বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেটের ওসমানীনগরের শেরপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত গাড়ি চালক আনিছুর রহমান আনিক হত্যাকান্ডের ক্লু উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিহত আনিকের টাকা পয়সা লুট করে নিয়ে যেতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বাসা বাড়া নেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় আনিককে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকান্ডের মূল হোতা সুমন ও ভাড়া করা তার দুই সহযোগী মিলে মুখে গামছা বেঁধে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে হত্যার পর পানির ট্যাঙ্কিতে গুম করে রাখে হত্যাকারীরা। গত সোমবার রাতে পুলিশের হাতে আটকের পর উপজেলার উছমানপুর ইউপির দক্ষিণ রাইকদাড়া গ্রামের আজমল আলীর ছেলে সুমন রশিদ(৩০), সাদীপুর ইউপির মঙ্গলপুর গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে শাওন মিয়া(৩৫) ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার মৃত আবু মিয়ার ছেলে নানু মিয়া(২৪) হত্যাকান্ডের বিষয়ে স্বীকার করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টায় সিলেট পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মিডি সেল থেকে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানানো হয়। হত্যাকারীরা শুধু আনিছুর রহমান আনিক হত্যা করে তারা কান্ত হয়নি আনিককে হত্যা করে পানির ট্যাঙ্কে লাশ গুম করে রেখে গিয়ে নিহতরে স্ত্রী আফছা বেগমকে হত্যা করার জন্য তাদের বাড়িতে হানা দিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় আফছা বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা থেকে পিছু হটে।
পুলিশ জানায়, গত রোববার দিনগত রাতে তিনটার দিকে আনিছুর রহমান আনিকের লাশ উদ্দারের পর গত সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে উছমানপুর ইউপির দক্ষিণ রাইকদাড়া গ্রামের বর্তমানে দিগর গয়াশপুরের আজমল আলীর ছেলে সুমন রশিদ(৩০), সাদীপুর ইউপির মঙ্গলপুর গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে শাওন মিয়া(৩৫)কে মঙ্গলপুর গ্রাম থেকে আটক করা হয়। আটককৃতদের তথ্যের ভিত্তিতে শেরপুর এলাকা থেকে আটক করা হয় আরেক ঘাতক নানু মিয়াকে(২৪)। আটক তিনজনকে পৃথক পৃথক জিজ্ঞাসাবাদে আনিক হত্যাকান্ডের মূল কারণ এবং কিভাবে তাকে হত্যা করা হয় সে বিষয়ে ওসমানীনগর থানা পুলিশকে বিস্তারিত বর্ণনা দেয় তিন ঘাতক। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকান্ডের মূল নায়ক সমুন রশিদ মোটা অংকের টাকার প্রলোবন দেখিয়ে শাওন ও নানুকে ভাড়া করে। ঘটনার দিন বিকেলে সুমন, শাওন ও নানু তিনজন মিলে শেরপুর পয়েন্টে বসে চা পান করে বিভিন্ন পরার্শ করে। ১৭ মার্চ ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে শাওন ও নানু রিকশা যোগ শেরপুর গোলচত্বর থেকে পূর্ব তাজপুর গ্রামের কানাডা প্রবাসী আলা উদ্দিনের বাড়িতে আসে পূর্বে থেকে সুমন সেখানে উপস্থিত ছিল। শাওন ও নানুকে প্রবাসী আলা উদ্দিনের বাসায় রেখে বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে প্রবাসীর বাড়ির কেয়ারটেকার আনিছুর রহমান আনিককে ডেকে নিয়ে আসে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সুমন রশিদ। কেয়ারটেকার আনিক আসার পর সুমন সহ তিন হত্যাকারীরা বাড়ির বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে। হত্যাকারীরা ও কেয়ারটেকার আনিক সহ দুতলার সিড়ির রুমে যাওয়া মাত্রই সুযোগ ঝুঝে গামছা দিয়ে কেয়ারটেকার আনিকের মুখ বেঁধে ফেলে এ সময় শাওন ও নান রশি দিয়ে আনিকের গলায় ফাঁস লাগিয়ে স্বজোরে টানতে থাকলে এক পর্যায়ে আনিছুর রহমান আনিকের মৃত্যু ঘটে। মৃত্যু নিশ্চিতের পর তিনজন মিলে আনিককের লাশ কাদে করে নিয়ে তিনতলার ছাদের পানির ট্যাঙ্কের ভেতর লাশ গুম করে পালিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা নিহত আনিকের বাড়িতে গিয়ে আনিকের স্ত্রী আফছাকেও হত্যার পায়তারা করলেও পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে তাকে হত্যা করতে পারেনি।
এদিকে আটকৃত তিন জনকে আনিছুর রহমান আনিকের হত্যা মামলায় আসামী দেখিয়ে পুলিশ তিন আসামীকেই দন্ড বিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্দি প্রদানের জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আদালতে তিনজনের জবানবন্দি রেকর্ডের কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মমিনুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
ওসমানীনগর থানার ওসি এসএম আল মামুন আটককৃত তিন আসামী হত্যাকান্ডের বিষয়ে জড়িত থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটককৃতদের নিকট থেকে প্রাপ্ত আরো কিছু তথ্যে যাচাই বাচাই করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে তাদের সাথে আরো কিছু সহযোগী রয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত সহ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ দিন গত রাত ৩টার দিকে উপজেলার সাদীপুর ইউপির ধরখা গ্রামের মৃত চোয়াব উল্যার ছেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক গাড়ি চালক আনিছুর রহমান আনিকের হাত পা মুখ বাঁধা লাশ একই এলাকার পুর্ব তাজপুর গ্রামের প্রবাসী আলা উদ্দিনের বাড়িরর তিনতলার ছাদের পানির ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় পর সোমবার নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে ওসমানীনগর থানায় একটি হত্যা (মামলা নং-১২) দায়ের করণে। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত তিন জনকে আটক করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।