রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে ইটভাটা নির্মাণে সরকারি বিধি-বিধানের কোন রকম তোয়াক্কা না করেই ফসলী জমি দখল করে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। যার ফলে কমতে শুরু করেছে কৃষিজমি।
সরকারি খাস জমি দখল করে এবং কৃষকের আবাদী জমির উপর থেকেও কাটা হচ্ছে ভাটার মাটি। ইটভাটার ধোঁয়া ও এসব টিনের চিমনি থেকে বের হওয়া ময়লায় দুষিত হচ্ছে পরিবেশ ও বাতাস। ইটভাটাগুলোর ট্রাক, ট্রাকটার ও স্যালো ইঞ্জিন চালিত অবৈধ পরিবহণের অবিরাম চলাচলে সমস্ত রাস্তা ভেঙে জনসাধারনসহ যান চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
উপজেলার একটি ইউনিয়ন চর সাদীপুর। পদ্মা নদীর কোল ঘেঁষে বিশাল ফসলি জমির চরে ইউনিয়নটির অবস্থান। এখানে পদ্মার চরের ফসলি জমির মাটি খুবই সহজলভ্য। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্থানীয় কিছু অসাধু কালো টাকার ব্যবসায়ীরা প্রায় হাফ বর্গকিলোমিটারের মধ্যেই গড়ে তুলেছে অবৈধ টিনের চিমনিসহ প্রায় ১০টি এবং পুরো ১৮ বর্গকিলোমিটারের ইউনিয়নে প্রায় ২০টি ইটভাটা। যার মধ্যে টিনের চিমনিই আছে ৭ থেকে ১০টি প্রতিটি ভাটায় কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। অথচ এই খবরই নাকি জানেন না বন সংরক্ষণ বিভাগ এবং পরিবেশ অধিদপ্তর। এসব ইটভাটা নির্মাণে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি ভাটা মালিকরা। উল্টো কৃষকের জমি জোরপূর্বক দখল করে তৈরী করা হয়েছে ইটভাটা। স্থানীয় জনগণ ও ভূক্তভূগী কৃষকেরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে চলছে এসব অবৈধ ইটভাটার রমরমা বাণিজ্য।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গিয়েছে এক সময় এসব জমিতে গম, ভুট্টা, মসুর, কলাই, ধান, আলু, মরিচ, পিয়াজ, মুলা, ফুল কপি, বাধা কপিসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হতো। আর এখন একের পর এক গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। ফলে এসব ফসল ও ফলের আবাদও কমে গেছে। অন্যদিকে ইটভাটার জালানী হিসাবে কয়লার পরিবর্তে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে আম, কাঁঠাল, বেল, বাবলা, বট-পাইকর, খেজুর, কড়ই, নিম, মেগগুনী, ভেটুলসহ অন্যান্য গাছ।
রজব আলী নামের এক কৃষক বলেন, হারেজ এন্ড ব্রিকসের মালিক শহিদ আমার একমাত্র তিন ফসলী জমি দখল করে নিয়েছে।
চর সাদীপুর ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, এখানে সব ম্যানেজ করেই কাজ চালাচ্ছেন।
এদিকে কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হাসিমপুর এলাকায় ২ কিলোমিটারের মধ্যে ভাই ভাই ব্রিক্সস, হাজি ব্রিক্সস ও আর আই নামের ৩টি ইটভাটা রয়েছে। এখানকার প্রতিটি ভাটা টিনের ডাম চিমনীর। সরকারি নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এসব ভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে বিভিন্ন গাছের কাঠ।
হাসিমপুর মৌজায় ৭১ নং দাগের সরকারি খাস জমি ভুয়া ভূমিহীন দেখিয়ে ভাই ভাই ব্রিক্সসের মালিক ইকরাম হোসেন ও তার সহযোগী সবুর সর্দ্দার ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারীর যোগসাজসে বেআইনিভাবে জমি দখল করে ভাটার জন্য অবাধে মাটি কেটে চলেছে। ফলে পাশবর্তী কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে বলে কৃষকদের অভিযোগ।
মানুষ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। ইতোমধ্যে ভাটার গাছ পোড়ানো নিষিদ্ধ করেছে বর্তমান সরকার। কিন্তু সে নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনে দুপুরে প্রশাসনের সহাতায় হাজার হাজার গাছ নিধন করে পুড়িয়ে পরিবেশকে করে তুলছে দূর্বিসহ।
ভাটার কালো ধোয়া পরিবেশের ভারসাম্য হারিয়ে কার্বন ড্রাই-অক্সাইড ও ওজন স্তরের সিএফসি গ্যাস বৃদ্ধি হওয়ায় পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে চলেছে। যার প্রভাব পরিবেশ ও জন সাধারনের জীবন যাত্রার বিভিন্ন রোগবালাইয়ের প্রার্দুভাব দেখা দিচ্ছে।
এ বিষয়ে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ভুক্তভোগি এলাকাবাসী প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।