের পানির বৃদ্ধিতে তলিয়ে যায় শতাধিক গ্রাম। ভেসে যায় কোটি কোটি চিংড়ি ও সাদা মাছ। মৎস্য ঘেরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় চরমভাবে। বিভিন্ন স্থানে মাটির দেয়ালের ঘরগুলো ধ্বসে পড়ে। অথচ পাউবো সর্বত্র বাস্তবমুখী টেকসই প্রকল্প গ্রহণ করছে না।
খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের উপক‚লে দুই হাজার ২৯২ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। যার ৪২৪ কিলোমিটার বাঁধই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে পাউবো খুলনা-১ এর আওতাধীন ৩৬৫ দশমিক ২৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। সংস্কারের অভাবে ১০৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অবস্থাই করুণ। পাউবো খুলনা-২ এর অধীনে ৫১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ৪৫ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ। বাগেরহাটের ৩১৮ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধের ৬০ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ। ৪০ কিলোমিটার বাঁধ নিচু হয়ে গেছে। সাতক্ষীরার ৭৯৯ দশমিক ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ২১০ কিলোমিটারই ঝুঁকিপূর্ণ।
খুলনার চার উপজেলায় অন্তত ৮২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। পাউবো কর্তৃপক্ষ বলছে, এ কাজ সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর অফিস সূত্রে জানা গেছে, খুলনার ৪ উপজেলায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল বেড়িবাঁধ চিহ্নিত করে এগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) তৈরির কাজও হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলো হচ্ছে পাইকগাছা, কয়রা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটা। প্রস্তাবিত এ কাজের মধ্যে জাপান সরকারের অর্থায়নে জাইকা প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে। এরমধ্যে পাইকগাছার লস্কর ইউনিয়ন সংলগ্ন শিবসা ব্রীজ থেকে সোলাদানা বাজার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার শিবসা নদী পুনঃখনন/ড্রেজিং করা হবে।
অন্যদিকে হাড়িয়া নদীর গদাইপুর ইউনিয়ন সংলগ্ন হাড়িয়া থেকে লতা ইউনিয়নের পুটিমারি পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার ও গুনখালী নদীর পুটিমারি থেকে লতা বাজার পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার নদী খনন করা হবে।
এছাড়াও লস্কর ইউনিয়নের কুরুলিয়া নদেও ২৭০ মিটার, গড়ইখালী ইউনিয়নের শিবসা নদীর ৩৭২ মিটার, কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের বামনখালী ৩৫০ ও ৪৫০ মিটার নদী তীর স্থায়ী প্রতিরক্ষা মেরামত কাজ করা হবে।
এসব কাজের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৬ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা। একাজে অর্থায়ন করবে জাপান সরকার। প্রস্তাবিত এ কাজের জন্য কারিগরি টিম ইতোমধ্যে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। কাজটি পাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে রয়েছে দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা সংলগ্ন ৩০, ৩১ ও ৩৪/২ নং পোল্ডারের আমিরপুর, ভান্ডারকোট ও বালিয়াডাঙ্গার অংশ বিশেষ। এখানে রয়েছে ২০ দশমিক ৯৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। এরমধ্যে ১ কিলোমিটার বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ বা মেরামত করা হবে ৪৬ কিলোমিটার। এ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮৪০ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্ট কাজের ডিপিপি তৈরি করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। কারিগরি টিম এর সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন দেবে। এ কাজের খসড়া তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে খুলনা বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার উপকূলবাসী বাঁধ ভাঙ্গার আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। ঘুমের মধ্যেও তারা আঁতকে ওঠেন, এই বুঝি বাঁধ ভেঙে গেল। তবে নড়বড়ে বেড়িবাঁধই তাদের বেঁচে থাকার শক্ত খুটি। কিন্তু যে কোন মুহূর্তে বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
খুলনা জেলার কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি ও বাগেরহাট উপক‚ল এলাকার বেড়িবাঁধের অনেক জায়গা দিয়ে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। সামান্য জোর বাতাসে লোকালয়ে ঢুকছে লবণপানি। যেকোনো সময় প্লাবিত হতে পারে এসব এলাকা। আর সেই আশঙ্কা নিয়েই নির্ঘুম রাত কাটছে এ এলাকার মানুষের। ১৫-২০ ফুট প্রস্থের বেড়িবাঁধ ভাঙতে ভাঙতে আর মাত্র দু-তিন ফুট রয়েছে। সামান্য ঝড়ো বাতাস উঠলেই আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ছে এসব এলাকার মানুষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।