স্বয়ংক্রিয় ও আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেল বিক্রি নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে নিউ জিল্যান্ড। পাশাপাশি অস্ত্র আইন পর্যালোচনারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। বৃহস্পতিবার সকালে এক সাংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা অরডার্ন। তিনি বলেন, আজ আমি ঘোষণা করছি যে, নিউজিল্যান্ড সামরিক স্টাইলের সব ধরনের আধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিষিদ্ধ করবে। আমরা সব ধরনের অ্যাসল্ট রাইফেলও নিষিদ্ধ করবো। শুক্রবারের সন্ত্রাসী হামলায় ব্যবহৃত অধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র আমাদের দেশে নিষিদ্ধ করা হবে। ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, নিউ জিল্যান্ডের দুই মসজিদে গুলি চালিয়ে ৫০ মুসল্লিকে হত্যা করে উগ্র মুসলিমবিদ্বেষী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট। ওই হামলার প্রেক্ষিতেই স্বয়ংক্রিয় ও আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেল বিক্রি নিষিদ্ধের উদ্যোগ নিলেন জাসিন্ডা অরডার্ন। তিনি বলেন, নিশ্চিত থাকুন, এটি শুধু আমাদের কর্মযজ্ঞের যাত্রা। ভবিষ্যতে যে কোনও সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার বিষয়। বর্ণবাদী বিদ্বেষ নিউ জিল্যান্ডের যে স্থানটিতে বন্দুকের গুলি হয়ে আছড়ে পড়েছিল, সেই ক্রাইস্টচার্চে সব সময়ই ধ্বনিত হয়ে আসছে বিশ্বমানবের ঐকতান। ভারতসহ এ উপমহাদেশ আর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মানুষ সেখানে অভিবাসী হয়েছে। স্থানীয় মুসলিম স¤প্রদায় তাদের জড়িয়ে নিয়েছে নিজেদের বুকে। বিশ্বমানুষের এই সম্মিলনের প্রতীক হয়েই সেখানে দাঁড়িয়ে আছে হামলার শিকার হওয়া নুর মসজিদ। হামলাকারীর বিদ্বেষী ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের পর তাই কোনও পাল্টা ঘৃণাবাদ স্পর্শ করতে পারেনি ক্রাইস্টচার্চের বাসিন্দাদের। বরং বিভক্তি, ঘৃণা আর বিদ্বেষের বিপরীতে সম্মিলন আর ভালোবাসার শক্তিতে আবারও জাগ্রত হতে চাইছে ছবির মতোন সুন্দর শহরটি। ক্রাইস্টচার্চ বার্তা দিচ্ছে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে বিশ্বের প্রতিটি মানুষের শরীরে একই রক্ত প্রবহমান, সব মানুষের বেদনাস্থলও এক। ভবিষ্যতে যেন মানুষের এই ঐক্যতান আবারও কোনও বিদ্বেষী বন্দুকধারীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে না পারে সেজন্যই স্বয়ংক্রিয় ও আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেল বিক্রি নিষিদ্ধের পাশাপাশি অস্ত্র আইন পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। রয়টার্স।